জুবিনের মৃত্যু, মামলা, মুখ খুললেন স্ত্রী গরিমা
Published: 21st, September 2025 GMT
ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ। একাধারে গায়ক, সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, সংগীত প্রযোজক, অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। তার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শোবিজ অঙ্গন।
জুবিনের মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। মামলা দায়ের হয়েছে ‘নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যাল’-এর আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত-সহ জুবিনের আপ্ত সহায়ক সিদ্ধার্থ শর্মার বিরুদ্ধে। আসাম সরকার গায়কের মৃত্যুর তদন্তভার নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
পরপারে ভালো থেকো জুবিন: সোহম চক্রবর্তী
সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ মারা গেছেন
আসাম সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসাম পুলিশ শ্যামকানু ও সিদ্ধার্থ উভয়কেই জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তাছাড়া শেষ মুহূর্তে গায়কের সঙ্গে যারা ছিলেন, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী আসাম পুলিশকে অনুরোধ করেছেন, মামলার সমস্ত নথিপত্র যেন ‘সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট’-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আসামে জুবিনের বাড়ির বাইরে উত্তেজিত জনতা ক্ষোভে ফুঁসছে। কারণ গায়কের সহকারী সিদ্ধার্থের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পীর ভক্ত-অনুরাগীরা। এ পরিস্থিতিতে জুবিনের স্ত্রী গরিমা গার্গ প্রথমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন।
গতকাল দিবাগত রাতে জুবিনের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা দেন গরিমা। তাতে তিনি বলেন, “সবাইকে ধন্যবাদ এবং আমার প্রণাম। জুবিন আসছে। আমরা সবাই শেষবারের মতো ওকে দেখব। আমি সকলকে অনুরোধ করছি, সিদ্ধার্থের (জুবিনের আপ্ত সহায়ক) বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলবেন না। কারণ সিদ্ধার্থই জুবিনের সব খেয়াল রাখত। অতিমারির সময়ে জুবিনের যখন সিজার অ্যাটাক হয়, তখন ও-ই একমাত্র মানুষ যে নিজের জীবন বাজি রেখে আমার স্বামীকে মুম্বাই নিয়ে গিয়েছিল চিকিৎসার জন্য।”
সিদ্ধার্থকে ভাই দাবি করে গরিমা বলেন, “গত ২০ বছর ধরে সিদ্ধার্থ আমার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। ও আমার ভাইয়ের মতো। ওর বিরুদ্ধে আপনারা এমন কিছু বলবেন না। এই মুহূর্তে আমাদের পরিবারের ওকে প্রয়োজন। জুবিন আসছে। আমি সকলকে অনুরোধ করছি, ওর শেষযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে হতে দিন। আপনারা আইন মেনে চলুন। পুলিশ-প্রশাসনকেও সাহায্য করুন।”
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সোশ্যালি মিডিয়ায় জানিয়েছেন, জুবিনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কোথায় হবে, তা নিয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মন্ত্রিসভায় বৈঠক হবে। যদিও কথা প্রসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জুবিন জানিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যেন আসামেই হয় এবং তার নশ্বর দেহের অবশিষ্টাংশ যেন ব্রহ্মপুত্রের জলে মিশে যায়।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—তিন দিন আগে হুমকি পেয়েছিলেন সরোয়ার
চট্টগ্রামে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে গুলি করার তিন দিন আগে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন আরেক ‘সন্ত্রাসী’ মো. রায়হান। ওই সময় সরোয়ারকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাঁর সময় শেষ, যা খাওয়ার যেন খেয়ে নেন। সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার রাতে আবদুল কাদেরের সঙ্গে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার খন্দকারপাড়া এলাকার বাড়িতে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে তিন দিন আগে গত রোববার মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী রায়হান। বলেছিলেন, “তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে।”’
গতকাল নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। ঘটনাস্থলেই গুলিতে মারা যান সরোয়ার। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহসহ চারজন। সরোয়ারের পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এরশাদ উল্লাহসহ অন্যরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের বলেন, তাঁর ছেলেকে প্রায়ই হুমকি দিতেন বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও মো. রায়হান। এ জন্য তাঁর ছেলে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতেন। সঙ্গে লোকজনও থাকত। কিন্তু বুধবার তাঁর বাড়ি থেকে দুই থেকে তিন শ গজ দূরে রাস্তার পাশে দোকানে গণসংযোগ চালান বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। যেহেতু নিজের এলাকা কেউ কিছু করবে না, সে জন্য ছেলের আত্মবিশ্বাস ছিল। সরোয়ার নিজেও এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েছেন। পরে গণসংযোগে অংশ নেন তিনি।
আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘এভাবে বাড়ির কাছে ছেলেকে মেরে ফেলবে, তা কল্পনা করিনি কখনো। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকেও রাস্তায় পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ।’
আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’
চট্টগ্রাম নগরের হামজারবাগের এই স্থানেই গুলি করা হয় সরয়ারকে। ঘটনার পর গতকাল সেখানে বসে কথা বলছিলেন তাঁর বাবা আবদুল কাদের । তাঁর পাঞ্জাবিতে তখনো লেগেছিল ছেলের রক্ত