ওসমান পরিবারের দোসররা নব্য গডফাদারদের সাথে লুটপাটে লিপ্ত : রফিউর রাব্বি
Published: 8th, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের জেলায় জেলায় মাফিয়া, গডফাদারদের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার নির্দেশে সাড়ে এগার বছর ত্বকী হত্যার বিচারটি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।
ঘাতক ওসমান পরিবারকে শেখ হাসিনা বার বার পুরস্কৃত করেছে। তারা দোর্দন্ড প্রতাপে নারায়ণগঞ্জে একের পর এক লাশ ফেলেছে। নারায়ণগঞ্জবাসীর জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে।
ওসমান পরিবার পালিয়ে গেলেও তাদের দোসর লুটেরারা নব্য গজিয়ে ওঠা গডফাদারদের সাথে মিশে নতুন করে লুটপাটে লিপ্ত হয়েছে। আজকে পরিবর্তীত বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচারদের পুরুত্থান যেমনি জনগণ চায় না, তেমনি নতুন কোন স্বৈরাচারের উত্থানও চায় না।
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৫১ মাস উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি মনি সুপান্থর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দীনা তাজরীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড.
এ সময় রফিউর রাব্বি আরও বলেন, শেখ হাসিনার দেশে বিচার-ব্যবস্থাকে যে ভাবে ধ্বংস করে রেখেছে তার উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন এখনো হয় নাই।
বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থান সংঘটিত হলেও ভিন্ন মতের বিরুদ্ধে এক শ্রেণির উগ্রবাদীদের উত্থান ঘটেছে। তারা সংস্কৃতির উপর যেমনি আঘাত করছে, তারা ধর্মের ভিন্ন মতের উপর নৃশংস হয়ে উঠছে।
কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দিচ্ছে, তারা দুই শতাধিক মাজার ও খানকায় হামলা করেছে, বাউলদের মেলা আখড়ায় হামলা করেছে, নারীরা তাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। সরকারের নিরবতা এদেরকে ক্রমাগত হিংস্র করে তুলছে।
তিনি বলেন, আজকে আমরা ত্বকী হত্যার এক যুগ পরে ত্বকী সহ সাগর-রুনি, তনু, মিতু এবং নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবার দ্বারা নিহত সকল হত্যার বিচার চাই, আবরার ফাহাদ হত্যার রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চাই।
এডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, ১৯৭৩ সালে ওসমান পরিবার জাকসুর সাধারণ সম্পাদক রোকনকে হত্যা করেছিল, সাড়ে বারো বছর আগে তারা ত্বকীকে হত্যা করেছে। শামীম ওসমান বিদেশে পালিয়ে গিয়ে বহাল তবিয়তে আছে।
তাদের অনুচরেরা আজকে নারায়ণগঞ্জে নতুন করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকার অভাবে তারা বিভিন্ন ভাবে ওসমান পরিবারকে সহায়তা করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই।
ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ওসম ন ন র য়ণগঞ জ হত য র
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬
নারায়ণগঞ্জে একটি সিমেন্ট কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের রাজধানী ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বন্দর থানা এলাকার মদনগঞ্জে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
ভূমিকম্পে হুড়োহুড়িতে আহত ২৯ শ্রমিক এখনো হাসপাতালে
হাসপাতালের কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দগ্ধরা হলেন- ফেনীর নাহিদ হাসান (২২), পাবনার কামাল হোসেন (৪৫), নোয়াখালীর তাইজুল ইসলাম (৩৫), জামালপুরের ফেরদৌস (৩৫), কুষ্টিয়ার তোরাব আলী (৫৫) এবং নারায়ণগঞ্জের আতিকুর রহমান (৪২)।
দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মো. রহিম জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিমেন্ট কারখানায় বয়লার থেকে বিস্ফোরণ হয়। পাশে থাকা ছয়জন দগ্ধ হন। দ্রুত তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ছয়জনের শরীররই মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।
ঢাকা/অনিক/মাসুদ