সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ‘ডাকাত সর্দার’ সাহেব আলীকে সুনামগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-৯ এর যৌথ দল।

তার বিরুদ্ধে ২০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন। 

এর আগে গত ৫ অক্টোবর গাজীপুরের গাছা থানার চান্দুরা থেকে সাহেব আলীর স্ত্রী ও ছেলেসহ চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১। তাদের কাছ থেকে খেলনা পিস্তল, শাবল, এনআইডি কার্ড ও বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সাহেব আলীর স্ত্রী কল্পনা বেগম (২৯), তার ছেলে সজীব (১৯), সাহেব আলীর শ্যালক শামীম মিয়া (২৬), সহযোগী মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে হাফিজ শেখ (২৩), আব্দুল মজিদের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩৪) ও মৃত হাশেমের ছেলে মো.

আকবর (২০)। এরা প্রত্যেকে সাহেব আলীর অপরাধ জগতের সক্রিয় সহযোগী।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ডাকাত সর্দার সাহেব আলীকে গ্রেপ্তার করতে সিদ্ধিরগঞ্জের চার নম্বর ওয়ার্ডের বউবাজার এলাকায় সাদা পোশাকে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাবের একটি টিম।

অভিযানে ২০টির বেশি মামলার আসামি সাহেব আলীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোর সময় তার সহযোগীরা র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। ওইদিন সন্ত্রাসীদের হামলায় র‌্যাব সদস্যসহ চারজন আহত হয়।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ সন ত র স ন র য়ণগঞ জ স হ ব আল র সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

সুফিয়ান, স্বপন, শফিকের রামরাজত্ব : ঠিকাদারী কাজ, দোকান ও স্থাপনা দখলের অভিযোগ 

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে জীবন কাটালেও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের অনেকে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। 

এদের মধ্যে অন্যতম জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান, আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন স্বপন এবং আইভীর সাবেক বডিগার্ড শফিকুল ইসলাম।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মেয়র আইভীর ঘনিষ্ঠতার সুযোগে এই তিনজন সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ, দোকান ও স্থাপনা নিজেদের দখলে নেন। বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে তারা নিজেদের ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে এসব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন।

তালিকা অনুযায়ী, শুধু টানবাজারের পদ্মা সিটি প্লাজা-১ এ অন্তত ৭টি দোকান রয়েছে আবু সুফিয়ানের দখলে, তার মা-বাবার নামে। 

এছাড়া চাষাড়া সিটি মার্কেটে ৪টি দোকান, ১নং ডিআইটি সংলগ্ন সিটি বিপণি বিতান মার্কেটে ১টি দোকান এবং আরও কয়েকটি ফ্ল্যাট ও ব্যবসায়িক স্পেস তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা গেছে।

একসময় ভবঘুরে জীবনের অধিকারী সুফিয়ান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আইভীর আশীর্বাদে পরিণত হন বিত্তশালী ব্যবসায়ীতে। এমনকি একসময় “বর্ষসেরা করদাতা” নির্বাচিত হওয়ায় শহরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

আইভীর ভাই উজ্জ্বলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন স্বপনের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক স্থাপনা ও ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ। শুরুতে তিনি নির্মাণাধীন ভবনে রড সরবরাহ করতেন, পরে নিজেই হয়ে ওঠেন ঠিকাদার।

বলা হয়, আইভীর ছত্রছায়ায় থেকে মন্ডলপাড়া সিটি কর্পোরেশনের গ্যারেজের পাশের জায়গাসহ একাধিক দোকান ও ফ্ল্যাট দখল করেন তিনি।

স্থানীয়দের ভাষায়, একসময় বিদেশ ফেরত স্বপনের অবস্থা ছিল শোচনীয়। কিন্তু আইভীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর তার ভাগ্য বদলে যায়। আজ তিনি কোটি টাকার মালিক, যার সম্পদের পরিমাণ তিনি নিজেও জানেন না এমনটাই বলছে বাবুরাইলের মানুষজন।

সাবেক মেয়র আইভীর বডিগার্ড শফিকুল ইসলাম সরকারি বেতনভুক্ত হলেও আইভী মেয়র না থাকা অবস্থাতেও তাকে নিয়মিত অনুসরণ করতে দেখা গেছে।

এই ঘনিষ্ঠতার সুযোগে নিজের স্ত্রী, ভাই শরিফুল ইসলাম ও আত্মীয়দের নামে সিটি কর্পোরেশনের বেশ কয়েকটি দোকান ও ফ্ল্যাট দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মিন্নত আলী মাজার সংলগ্ন মার্কেটে কয়েকটি দোকান, দিগু বাবুর বাজারে একাধিক স্পেস, এমনকি নগরভবনের সামনে ওয়ান ব্যাংকের পাশের দোকানটিও এখনো শফিকুলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

৫ আগস্টের পর থেকে আবু সুফিয়ান, স্বপন ও শফিকুল আত্মগোপনে চলে যান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলায়ও তারা আসামি বলে জানা গেছে। তবুও তাদের প্রভাব এখনও বিদ্যমান বলে অভিযোগ করেছেন নগরবাসী।

নগরবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর এই তিনজন এখনো সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনায় দখল করে রেখেছেন। তারা এসব দখলদারদের হাত থেকে স্থাপনা মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

নাসিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “সিটি কর্পোরেশনের কোনো সম্পত্তি ব্যক্তিগতভাবে দখলে রাখা যাবে না। অভিযোগ পেলে আমরা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ মে সকালে শ্রমিক সজল মিয়া হত্যা মামলাসহ হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ছয়টি মামলায় সাবেক মেয়র আইভীকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ