চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের আলিনগর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার গভীর রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী।

মুরাদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় হতাহতের বিষয়টি জেনেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সম্পাদক। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ও পুলিশের দেওয়া তথ্যও খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোকন উদ্দিনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মুরাদ চৌধুরী আরও বলেন, এর আগেও রোকন উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সে সময় তাঁকে কেন্দ্রীয় যুবদল এবং জেলা যুবদল থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কাজ অব্যাহত রাখায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।

গত শনিবার ভোরে জঙ্গল সলিমপুরের অলিনগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি দেশি অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে দোকান ও স্থাপনায় হামলা করে। এরপর কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হামলাকারীদের ঘেরাও করে মারধর করলে ঘটনাস্থলে খলিলুর রহমান নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। নিহত খলিল চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানাধীন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ১৪ জন।

হামলার ঘটনায় ৩ মামলা

গত শনিবার আলিনগরে হত্যা এবং মারামারির ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। সীতাকুণ্ড থানা সূত্র জানায়, ঘটনার দিন আলিনগর এলাকায় ঘর ভাঙচুর ও লুটের ঘটনায় আহত মোহাম্মদ ফারুক বাদী হয়ে রোকন উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় এজাহারনামীয় ২০ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

একই দিন অপর বাসিন্দা ফারুক হোসেন বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে জাবেদ নামের এক ব্যক্তিকে।

ঘটনার পরদিন ইয়াসিন বাহিনীর পিটুনিতে খলিলুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর বাবা অলি রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ইয়াসিনকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় এজাহারনামীয় আরও ১০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৪০ জনকে আসামি করা হয়।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এসব মামলায় আহত জাবেদ, জয়নাল, জিহাদ নামের তিনজনকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বদল র র ঘটন য় এল ক য় রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

করদাতার ১০ খাতের আয়ে কর বসে, আয়ের খাতগুলো কী কী

এ দেশে একজন করদাতাকে তাঁর বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্নে আয়ের খাতগুলো দেখাতে হয়। আপনি কোন কোন খাত থেকে সারা বছরে আয় করলেন, তা রিটার্ন ফরমে দেখিয়ে দিতে হয়। এ জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর জমার রিটার্ন ফরমে একজন করদাতার মোট আয়কে ১০ ধরনের আয় দিয়ে বিভাজন করেছে।

এর মানে হলো, ওই ১০ ধরনের আয় রিটার্ন ফরমে লিখে মোট আয় নির্ধারণ করতে হবে। পরে ওই আয়ের ওপর নিয়ম অনুসারে কর বসবে। তবে একজন করদাতার ওই ১০টি খাতের সব কটিতে আয় না–ও থাকতে পারে। তাই সব খাতেই আয় থাকতে হবে, বিষয়টি তেমন নয়।

একজন করদাতা আইটি ১১গ (২০২৩) রিটার্নের খাতভিত্তিক আয়ের বিবরণ ও মোট আয় নির্ধারণ করতে পারবেন।

৩০ নভেম্বর বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমার সময় শেষ হচ্ছে।

এবার দেখা যাক, ওই ১০টি আয়ের খাত কী কী; যার ভিত্তিতে করদাতার মোট আয় নির্ধারিত হয়।

১. চাকরি থেকে আয়

সরকারি, বেসরকারি বা যেকোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অর্জিত বেতন, ভাতা, বোনাস, ইনসেনটিভসহ সব ধরনের পারিশ্রমিক এই খাতে দেখাতে হয়।

২. ভাড়া থেকে আয়

বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্য যেকোনো সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে বছরে যে আয় হয়, তা এখানে উল্লেখ করতে হবে।

৩. কৃষি থেকে আয়

কৃষিজমি, ফসল, ফল, সবজি, পশুপালন বা যেকোনো কৃষিকাজ থেকে অর্জিত আয় এই খাতে অন্তর্ভুক্ত।

৪. ব্যবসা থেকে আয়

ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসা বা পেশাগত কার্যক্রম (যেমন ডাক্তার, আইনজীবী, পরামর্শক ইত্যাদি) থেকে প্রাপ্ত আয় এখানে দেখানো হয়।

৫. মূলধনি আয়

মুনাফা, ভাড়া, রয়্যালটি, সুদ বা অন্য সব মূলধনি সম্পদের ব্যবহারের বিনিময়ে অর্জিত আয় এই খাতে পড়ে।

৬. আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয়

ব্যাংকের সুদ বা মুনাফা, লভ্যাংশ, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা, ট্রেজারি বন্ড বা সিকিউরিটিজ থেকে আয় এই অংশে উল্লেখ করতে হয়।

৭. অন্যান্য উৎসের আয়

রয়্যালটি, লাইসেন্স ফি, সম্মানী, ফি, সরকার প্রদত্ত নগদ ভর্তুকি বা যেকোনো বিচ্ছিন্ন ধরনের আয় এই খাতে পড়ে।

৮. ফার্ম বা ব্যক্তিসংঘের আয় থেকে প্রাপ্য অংশ

পার্টনারশিপ ব্যবসা বা ব্যক্তিসংঘের সদস্য হিসেবে যে আয় প্রাপ্য হয়, তা এখানে যোগ করতে হয়।

৯. অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান, স্ত্রী বা স্বামীর আয়

যদি পরিবারের সদস্যদের কেউ করদাতা না হন এবং তাঁদের আয় করদাতার সঙ্গে যোগ হয়, তাহলে সেই আয়ের অংশ এই খাতে দেখাতে হয়।

১০. বিদেশে অর্জিত করযোগ্য আয়

বিদেশে কাজ, বিনিয়োগ বা সম্পদ থেকে অর্জিত করযোগ্য আয় থাকলে তা এই অংশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ