খুলনার একটি এজেন্ট শাখার ৫০ জন গ্রাহকের প্রায় ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পাঁচজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বাদী হয়ে খুলনা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। বাদী রকিবুল ইসলাম নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

‘আউট’ লিখে ভিডিও দেওয়া ছাত্রদল কর্মীকে আসামি করে মামলা 

পুনরায় রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আহ্বান

মামলার আসামিরা হলেন- ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো.

শিরিন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন) মো. সাহাদাৎ হোসেন, ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রধান ফরহাদ মাহমুদ, প্রধান কার্যালয়ের এজেন্ট ব্যাংকিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আহাম্মেদ আসলাম আল ফেরদৌস, খুলনা এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসের সাবেক রিজিওনাল হেড এ এইচ এম কামরুজ্জামান। 

মামলায় আরো আসামি করা হয়েছে- সাবেক এরিয়া ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম, এজেন্ট শাখার আউটলেট রিলেশন অফিসার পলি খাতুন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শাখা ‘মুন মানহা’র মালিক এস এম সোহেল মাহমুদ এবং আড়ংঘাটা বাজার এজেন্ট শাখার টেলার আবদুল হান্নান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসি রকেট অ্যান্ড এজেন্ট ব্যাংকিং অফিস খুলনার আওতাধীন ‘মুন মানহা’ এজেন্ট শাখায় ৫০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা জমা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৯৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে।

মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বলেন, “২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অনুমোদিত এজেন্ট হিসেবে আড়ংঘাটা বাজারে মুন মানহা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার কার্যক্রম শুরু করে। ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করে শাখাটি বন্ধ হয়ে যায় এবং শাখার এজেন্ট এস এম সোহেল মাহমুদসহ অন্যরা আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে অভিযোগ অনুসন্ধানের সময় দেখা যায়, অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্ত তিনজন ছাড়াও খুলনার রিজিওনাল অফিসের কর্মকর্তাদের তদারকি ও মনিটরিং ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। তবুও, ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে মুন মানহা এজেন্ট শাখার প্রতারিত গরিব গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, এমনকি দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।”

তিনি বলেন, “ডাচ-বাংলা ব্যাংকের নীতিমালা-২০২২ অনুযায়ী এজেন্টের মাধ্যমে কোনো অনিয়ম, প্রতারণা বা আত্মসাতের ঘটনা ঘটলে গ্রাহকদের জমা অর্থ ফেরত দেওয়া এবং যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ব্যাংকের ওপরই বর্তায়- এমনটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে গড়িমসি করতে থাকে। এজন্য প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।” 

এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলেও উল্লেখ করেন দুদকের এই কর্মকর্তা। 

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম মল কর মকর ত ল ইসল ম ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

সিঙ্গাপুরে হলিউড তারকা আরিয়ানা গ্রান্ডেকে জড়িয়ে ধরা তরুণের কারাদণ্ড

সিঙ্গাপুরে একটি চলচ্চিত্রের উদ্বোধনমূলক প্রদর্শনীতে নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে হলিউড তারকা আরিয়ানা গ্রান্ডেকে জড়িয়ে ধরার ঘটনায় এক তরুণকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশটির একটি আদালত তাঁকে ৯ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার এশিয়া অঞ্চলে ‘উইকড: ফর গুড’ চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে। কারাদণ্ড হওয়া তরুণের নাম জনসন ওয়েন। তিনি অস্ট্রেলীয় নাগরিক। বয়স ২৬ বছর। তাঁর বিরুদ্ধে জনপরিসরে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ওয়েন লাফ দিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে দৌড়ে আরিয়ানা গ্রান্ডের দিকে চলে যান। এ সময় আরিয়ানা গ্রান্ডেকে ভীত দেখাচ্ছিল। ওই তরুণ তখন গ্রান্ডের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর কাঁধে হাত রাখেন ও লাফাতে থাকেন।

এ ঘটনায় সিঙ্গাপুরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে ওয়েনকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি তোলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন কনসার্ট ও তারকাদের অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগ ছিল।

পপ তারকা থেকে অভিনেত্রী বনে যাওয়া গ্রান্ডে ২০১৭ সালের মে মাসে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় ২২ জন নিহত এবং কয়েক শ মানুষ আহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে গ্রান্ডে বলেছেন, ওই হামলার ভয়াবহ স্মৃতি তাঁকে তাড়িয়ে বেড়ায়।

সিঙ্গাপুরের ঘটনায় কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, এমন আচরণের মধ্য দিয়ে ওয়েন নতুন করে গ্রান্ডেকে ভয় পাইয়ে দিয়েছেন।

সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার আদালতে শুনানি চলাকালে বলা হয়, ওয়েন দুবার চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে হুট করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেছিলেন। গ্রান্ডেকে জড়িয়ে ধরার পরপরই সহ-অভিনেত্রী সিনথিয়া এরিভো জোর করে ওয়েনকে সরিয়ে দেন। এরপর নিরাপত্তাকর্মীরা ওয়েনকে বের করে নিয়ে আসেন।

ওয়েন দ্বিতীয়বারও নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরোনোর চেষ্টা করেন। তবে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে থামিয়ে দেন।

পরে ওয়েন এ ঘটনার একাধিক ভিডিও তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি গ্রান্ডেকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে তিনি পুলিশের কাছ থেকে ‘মুক্ত’ হয়েছেন।

পরদিন সিঙ্গাপুর পুলিশ ওয়েনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে জনপরিসরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়। ওয়েন দোষ স্বীকার করেছেন।

কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেন, ওয়েন ধারাবাহিকভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়ে আসছেন। তিনি ইচ্ছে করে এ ধরনের আচরণ করেন এবং অনলাইনে জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য সেগুলো প্রকাশ করে থাকেন।

ওয়েন এর আগে কেটি পেরি এবং দ্য উইকেন্ডের কনসার্টে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ভিডিও পোস্ট করেছেন। তিনি বিভিন্ন খেলাধুলার ম্যাচেও মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁকে কিছু স্টেডিয়ামে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ