শিশুদের ‘নোবেল’ পুরস্কারে মনোনীত কিশোরগঞ্জের মাহবুব
Published: 12th, October 2025 GMT
শিশুদের ‘নোবেল খ্যাত’ আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন কিশোরগঞ্জের মাদরাসা শিক্ষার্থী মাহবুব আল হাসান (১৭)। পরিবেশ, জলবায়ু কার্যক্রম, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে মনোনয়ন দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন।
মাহবুব আল হাসান কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শোলাকিয়া এলাকার আব্দুল্লাহ আল হাছান ও দিলোয়ারা খাতুন দম্পতির সন্তান। ছেলের মনোনয়ন পাওয়ার খবরে মা-বাবা গর্বিত। তারা সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ছাগল পালনে সাবলম্বী তৃতীয় লিঙ্গের শিলা
গরুর সাহায্যে চলাফেরা করেন অন্ধ কাজেম আলী
মাহবুব আল হাসান কিশোরগঞ্জ আহমাদু জুবাইদা দাখিল মাদরাসা থেকে ২০২২ সালে দাখিল এবং হয়বতনগর এইউ কামিল মাদরাসা থেকে ২০২৪ সালে আলিম পাস করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মাহবুবের বাবা আব্দুল্লাহ আল হাছান বলেন, “ও শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছে। আমাদের খুবই ভালো লাগে। আমরাও তার জীবনের সমৃদ্ধি কামনা করি। আমরা তার বাবা-মা সবসময় পাশে আছি-থাকব।”
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা শিশুদের এই পুরস্কারে মনোনীত করে। গত তিন বছর ধরে মাহবুব নিজের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘The Change Bangladesh’
নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যার লক্ষ্য শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা ও জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধি। তার উদ্যোগে শিশুদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা ছড়ানো, বৃক্ষরোপণ, এবং গাছের চারা, পেন্সিল, খাতা ও কলম বিতরণের মতো কার্যক্রম নিয়মিত চলছে।
হাওর অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার অধিকার রক্ষায়ও তিনি কাজ করছেন নিরলসভাবে। এছাড়া অসুস্থ শিশুদের রক্তের জোগান নিশ্চিত করতে তিনি গড়ে তুলেছেন ব্লাড খুঁজি নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা জরুরি মুহূর্তে রক্তদাতাদের সঙ্গে রোগীর পরিবারকে যুক্ত করে দেয়।
শিশুদের নোবেল পুরস্কারে মনোনীত হওয়া মাহবুব আল হাসান বলেন, “শিশুদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের
সবার। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, একটি সচেতন প্রজন্মই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। তাই শিশুদের নিয়ে কাজ করা শুধু একটি দায়িত্ব নয়, এটি আমার জীবনের লক্ষ্য ও প্রতিজ্ঞা।”
মনোনয়ন প্রাপ্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, “এই আন্তর্জাতিক মনোনয়ন আমার কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়াবে, আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। আরো বড় পরিসরে কাজ করতে। আমি চাই, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত হাওর থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি শিশুই যেন সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা পায়।”
ঢাকা/রুমন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সফলত ক শ রগঞ জ প রস ক র মন ন ত ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫