যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক রোবট প্রচলনে গবেষণা করছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী সাইফুল
Published: 9th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য আসেন। রাস্তাঘাট চেনাসহ যুক্তরাষ্ট্রের পড়াশোনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন অনেকে। শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্যাম্পাস রোবট প্রচলনে গবেষণা করছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও শিক্ষক এ কে এম সাইফুল ইসলাম। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র শিক্ষাঙ্গনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবট প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সঠিক ব্যবস্থাপনা নীতি।
শুধু পড়াশোনা নয়, শিক্ষার্থীরা যেন বিপথে না যান সে বিষয়েও কাউন্সেলিং ও মনিটরিং করবে এই সামাজিক রোবট। এ কে এম সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যেসব শিক্ষার্থী ধূমপান করেন, তাঁদের ধূমপান না করা জন্য কাউন্সেলিং করবে এই সামাজিক রোবট। লজ্জা, গোপনীয়তা ও আত্মসম্মানবোধের কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের কথার চেয়ে রোবটের কথা বেশি শুনতে পারেন শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়েও বিভিন্ন পরামর্শ দেবে সামাজিক রোবট। এ ছাড়া শিক্ষককে ক্লাসরুমে পাঠদানে সহায়তা ও লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের জন্য টিউটর হিসেবে কাজ করবে রোবট।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনে (এনএসএফ) ২০০৪ সালে বিজ্ঞানী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এ কে এম সাইফুল ইসলাম। তিনি সমাজবিজ্ঞানী ও সফটওয়্যার প্রোগ্রামার। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি, মেনকাটোতে কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর শিক্ষকতা ও গবেষণার বিষয়ের মধ্যে রয়েছে সায়েন্স কমিউনিকেশন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন, হিউম্যান রোবট কমিউনিকেশন ও হেলথ কমিউনিকেশন। এ ছাড়া কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় শিক্ষকতা করেছেন সাইফুল ইসলাম। সেখানে তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল মেডিকেল শিক্ষায় ইন্টারপ্রফেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড প্র্যাকটিস ও ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা–পরবর্তী সুস্থ জীবনযাপনে প্রযুক্তির ব্যবহার। সেখানে শিক্ষকতার বিষয় ছিল চিকিৎসকদের কমিউনিটি এবং সোশ্যাল মেডিসিন গবেষণাপদ্ধতি শেখানো।
অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলামের বাড়ি চট্টগ্রামে। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসএস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন।
আরও পড়ুনডেনমার্কে কড়াকড়ি : আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজ ও পরিবার নেওয়ার অধিকার সীমিত০৬ অক্টোবর ২০২৫সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ ধারণা থেকে অনেকে মনে করেন, রোবট উদ্ভাবন শুধু বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের কাজ। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। একটি রোবট উদ্ভাবনে অনেক ধরনের ধাপ থাকে। আমরা যারা সামাজিক বিজ্ঞান ও কমিউনিকেশনের গবেষক, তাদের কাজ হলো রোবটের ভাষা ও কমিউনিকেশন কৌশল উন্নত করা। আমি যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা শুরু করি, তখন এই সামাজিক রোবটের ক্যাম্পাসে প্রচলন নিয়ে ভাবা শুরু করি। আমাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। আশা করছি শিগগরিই ক্যাম্পাসে রোবট হাঁটছে দেখতে পাব।’
সামাজিক রোবটের ব্যবহার শুধু ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পরিবারে যেসব মানুষ দীর্ঘমেয়াদি অসুখে আক্রান্ত, তাদের সময়মতো ওষুধ খাওয়ানো, রক্তচাপ মাপাসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবার কাজ করবে সামাজিক রোবট। আমার বাবা একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। বাবার নামে এই রোবটের নামকরণ হবে শাহাবুদ্দিন রোবট।’
আরও পড়ুনঅধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগও হবে এনটিআরসিএর মাধ্যমে০৫ অক্টোবর ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্যাম্পাস রোবট প্রচলনে গবেষণা করছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও শিক্ষক এ কে এম সাইফুল ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব শ বব দ য শ বব দ য ল প রচলন
এছাড়াও পড়ুন:
দাপুটে জয়ে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তন
ফেরান তোরেসের দুর্দান্ত জোড়া গোল আর শুরুর দিকেই রবার্ট লেভানদোভস্কির আঘাত; সব মিলিয়ে দুই বছর পর ন্যু ক্যাম্পে ফিরে এসে একেবারে রাজকীয় ভঙ্গিতেই নিজেদের উপস্থিতি জানান দিল বার্সেলোনা। ১০ জনের বিলবাওকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে লা লিগায় টানা তিন জয়ের আনন্দে ভাসল কাতালানরা।
নবায়ন কাজের কারণে দীর্ঘ বিরতির পর ন্যু ক্যাম্পে এটি ছিল বার্সার প্রথম ম্যাচ। শুরুতেই যেন সেই অপেক্ষার সব ক্ষত মুছে দিলেন লেভানদোভস্কি। ম্যাচের মাত্র চার মিনিটে প্রতিপক্ষের বক্সের বাইরে বল কাড়ার পর নিচু শটে উনাই সিমোনকে পরাস্ত করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
দ্রুততম ৪৪ গোলে রোনালদোর রেকর্ড ভাঙলেন এমবাপ্পে
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনাকে হারাল রিয়াল
এরপর দানি ওলমোর প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেয় বিলবাওয়ের রক্ষণ দেয়াল। লামিন ইয়ামালের শটও রুখে দেন সিমোন। অন্যদিকে আক্রমণে উঠেও সুযোগ নষ্ট করেন উনাই গোমেজ ও নিকো উইলিয়ামস। আয়েরিক লাপোর্তের হেডও পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
এরপর ফেরান তোরেস ও ফিরমিন লোপেজও গোলের খোঁজে সক্রিয় হন। গার্সিয়া চোট কাটিয়ে একাদশে ফিরেই বিলবাওয়ের নিশ্চিত গোল ঠেকান।
হাফটাইমের ঠিক আগে ইয়ামালের দারুণ বাঁকানো পাসে সুযোগ পান তোরেস। নিচু শটে সিমোনকে পরাস্ত করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। সিমোন ছুঁয়ে দিলেও গোল ঠেকাতে পারেননি।
বিরতির পর মাত্র তিন মিনিটের মাথায় লোপেজ দারুণ এক প্রচেষ্টায় সোজা শটে তৃতীয় গোলটি করেন। ৫৪ মিনিটে লোপেজের ওপর বিপজ্জনক ট্যাকল করে ওইহান সানসেট লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে বিলবাওয়ের দুর্ভাগ্য আরও ঘনীভূত হয়।
এরপর ডানি ভিভিয়ান হুমকি তৈরি করলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে ওলমোর শটও অল্পের জন্য বাইরে যায়। ভিভিয়ান পরে আরেকবার হেডে গোল করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তবে গার্সিয়ার গ্লাভসে আটকে যায় বল।
অবশেষে ৯০ মিনিটে ইয়ামালের সূক্ষ্ম পাস ধরে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে ম্যাচের শেষ শব্দটি লিখে দেন ফেরান তোরেস।
দুই বছর পর ঘরের মাঠে ফিরল বার্সেলোনা। আর তোরেস-ইয়ামালরা যেন সেই আনন্দকে ফুটিয়ে তুললেন মাঠজুড়ে গোলের আতশবাজিতেই।
ঢাকা/আমিনুল