মাদক পাচারকারীদের থেকে জব্দ সোনা গাজার সহায়তায় দেওয়ার ঘোষণা দিলেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট
Published: 16th, October 2025 GMT
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো গাজার পুনর্গঠনে অভূতপূর্ব এক উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, মাদক পাচারকারীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনা আহত ফিলিস্তিনি শিশুদের চিকিৎসায় ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কলম্বিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি কলম্বিয়ার সমর্থনের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে পেত্রো লিখেছেন, ‘আমি ন্যাশনাল এজেন্সি ফর অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টকে মাদক পাচারকারী চক্র থেকে বাজেয়াপ্ত সোনা গাজার আহত শিশুদের চিকিৎসার জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি।’
পেত্রো আরও যোগ করেন, কলম্বিয়া জাতিসংঘে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দেবে, যেখানে যুদ্ধের পর গাজাকে পুনর্গঠন এবং সেখানে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের কথা থাকবে।
কলম্বিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত ন্যাশনাল এজেন্সি ফর অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (এসএই) নিশ্চিত করেছে, তারা প্রেসিডেন্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া পরীক্ষা শুরু করেছে। প্রেসিডেন্টের এ উদ্যোগ কলম্বিয়ার মানবিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
কলম্বিয়ার এই প্রস্তাব এমন একসময়ে এল, যখন জাতিসংঘের হিসাবে গাজা পুনর্গঠনের খরচ ৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম তিন বছরেই প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার প্রয়োজন হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে, বন্দী বিনিময়ের পাশাপাশি গাজা পুনর্গঠন প্রকল্প শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তিতে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার নেতাদের অন্যতম একজন। তিনি বারবার ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে গাজায় ‘জাতিগত নিধন’ চালানোর অভিযোগ এনেছেন।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। তিনি ‘যুদ্ধ শেষ করতে এবং এই উপত্যকা পুনর্গঠনে’ জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাঙালি সেনানায়কদের প্রথম সম্মিলিত বৈঠক
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাতায় তেলিয়াপাড়ার নাম খুব বেশি উচ্চারিত হয় না। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার এই চা-বাগান যেমন সবুজ ছায়ায় লুকিয়ে আছে, অনেকটা তেমনি যেন ইতিহাসেও তেলিয়াপাড়া অন্তরালে। তার অস্তিত্ব নীরব।
হবিগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের নির্জন এই চা-বাগানেই হয়েছিল ঐতিহাসিক এক গোপন বৈঠক। দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর-তিন বইয়ের সূত্রে জানা যায়, তেলিয়াপাড়া চা-বাগান ব্যবস্থাপকের বাংলোতে সেদিন বৈঠকে বসেছিলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৭ জন সেনা কর্মকর্তা। মুক্তিযুদ্ধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিকল্পনা নেন তাঁরা। গড়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টরের প্রথম সেনা সদর দপ্তর।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত তেলিয়াপাড়া বিওপির পুরানো ভবন, যা ১৯৬৭ সালে নির্মিত হয়। নতুন ভবন নির্মিত হওয়ায় এটি পরিত্যক্ত