কাওরান বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে চাই: ক্যাব সভাপতি
Published: 19th, September 2025 GMT
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নতুন সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, “কাওরান বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে চাই আমরা। সেখানে কৃষকরা সরাসরি সবজি বিক্রি করবেন। তাদের কাছে থেকে পণ্য কিনে সরাসরি বাজারে চলে যাবেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। ২০ টাকা বা তারও কমে সেখান থেকে সবজি কেনা যাবে।”
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ক্যাবের কার্যক্রম অবহিতকরণ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নড়াইলে রাস্তার পাশে জমে উঠেছে ডোঙার হাট
সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী, বেড়েছে পেঁয়াজের দামও
ক্যাব সভাপতি বলেন, “কাওরান বাজারের উত্তর গেট দিয়ে ৩০ টাকার পটল প্রবেশ করে সেটি অন্য গেট দিয়ে পাইকারি বা খুচরা বাজারে গেলেই দাম বেড়ে হয় ৭০ টাকা। যেসব সবজি ১০০ টাকায় বিক্রি হয়, কৃষক ৮০ টাকায় পেতেন, তাহলেও কারো কষ্ট হতো না। কিন্তু কৃষক তো পাচ্ছেন ৩০ টাকায়। মাঝখান ভোক্তা সেই জিনিস কিনছে ১০০ টাকায়। ওই ৭০ টাকা তো পথে পথে চলে যাচ্ছে। মূলত উৎপাদন খরচ হ্রাস ও বিপণন ব্যবস্থা আধুনিক না করতে পানায় এমন সমস্যা হচ্ছে।”
তিনি জানান, পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়কের পাশে শাকসবজি বিক্রির একটি হাব চালু হতে যাচ্ছে। আগামী ১ অক্টোবর ৩০০ ফিট সড়কের পাশে একটি হাব চালু হতে যাচ্ছে।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, “কৃষিঋণ প্রান্তিক কৃষকের কাছে কতটুকু পৌঁছায়, তা নিয়ে অনুসন্ধান হওয়া দরকার। কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে সারও পাচ্ছেন না।”
তিনি বলেন, “ক্যাবের নিষ্ক্রিয় কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন ও সক্রিয় করা হবে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে এর কার্যক্রম। আমরা সরকারকে দেখিয়ে দেব, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে কোথায় কোথায় আইনের প্রয়োগ সম্ভব।”
ক্যাবের সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান গত ৩০ আগস্ট শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে থেকে অবসরে যান। এর আগে তিনি আড়াই বছর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর তিনি ক্যাবের সভাপতি হন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ মঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার, প্রচার সম্পাদক মুসা মিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহা.
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। এরপর ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। সেই জনগণের ৭০ ভাগ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে ৩১টি দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআরের পক্ষে রয়েছে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনা নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘একটি দলের কেউ কেউ বলছেন, পিআর খায় না মাথায় দেয়। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এটা বলতে পারেন না। তাই পিআর বাস্তবায়নের জন্য গণভোট দিন। রায় পিআরের পক্ষে নাকি বিপক্ষে যাচাই করুন। জনগণ যদি পিআর মানে আপনাদেরও মানতে হবে। আর জনগণের রায় যদি পিআরের বিপক্ষে যায়, তাহলে আমরা মেনে নেব। কিন্তু তারা তো গণভোটকে ভয় পাচ্ছে। পিআরের মধ্য দিয়ে সবার অংশীদারির ভিত্তিতে যদি পেশিশক্তি ও কালোটাকামুক্ত কোয়ালিটিপূর্ণ পার্লামেন্ট হয়, সরকার গঠন হয়, তাহলে কোনো দলের পক্ষে ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা নেই। তাই তারা পিআর ঠেকাতে চায়।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরের আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহ আলম ও শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলার আমির মাওলানা এমরান হুসাইন প্রমুখ।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আর্টিকেল ৭-এর ভিত্তিতেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার আলোকে নির্বাচন দিতে হবে। এখন যদি দুই-তিন মাস আলোচনার পর একটি দল বলে যে এটা পরে হবে, তাহলে কেন এত পরিশ্রম করালেন? সে জন্যই বলছি আমাদের আন্দোলন রাজনীতির অংশ। আমাদের রাজনীতি জনগণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরার জন্য। আমরা আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তির জন্য আশাবাদী। আমরা নিরাশ নই।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আপনারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড মেনটেইন করতে পারছেন না। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে? তাই আমাদের দাবি—আপনারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। সাংবিধানিক অর্ডার জারি করুন। গণভোট দিন। ফ্যাসিবাদের কার্যক্রম স্থগিত করুন। আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার করবেন। আমাদেরও দাবি নির্বাচনের আগেই তা দৃশ্যমান করতে হবে।’
মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, ‘এই সংস্কার যদি এখন না হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য যদি ঠিক করা না হয়, আর তা যদি নির্বাচনের আগে না হয়, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে যদি আবার নির্বাচন হয়, তাহলে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। বিদ্যমান কাঠামোতে নির্বাচন হলে আরেকটি হাসিনার জন্ম হবে। বাংলার মানুষ আর ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে দেবে না।’
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বর থেকে শুরু হয়ে ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউস মোড় ও সংগীতার সামনে দিয়ে শিববাড়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।