পিআর আন্দোলনের লক্ষ্য নির্বাচন বিলম্বিত করা: মির্জা ফখরুল
Published: 12th, October 2025 GMT
সংস্কার কমিশন নয়, বরং দু’-একটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির কথা বলে আন্দোলন করে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ অভিযোগ করেন তিনি।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কমিশন পিআর পদ্ধতি বিষয়টি আনেনি। তবে, দু’-একটি রাজনৈতিক দল সেই পদ্ধতির কথা বলছে এবং সেটার জন্য তারা আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই—নির্বাচন বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট বলেছি। জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু মানুষ গ্রহণ করবে না।
পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে হঠাৎ একটা নতুন বিষয় এসেছ, যা সম্পর্কে কারো কোনো ধারণাই নেই; সেটা হলো, পিআর পদ্ধতি। এই পদ্ধতি সম্পর্কে এই হাউজের (আলোচনা সভার) মধ্যে কয়জন আছেন, বলেন তো যে, পিআর পদ্ধতি বোঝেন, আছেন নাকি?
উপস্থিত বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের (জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের) শীর্ষ নেতারা জবাব দেন, না, না, বুঝি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কমিটমেন্ট— আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়। গণতন্ত্রের মধ্যে দিয়েই জনগণের আশা পূরণ করতে চায়।
সংস্কারের মধ্যেই বিএনপির জন্ম হয়েছে, জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা সব সময় সংস্কারের পক্ষে ছিলাম, যদিও আমাদের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা বলে দিতে চাই, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি। মিডিয়ার স্বাধীনতা এটাও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ের। বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে। জিয়াউর রহমান যেমন অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, তেমনই কর্মযজ্ঞে হাতে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারেক রহমান।
“নির্বাচনে সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত, অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে অর্থাৎ সরকারের ছিল, কাজ করেছে। যে দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যে দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে অর্থাৎ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে,” বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু মানুষ চেষ্টা করে আমাদের একাত্তরে সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখতে হবে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই স্বাধীন হয়েছিলাম, নতুন চিন্তা করতে পারছি। স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করার সংগ্রাম করতে পারছি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেটি মাথায় রেখে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যাই। অনেক ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত আছে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে পরাজিত করার শক্তি এ দেশের মানুষের আছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ব ত কর ব এনপ র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর স্মারকলিপি প্রদান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৫ দফা দাবি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারক লিপি প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জ জামায়াত।
নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ঘোষিত স্মারক লিপি প্রদানের পূর্বে দলটি শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিশাল মিছিল সহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জামায়াতে ইসলামী ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত স্মারক লিপি প্রদান পূর্বে বক্তব্য দান কালে মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, আজকে আমরা যেই স্মারক লিপি দেবো, তা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
আমাদের এই ৫ দফা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বলতে চাই, এই ৫ দফা কোনো জামায়াতে ইসলামীর দফা না,এটা গণমানুষের দফা।আমাদের এক নাম্বার দাবি ছিলো জুলাই সনদের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।কিন্তু কোনো কোনো দল বলেছিল এখন প্রয়োজন নেই।
নির্বাচনের পরে সংবিধান ভুক্ত করে পার্লামেন্টে যিনি পাশ করবে, জনগণের যে রায় ছিলো এই রায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী উত্থাপন করেছিলো,সেই রায়কে বুঝতে পেরে তারা তা মেনে নিয়েছে।
এক সময় জামায়াতে ইসলামী জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিতের জন্য কেয়ারটেকার পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে চেয়ে ছিল। যখন কোনো সরকার থাকবেনা তখন কেয়ারটেকার সরকার জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করবে।
আমরা বাংলাদেশের জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে তাড়িয়েছি। এখন বিষয় হলো সঙ্গে থাকলে সঙ্গী, না থাকলে জঙ্গি। তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে অনেক মতানৈক্য, মত পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে,জনগনের স্বার্থে সকল দলমত একত্রে কাজ করবো, ইনশাআল্লাহ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের জামায়াতে ইসলামী এমপি প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনের জামায়াত এমপি প্রার্থী ইকবাল হোসেন ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ ১ (রুপগঞ্জ) আসনের এমপি প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসাইন মোল্লা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আলহাজ্ব মমিনুল হক সরকারের সভাপতিত্বে স্মারক লিপি প্রদান কালে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এইচ এম নাসির উদ্দিন, মহানগরী শ্রমিক কল্যান সভাপতি হাফেজ আব্দুল মোমিন সহ জেলা ও মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দ।