‘যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, বসবে, গ্রেপ্তার করবে, মামলা করবে। পুলিশকে আপনার পিছনে পিছনে হাঁটতে হবে। থানার ওসি সকালে আপনার অনুষ্ঠান জেনে নিয়ে আপনাকে প্রটোকল দেবে।’ জামায়াতে ইসলামীর নেতা শাহজাহান চৌধুরীর দেওয়া এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। তারা বলছে, এ ধরনের মন্তব্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের উসকানি দেয়।

আজ সোমবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বক্তব্যটি ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক ও পুলিশের জন্য হেয়প্রতিপন্নকারী’।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী গত শনিবার চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে প্রশাসন নিয়ে ওই বক্তব্য দেন। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা–সমালোচনা চলছে।

পুলিশের বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত হয়। গত ১৭ বছরে পুলিশের কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী সদস্যকে ব্যবহার করে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। তবে ৫ আগস্টের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর পুলিশ আগের চেয়ে আরও নিরপেক্ষ ও পেশাদারভাবে দায়িত্ব পালন করছে।

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, আসন্ন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ কোনো দল বা মতের পক্ষে অবস্থান না নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দিন শেষ—এখন পুলিশ আইন, বিধি ও জনকল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিতে বিশ্বাস করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে: ডা. শফিকুর

বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমাগী নির্বাচন হবে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক। এখানে জনগণের ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। কোন রকমের পেশি শক্তি ব্যবহার এখানে হবে না। কোন গোষ্ঠী যদি নির্বাচনে ভোট কাটার চেষ্টা করে জনগণ তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।” 

তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে। বিগত দিনের মতো যদি কেউ ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং বা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে, তবে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। সকল জুলুম, ফ্যাসিবাদ ও জাতিকে বিভক্ত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। কারো রক্তচক্ষু তোয়াক্কা না করেই ইসলামের পক্ষে সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠির নেছারাবাদ মাদ্রাসা ময়দানে জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন। 

সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, “ইসলামী দলগুলো এক হতে পারলে এবং আগামী নির্বাচনে সম্মিলিতভাবে ভোটের বাক্স পাততে পারলে দেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে।”

এছাড়াও বক্তব্য দেন, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিদ আজাদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ এবং বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালসহ আরো অনেকে।

বক্তারা বলেন, ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করা সম্ভব। একই সঙ্গে তারা দাবি করেন, দেশ কোন পথে এগোবে, সেটি নির্ধারণ করবে জনগণ এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তিগুলো।

নেছারাবাদী হুজুর মাওলানা খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।

নেছারাবাদ দরবার শরীফের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিনিধি সম্মেলন।

ঢাকা/অলোক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেই দেশে শান্তি লঙ্ঘিত হবে: সুলতানা কামাল
  • প্রশাসন নিয়ে শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্য তার নিজের: জামায়াত 
  • বিদেশিদের সঙ্গে বন্দর চুক্তি বাতিল না করলে যমুনা ঘেরাওয়ের ঘোষণা বাম জোটের
  • কয়েক দিনের মধ্যেই এনসিপি–এবি পার্টিসহ নতুন জোট: মজিবুর রহমান
  • বিদেশিদের দালালি করা দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না জনগণ 
  • নির্বাচনে জয়ী হলে আমরা জনগণের খাদেম হব, শাসক নয়: জামায়াত নেতা বুলবুল
  • জাতীয় পার্টির মাধ্যমে আ. লীগ পুনর্বাসনের চক্রান্ত জনগণ মানবে না: নাহিদ
  • নির্বাচন হতেই হবে, না হলে দেশে সংকট হবে: ডা. শফিকুর
  • নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে: ডা. শফিকুর