তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার সরিয়ে রাখার চিন্তা
Published: 12th, October 2025 GMT
বিগত তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী নির্বাচনে দায়িত্বে না রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কোর কমিটির বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নতুন ভোটাররা জানে না ভোট কীভাবে দিতে হয়: তসলিম হুসাইন
নবীনবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান রাকসু প্রার্থীর
আলোচনায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি এসেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।”
এছাড়া, বৈঠকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার পুনরায় দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, “কোনো সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সভায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনি পরিবেশ যেন শান্তিপূর্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকতে হবে। যে কোনো সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদারে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে থাকবে সিসিটিভি এবং মনিটরিং ব্যবস্থা। বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে পর্যাপ্ত।”
প্রশিক্ষণের অগ্রগতি তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ ২৮টি ব্যাচে ১৩০টি ভেন্যুতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ব্যাচের ৬,৫০০ সদস্যের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। সব প্রশিক্ষণ ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।”
আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যেও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জন থাকবেন অস্ত্রসহ এবং বাকি ৪ লাখ ৫০ হাজার জন নিরস্ত্র থাকবেন। আনসার ব্যাটালিয়নের ৩,১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকেও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।”
সশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহণ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এবারের নির্বাচনে ১ হাজার ১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। এ প্রশিক্ষণ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।”
সংবেদনশীল পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কতা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে কোনো অস্থিরতা যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিও বর্তমানে শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুর্গাপূজাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে তা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে।”
মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, “শুধু বাহক নয়, গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।”
ঢাকা/এএএম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র ব যবস থ উপদ ষ ট সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমুলক সভা
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমুলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ রায়হান কবির এর সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আগামী ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ডিসির সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও পঞ্চবটি বদ্ধভুমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকালে সরকারী ও বেসরকারী সকল দপ্তরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ সরকারী ভবনে আলোকসজ্জা করন, ৩১বার তোপধ্বনি, চাষাড়া বিজয় স্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন করা হবে। ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে শিশু কিশোর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করা হবে।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবির বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতার সেই সকল অকুতোভয় সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা কখনো ভুলবো না। এর সাথে ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকেও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি। তাদের এই ত্যাগ ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পঞ্চবটি বদ্ধভূমিতে ফুলেল শুভেচ্ছা নিবেদনসহ বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে তাদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সবার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
ভূমিকম্পের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের আহ্বান করেন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন বিল্ডিং চিহ্নিত করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ আরো বিল্ডিং এর খোঁজখবর নেওয়ার বিষয়ে মতমতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও ভবিষ্যতে ভূমিকম্প হলে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই দিকে সবার দৃষ্টির রাখার আহ্বান জানান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আলমগীর হোসাইন এর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আ,ফ,ম মশিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তার, নারায়গঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুর আলম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জামায়েত ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ।
এছাড়াও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানগন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ সুশীল সমাজ এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।