বাগেরহাটে ভূমি কার্যালয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তিন ভুয়া সাংবাদিক আটক
Published: 7th, August 2025 GMT
বাগেরহাটে সাংবাদিক পরিচয়ে ভূমি কার্যালয়ে চাঁদাবাজি করতে যাওয়ার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের পুরাতন বাজার এলাকার ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় (তহসিল কার্যালয়) থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মনিরুজ্জামান, মো. মোস্তফা শিকদার ও মো. নাসির সরদার। তাঁদের কাছ থেকে সাংবাদিক লেখা তিনটি আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। কার্ডের তথ্য অনুযায়ী, মনিরুজ্জামান এসটিভি বাংলার ক্রাইম রিপোর্টার, মোস্তফা ও নাসির সাপ্তাহিক তথ্য বাণী ও দৈনিক রূপবাণী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার।
বাগেরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম নুরুন্নবী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা প্রথমে আমার দপ্তরে আসেন। তাঁরা সেখানে নাজির ও সার্ভেয়ারের খোঁজ করতে থাকেন। একই সঙ্গে তাঁরা অন্যান্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাওয়ার পথ জানতে চান। একপর্যায়ে তাঁদের একজন আমার অফিসের সার্ভেয়ারের কাছে বলেন যে তাঁদের কিছু টাকা দরকার, তাঁরা ঢাকা থেকে আসছেন। পরে সেখান থেকে তাঁরা পাশের তহসিল অফিসে যান। পরে খবর পেয়ে আমি সেখানে গেলে তাঁরা নিজেদের অবৈধ আইপি টিভির সাংবাদিক পরিচয় দেন। আমি নিজেও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী। আমি তাঁদের জিজ্ঞাসা করি, আইপি টিভির তো বৈধতা নেই। একপর্যায়ে তাঁরা বলেন, তাঁরা ঢাকা থেকে আসছেন, একটা মাদকের স্টোরি করার জন্য এবং এখানে এসে বসছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে থানা-পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ এসে তাঁদের আটক করে নিয়ে যায়।’
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
এ বিষয়ে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান বলেন, কিছু ব্যক্তি সাংবাদিকতা পেশার পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন, যা প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্য লজ্জাজনক। আটক তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গ রহ ট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতারণা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বক্তাবলীর মুর্শিদাকে কারাগারে প্রেরণ
প্রতারনা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ফতুল্লার বক্তাবলীর মুর্শিদা বেগম (৪৮) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে মুর্শিদাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কারাগারে থাকা মুর্শিদা বেগম ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের রামনগর এলাকার মৃত আবুল হোসেন ওরফে কসাই আবুলের স্ত্রী। সে আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল্লাহর ভাইয়ের স্ত্রী বলেও জানা গেছে।
আদালত এবং রাবেয়ার দায়েরকৃত মামলার সূত্রে জানা যায়, বক্তাবলী ইউনিয়নের চর রাজাপুর এলাকার আজিজুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের সাথে মুর্শিদার সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাদে বিগত ২০২১ সালে রাবেয়ার কাছে মুর্শিদা তার বাড়ি বিক্রির প্রস্তাব দেয়।
এতে রাবেয়া রাজি হলে তার কাছ থেকে বায়না বাবদ ১১ লাখ টাকা গ্রহণ করে মুর্শিদা। টাকা নেয়ার প্রায় এক বছরের বেশি সময় পাড় হয়ে গেলেও মুর্শিদা তার বাড়ি দলিল করে দেয়ার বিষয় কিছু না বলায় রাবেয়া টাকার জন্য চাপ দেয়।
তাতে করে বাড়ির দলিল না করে দিয়ে রাবেয়াকে ১১ লাখ টাকার চেক প্রদান করে মুর্শিদা। পরে রাবেয়া মুর্শিদার বিরুদ্ধে আদালতে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করে।
মামলার একপর্যায়ে মুর্শিদার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ যুগ্ম দায়রা জজ ফারজানা আক্তার এর ৩য় আদালতে রায় ঘোষণা করেন। বিজ্ঞ আদালত মুর্শিদাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
পরে বিজ্ঞ আদালতে মুর্শিদা আদালতে অর্ধেক টাকা জমা দিয়ে জামিন নেয়। কিন্তু আদালতে বাকী টাকা দেয়ার কথা থাকলেও তা না করে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে মুর্শিদা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
এদিকে রাবেয়া অভিযোগ করেন সম্প্রতি মুর্শিদার কাছে টাকা চাইতে গেলে বিগত আওয়ামী লীগ শাসন আমলে সন্ত্রাসী দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এমনকি আমার ১১ লাখ টাকা আত্মসাত করতে মুর্শিদা আমার বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক ভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
আর চেক ডিজঅনার মামলায় তাকে এক বছরের সাজা দেয় আদালত। সেই মামলায় মুর্শিদা কারাগারে রয়েছে। আদালতের কাছে আমি সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি এবং পাওনা টাকা যাতে দ্রুত পাই সেই ব্যবস্থা যেন করা হয়।
মামলার বাদী রাবেয়ার আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বির জানান, মুর্শিদা একটা প্রতারক। রাবেয়ার কাছে জমি বিক্রি করার কথা বলে ১১ লাখ টাকা নিয়ে নানা তালবাহানা করে।
একপর্যায়ে মুর্শিদার বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করলে স্বাক্ষ্য প্রমান থাকায় সেই মামলায় বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষণা করেন এবং মুর্শিদাকে এক বছরের সাজা এবং ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আর সেই মামলায় মুর্শিদা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে।