বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘‘সিলেটে পাথর যারা চুরি করেছে সেখানেও জামায়াত নেতার নাম পাওয়া গেছে, নারীঘটিত বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গেও তাদের নাম পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে বিএনপি করছে, বিএনপি করছে।’’

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘৭ নভেম্বর প্রজন্ম’র আয়োজনে ড.

মারুফ মল্লিকের লেখা ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ: নাগরিক ও জাতিবাদী জাতীয়তাবাদের সংকট’ শীর্ষক বইয়ের আলোচনা করার সময় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘‘আপনি যে ভালো, সেটি খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, বালু মহলের সঙ্গে বিএনপির লোক যদি জড়িত থাকে, সেখানে জামায়াতের লোকও জড়িত আছে- সেটিও তো গণমাধ্যমে এসেছে। গণমাধ্যমে সেগুলো যে একেবারে আসছে না তা না, কিন্তু সেটি বেশি ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে না। বিএনপির নেতাকর্মী অন্যায় করলে তাদের বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটাও ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে না। একটা পরিবারের মাঝে দুষ্ট ছেলে থাকতে পারে, সেই দুষ্ট ছেলেকে বাবা-মা শাসন করছে কিনা, সেটা তো বিবেচনা করতে হবে।’’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যে ধরনের হুমকি-হুঙ্কার ক্রমাগতভাবে আসছে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে এবং যেসব শক্তির উত্থান ঘটছে, তাতে করে আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার জন্য বড় ধরনের একটি ষড়যন্ত্র পাকিয়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।’’

ডাকসু ভিপির প্রসঙ্গে টেনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘একজন ভিপিকে কি ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে? তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবৈধ দোকানে ফাইন করছেন, আবার সেই ফাইনের টাকা পার্টির বায়তুল মালে জমা দিচ্ছেন- এটার কি কোনো আইনগত ভিত্তি আছে? আমিও তো রাকসুর ভিপি ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কে দোকানদারি করছে, কে মার্কেট করছে সেটা দেখার জন্য তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরিটি আছে, প্রশাসন আছে, তারা দেখবে। সেখানে ছাত্রনেতা গিয়ে বলতে পারে ক্যাম্পাসে যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে। কিন্তু সেটা না করে আপনি গিয়ে ফাইন করে দিচ্ছেন, সেই ফাইনের টাকা যাচ্ছে জামায়াতের বাইতুল মালে- এটা কোন ধরনের বিষয়? এদের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রের মধ্যে রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা।’’

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—তিন দিন আগে হুমকি পেয়েছিলেন সরোয়ার

চট্টগ্রামে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে গুলি করার তিন দিন আগে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন আরেক ‘সন্ত্রাসী’ মো. রায়হান। ওই সময় সরোয়ারকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাঁর সময় শেষ, যা খাওয়ার যেন খেয়ে নেন। সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল বুধবার রাতে আবদুল কাদেরের সঙ্গে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার খন্দকারপাড়া এলাকার বাড়িতে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে তিন দিন আগে গত রোববার মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী রায়হান। বলেছিলেন, “তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে।”’

গতকাল নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। ঘটনাস্থলেই গুলিতে মারা যান সরোয়ার। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহসহ চারজন। সরোয়ারের পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এরশাদ উল্লাহসহ অন্যরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।

সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের বলেন, তাঁর ছেলেকে প্রায়ই হুমকি দিতেন বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও মো. রায়হান। এ জন্য তাঁর ছেলে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতেন। সঙ্গে লোকজনও থাকত। কিন্তু বুধবার তাঁর বাড়ি থেকে দুই থেকে তিন শ গজ দূরে রাস্তার পাশে দোকানে গণসংযোগ চালান বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। যেহেতু নিজের এলাকা কেউ কিছু করবে না, সে জন্য ছেলের আত্মবিশ্বাস ছিল। সরোয়ার নিজেও এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েছেন। পরে গণসংযোগে অংশ নেন তিনি।

আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’

আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘এভাবে বাড়ির কাছে ছেলেকে মেরে ফেলবে, তা কল্পনা করিনি কখনো। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকেও রাস্তায় পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ।’

আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’

চট্টগ্রাম নগরের হামজারবাগের এই স্থানেই গুলি করা হয় সরয়ারকে। ঘটনার পর গতকাল সেখানে বসে কথা বলছিলেন তাঁর বাবা আবদুল কাদের । তাঁর পাঞ্জাবিতে তখনো লেগেছিল ছেলের রক্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ