ই-কমার্সে ‘ইকমইজিএআই’-এর সাফল্য: পণ্য বিক্রয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন
Published: 8th, October 2025 GMT
বর্তমান দ্রুত পরিবর্তনশীল ই-কমার্স বাজারে টিকে থাকা ও সফল হওয়া প্রতিটি উদ্যোক্তার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। পণ্যের গুণগত মান যতই ভালো হোক না কেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সেগুলোকে আকর্ষণীয় ও কার্যকরভাবে উপস্থাপন করতে না পারলে আশানুরূপ বিক্রয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। পণ্যের জন্য মুখরোচক, শ্রুতিমধুর ও বিক্রয় বাড়ানোর উপযোগী ‘কপি রাইটিং’ বা ‘প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন রাইটিং’ অনেক উদ্যোক্তার কাছেই একটি কঠিন কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই মৌলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি যুগান্তকারী সমাধান নিয়ে এসেছে ইকমইজিএআই (eComEasyAI)। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) একটি পূর্ণাঙ্গ কপি রাইটিং সলিউশন, যা ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের জন্য সর্বোচ্চ বিক্রয় নিশ্চিত করার এক নতুন পথ খুলে দিচ্ছে।
ই-কমার্স উদ্যোক্তারা প্রায়ই দেখেন যে তাঁদের চমৎকার পণ্য থাকা সত্ত্বেও সঠিক লিখিত প্রচারণার অভাবে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না। একটি পারফেক্ট কপি রাইটিং অথবা প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন রাইটিংই পারে সর্বোচ্চ বিক্রয় নিশ্চিত করতে। ইকমইজিএআই ঠিক এ অভাবই পূরণ করতে এসেছে, যা সম্পূর্ণভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত। এই প্ল্যাটফর্ম কেবল আপনার পণ্যের ছবি দেখেই বাংলাসহ ৩৫টির অধিক ভাষায় অনবদ্য সব কপি রাইটিং ও প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লিখে দেবে যার যার নিজস্ব ভাষাশৈলী ও লেখার রীতিনীতি অনুযায়ী, যা আপনার অনলাইন বিক্রয়কে বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী কৃষ্ণ কান্ত কর্মকার ও হাশমী বিন মোস্তফা। তাঁরা বলেন, ‘আমরা লক্ষ করে দেখেছি, বাংলাদেশের ই-কমার্স সাইটগুলোতে বাংলা ভাষায় পণ্যের বর্ণনা শূন্যের কোঠায়।’ তাঁদের মতে, এর কারণ একটি পণ্যের জন্য মার্কেটিং কনটেন্ট লেখা পরিশ্রম ও সময়সাপেক্ষ, পক্ষান্তরে গুণগতমানসম্পন্ন প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লেখা বেশ চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু ক্রেতার নিকট তাঁর মাতৃভাষায় পণ্যের বর্ণনা উপস্থাপন করা একটা আলাদা গুরুত্ব বহন করে, যা পণ্যে বিক্রি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ইকমইজিএআইয়ের কার্যপ্রণালি খুব সহজ ও ব্যবহারকারীবান্ধব। এর অন্যতম প্রধান ফিচার হলো পণ্যের ছবি আপলোড করার সহজ প্রক্রিয়া। উদ্যোক্তারা চাইলে সরাসরি মোবাইলের ক্যামেরা বা কম্পিউটারের ওয়েবক্যাম ব্যবহার করে ছবি তুলে আপলোড করতে পারেন অথবা পূর্বে সংরক্ষিত পণ্যের ছবি কম্পিউটার অথবা মোবাইল উভয় ডিভাইস থেকে আপলোড করতে পারেন। ছবি আপলোড করার পর ব্যবহারকারীরা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী ভাষা, টোন ও প্রিসেট বেছে নিয়ে পণ্যের জন্য আকর্ষণীয় বর্ণনা তৈরি করতে পারেন। এই কাস্টমাইজেশন সুবিধা গ্রাহকের ব্র্যান্ডের ভয়েস ও টার্গেট অডিয়েন্সের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বর্ণনা তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি নিশ্চিত করে, প্রতিটি বর্ণনা যেন আপনার ব্র্যান্ডের স্বতন্ত্রতাকে তুলে ধরে এবং নির্দিষ্ট গ্রাহকশ্রেণিকে আকর্ষণ করে।
শুধু একটি পণ্যের ছবি নয়, ইকমইজিএআই আপনাকে একই পণ্যের বিভিন্ন দিক থেকে তোলা সর্বোচ্চ পাঁচটি ছবি একসঙ্গে ব্যবহার করার সুবিধা দেয়। এই মাল্টি-ইমেজ অপশন ব্যবহার করে আপনি আরও বিস্তারিত এবং আকর্ষণীয় বর্ণনা তৈরি করতে পারবেন। এই পদ্ধতি গ্রাহকদের পণ্যটি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে ধারণা দিতে সহায়তা করে এবং তাঁদের ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একবার বর্ণনা তৈরি হয়ে গেলে, ইকমইজিএআই সেগুলোকে আপনার অ্যাকাউন্টে সংরক্ষণ করে রাখে। এর ফলে পরবর্তী সময়ে আপনি চাইলে সেই বর্ণনাগুলো পুনরায় ব্যবহার করতে পারবেন, যা আপনার মূল্যবান সময় বাঁচায় এবং আপনার কাজকে আরও সহজ করে তোলে।
ইকমইজিএআই দ্বারা তৈরি এই কপি রাইটিং বা প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন শুধু ওয়েবসাইটে ব্যবহারের জন্য নয়, বরং এর বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। বর্তমান সময়ে যেকোনো পণ্যের প্রচারণার জন্য ফেসবুক পোস্ট থেকে শুরু করে ব্লগ লেখা, প্রোডাক্ট ই–মেইল মার্কেটিং, বিদ্যমান গ্রাহকদের কাছে ইনস্টা মেসেজিংয়ের মাধ্যমে নতুন পণ্য সম্পর্কে জানানো, প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য কনটেন্ট তৈরি অথবা একটি দারুণ ভিডিও স্ক্রিপ্ট রাইটিং—সব ক্ষেত্রেই ইকমইজিএআইয়ের লেখা কনটেন্ট ব্যবহার করা যাবে। আপনার প্রোডাক্ট মার্কেটিংয়ের জন্য চাহিদা এবং প্রয়োজন যেমনই হোক না কেন, ইকমইজিএআই নির্ভুলভাবে কপি রাইটিং/প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন রাইটিংয়ের পারফেক্ট সলিউশন দিচ্ছে।
ইকমইজিএআইয়ের সাফল্যের পেছনে রয়েছে একদল দক্ষ ও অভিজ্ঞ মানুষ, যাঁরা ই-কমার্স ও এআই প্রযুক্তিতে গভীর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। উদ্যোগটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণ কান্ত কর্মকার ই-কমার্সে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ এবং এআই প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানের অধিকারী। একজন সাবেক অনলাইন স্টোরের মালিক হিসেবে কৃষ্ণ কান্ত কর্মকার ইকমইজিএআই প্রতিষ্ঠা করেছেন, যাতে পণ্য কনটেন্ট ক্রিয়েশনে বিপ্লব ঘটানো যায় এবং ই-কমার্স ব্যবসায়িক জ্ঞান ও উদ্ভাবনী সমাধান একসঙ্গে মিলে যায়।
আরেকজন সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হাশমী বিন মোস্তফার রয়েছে কাটিং-এজ ফিল্ডে সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা। তিনি ইকমইজিএআইয়ের ভবিষ্যতের ই-কমার্স সলিউশন গড়ে তুলেছেন। জটিল প্রযুক্তিগুলোকে সুন্দর সমাধানে রূপান্তর করার তাঁর অসাধারণ সক্ষমতা এই প্রযুক্তিগত অবকাঠামোকে বিপ্লব ঘটাতে সাহায্য করেছে। তিনি ইকমইজিএআইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং টিমগুলোকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাতে এআই-ড্রাইভেন কনটেন্ট ক্রিয়েশনের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করা যায়। এই দুই উদ্যোক্তার দূরদর্শিতা ও দক্ষতা ইকমইজিএআইকে ই-কমার্স জগতের অন্যতম শক্তিশালী ও কার্যকর সমাধানে পরিণত করেছে।
উদ্যোক্তাদের আরও সহজে কনটেন্ট তৈরির সুযোগ দিতে ইকমইজিএআই এনেছে ডিফল্ট প্রিসেটস লাইব্রেরি, যেখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিভিত্তিক পেশাদার প্রম্পট সাজানো আছে। যেমন—
• ই-কমার্স (ফিচার বেজড)
• মার্কেটপ্লেস স্পেসিফিক (দারাজ, অ্যামাজন, ই-বে, ইটসি, শপিইফাই, ওউ কমার্স)
• সোশ্যাল মিডিয়া রাইটিং (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, লিংকডইন)
• অ্যাড কপি রাইটিং (গুগল অ্যাডস, ফেসবুক অ্যাডস, ইনস্টাগ্রাম অ্যাডস)
• ভয়েসওভার স্ক্রিপ্টস
• ব্লগ আর্টিকেলস
• ই–মেইল কপি রাইটিং
• প্রিন্ট মিডিয়া রাইটিং
ফেসবুক পোস্ট থেকে শুরু করে ব্লগ কনটেন্ট, ই–মেইল মার্কেটিং, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, প্রিন্ট মিডিয়া কনটেন্ট কিংবা ভিডিও স্ক্রিপ্ট—যেকোনো প্রমোশনাল প্রয়োজনে ইকমইজিএআই উদ্যোক্তাদের দিচ্ছে নিখুঁত সমাধান।
স্মার্ট ডেটা ম্যানেজমেন্ট
কনটেন্ট ম্যানেজমেন্টকে আরও বুদ্ধিদীপ্ত করতে প্ল্যাটফর্মটিতে রয়েছে স্মার্ট ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যেমন—
• প্রতিটি বর্ণনা টাইমস্ট্যাম্প, মেটাডেটাসহ ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত থাকে।
• সংরক্ষিত বিবরণে সংশ্লিষ্ট ছবি, প্রম্পটের বিস্তারিত, ভাষা ও টোনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে।
• ইন্টুইটিভ ফিল্টারিং ও সার্চ ফিচারের মাধ্যমে মুহূর্তেই প্রয়োজনীয় কনটেন্ট পাওয়া যায়।
ইকমইজিএআই ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার এক নিখুঁত সংমিশ্রণ উপস্থাপন করে, যা ই-কমার্স ব্যবসাগুলোকে আজকের প্রতিযোগিতামূলক ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপে সফল হতে সক্ষম করে তোলে।
আজই ভিজিট করুন www.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ই কম র স ব যবস ব যবহ র কর র ই কম র স উদ য ক ত র ন শ চ ত কর কনট ন ট ফ সব ক স রক ষ র জন য আপন র ইনস ট
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে এআইয়ের অপব্যবহারও এখন চ্যালেঞ্জ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহারকে মূল চ্যালেঞ্জ মনে করছে নির্বাচন কমিশন। সাংবিধানিক এই সংস্থা মনে করে, ইন্টারনেট বন্ধ করে কিংবা গতি কমিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। অন্যদিকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো না গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে পৃথক সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুই ধাপে এই সংলাপ হয়। সকালে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার এবং বিকেলে প্রিন্ট মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা সংলাপে অংশ নেন। নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকেরা তাঁদের বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনী হলফনামা, পর্যবেক্ষক সংস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
দুই ধাপের সংলাপের (সকালে ও বিকেলে) শুরুতে বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমরা একদম স্বচ্ছভাবে আয়নার মতো পরিষ্কার করে এই ইলেকশনটা করতে চাই। এ ক্ষেত্রে আপনাদের (সাংবাদিকদের) সহযোগিতাটা খুবই দরকার হবে।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ইসির কার্যক্রমকে সহজ করে, এমনটি উল্লেখ করে সিইসি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য সঠিক হলে কমিশন সেই তথ্যের আলোকে পদক্ষেপ নেয়। তিনি বলেন, নির্বাচন ভালো না হওয়া ছাড়া সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। দেশ ও জাতির জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সবকিছু সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। সবাই মিলে নির্বাচনটা করতে হবে।
সিইসি বলেন, সম্প্রতি কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারের বিষয়ে তাঁর কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কানাডার হাইকমিশনার অপারগতা প্রকাশ করে তাঁকে বলেছেন, আইন করেও তাঁরা এআইয়ের অপব্যবহার বন্ধ করতে পারেননি।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ
ইসির সঙ্গে বিকেলের সংলাপে যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার বলেন, দেশে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক। এমন অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। বিদ্যমান পুলিশ প্রশাসন দিয়ে কীভাবে নির্বাচন হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে একই দিনে সারা দেশে নির্বাচন পরিচালনা করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ। তিনি একাধিক দিনে নির্বাচন পরিচালনা করার পরামর্শ দেন।
একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচন করার পরামর্শ দেন দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসানও।
নির্বাচনকালীন পেশিশক্তি ও কালোটাকার প্রভাবের বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার বলে উল্লেখ করেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ। তিনি বলেন, আরপিওতে প্রার্থীর আয়করের বিষয়ে যাচাই–বাছাই করার কথা বলা থাকলেও পূর্বের কমিশনগুলো তা এড়িয়ে গেছে। সেই ফাঁক দিয়ে দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির সবচেয়ে খারাপ মানুষগুলো আইনপ্রণেতা হয়ে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থ ব্যয় করে জনমত যেন প্রভাবিত করা না হয়, সে বিষয়ে ইসিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের ভোটারদের নিয়ে কী চিন্তা
রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলেও তাদের সমর্থক ভোটারদের বিষয়ে ইসির ভাবনা সম্পর্কে সংলাপে প্রশ্ন ওঠে। কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেটা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে, সেটার ব্যাপারে আপনাদের (ইসির) বক্তব্য আমরা জানতে চাই। না হলে তো এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। আওয়ামী লীগের ভোটারদেরকে তো আপনি বাদ দিতে পারবেন না। তারা তো দেশের নাগরিক। তারা যদিও অনুশোচনা করে নাই, এখন পর্যন্ত প্রায়শ্চিত্ত করে নাই, অনুতপ্ত হয় নাই। কিন্তু তারপরেও তাদেরকে বাদ দিয়ে তো নির্বাচনটা হতে পারে না।’
তবে একটি দল নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে না—এমনটি মনে করেন না প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মারুফ কামাল খান। তিনি বলেন, একটি দল তাদের অতীত অপকর্মের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এটা চ্যালেঞ্জ যে তাদের সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রে আসবেন কি না। তবে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং মানুষকে উৎসাহিত করা গেলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।
খবরের কাগজ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মনে করেন, উৎসবমুখর নির্বাচনের উৎসব অর্ধেক মানুষকে বাইরে রেখে হতে পারে না। তাদেরকে কীভাবে আনা যাবে, বিচারপ্রক্রিয়া কত দ্রুত করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবতে হবে।
রোষানলে পড়তে হয় সাংবাদিকদের
আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোট গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা থাকলেও বিদেশে থাকা বাংলাদেশের মিশনগুলোর সক্ষমতা ও কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা কতটা আছে, তা নিয়ে সংলাপে প্রশ্ন তোলেন চ্যানেল আইয়ের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান।
একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শফিক আহমেদ বলেন, নির্বাচনের আগে–পরে জয়ী ও হেরে যাওয়া সব পক্ষের রোষানলে পড়তে হয় সাংবাদিকদের। তাই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইসির ভূমিকা থাকা উচিত।
যমুনা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের সময় সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে, সেটা পরিষ্কার নয়। কারণ, নির্বাচনের পরে তারা আবার দলীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত হবে।
ভালো নির্বাচনের জন্য
দুই ধাপের সংলাপ শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার এখন বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে অপব্যবহারকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করা যায় না। অপব্যবহারকারীদের বেশির ভাগ দেশের বাইরে থেকে কার্যক্রম চালায়। তবে বিষয়টি মোকাবিলায় তাঁরা ইউএনডিপির সহযোগিতা নিচ্ছেন। পাশাপাশি পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিটিআরসির সক্ষমতাকে সমন্বয় করে কাজ করছেন।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শক্তিশালী অবস্থানে থেকে খারাপ নির্বাচনের জন্য কাজ করেছিলেন। এবার তাঁরা অতটা শক্তিশালী অবস্থানে নেই। তবে কাজ করবেন ভালো নির্বাচনের জন্য। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নির্বাচনকেন্দ্রে রোভার স্কাউটদেরও যুক্ত করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
ইসির সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপে অংশ নেন আজকের পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কামরুল হাসান, বাসসের প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ, ইউএনবির সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, দৈনিক আমার দেশ–এর নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম প্রমুখ।
আরও পড়ুনকার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ভোটারদের নিয়ে কী ভাবছে ইসি৩ ঘণ্টা আগে