উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রশিক্ষণ শুরু ২০ অক্টোবর
Published: 16th, October 2025 GMT
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।
নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) অনুষ্ঠিত হবে এই প্রশিক্ষণ। ইতিমধ্যে ইউএনওদের এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আরো পড়ুন:
চার জেলায় নতুন ডিসি
ভূমি অফিসকে আস্থার প্রতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে: সিনিয়র সচিব
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত আজমেরী হকের সই করা চিঠি নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়।
এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় অনুমতির জন্য চিঠি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে।
চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ২০ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। যা চলবে আগামী ১১ নভেম্বর (সম্ভাব্য) পর্যন্ত। প্রশিক্ষণটি হবে ১২টি সেশনে দুই দিনব্যাপী। ২টি করে ব্যাচে মোট ৫০ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (প্রতি ব্যাচে ২৫ জন) অংশগ্রহণ করবেন।
চিঠিতে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকায় ব্যাচভিত্তিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশক্রমে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অফ স র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিনের ‘উড়ন্ত ক্রেমলিন’ যেন এক রাজপ্রাসাদ, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাসহ আর কী আছে ভেতরে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে অবতরণ করছেন। ভারত-রাশিয়া ২৩তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি ভারতে গেছেন। আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ রাতে রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য ব্যক্তিগত নৈশভোজের আয়োজন করছেন।
দুই দেশের সরকারপ্রধানের আলোচনায় প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এর মধ্যে ভারতকে রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এবং সম্ভাব্য এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমান সরবরাহ এবং রাশিয়ার তেলের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে জ্বালানি সুরক্ষার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেতে পারে।
বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত নেতা হিসেবে পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দুটি প্রতীক ছাড়া খুব কমই ভ্রমণ করেন। একটি হচ্ছে তাঁর বর্মসজ্জিত লিমুজিন ‘অরাস সেনাট’ এবং অন্যটি হচ্ছে তাঁর জন্য বিশেষভাবে তৈরি প্রেসিডেন্টের উড়োজাহাজ ইলিউশিন আইএল–৯৬–৩০০ পিইউ। এটি আবার ‘ফ্লাইং ক্রেমলিন’ বা ‘উড়ন্ত ক্রেমলিন’ নামে পরিচিত। এই উড়োজাহাজে চড়ে তিনি ভারত সফরে গিয়েছেন।
‘উড়ন্ত ক্রেমলিন’ সম্পর্কে যা জানা যায়ভ্লাদিমির পুতিনের উড়োজাহাজটি হলো ইলিউশিন আইএল-৯৬-৩০০-এর একটি বিশেষ পরিবর্তিত সংস্করণ। এটি হলো ১৯৮০-এর দশকে ইলিউশিন ডিজাইন ব্যুরোর তৈরি দূরপাল্লার, চার ইঞ্জিনবিশিষ্ট রুশ এয়ারলাইনার। এটি প্রথম ১৯৮৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আকাশে উড়েছিল এবং ১৯৯০-এর দশকের প্রথম দিকে পরিষেবা শুরু করে।
আইএল-৯৬-৩০০পিইউ দূরপাল্লার আইএল-৯৬ প্ল্যাটফর্মে তৈরি, যার দৈর্ঘ্য ৫৫ দশমিক ৩৫ মিটার এবং ডানা বা উইংস্প্যান ৬০ দশমিক ১২ মিটার। এটি চারটি অ্যাভিয়াদভিগাটেল পিএস-৯০এ টার্বোফ্যান ইঞ্জিনের মাধ্যমে চালিত। জ্বালানি না ভরে এই উড়োজাহাজ প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার টানা উড়তে পারে, যা এটিকে দীর্ঘ আন্তর্জাতিক রুট উড্ডয়নের সক্ষমতা দেয়।
এই উড়োজাহাজ ভোরোনেজ এয়ারক্রাফ্ট প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশনের (ভিএএসও) তৈরি। এটি রাশিয়ার বিশেষ ফ্লাইট স্কোয়াড্রনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যারা রুশ প্রেসিডেন্টের সব ভ্রমণের ব্যবস্থা করে থাকে।
প্রেসিডেনশিয়াল ভ্যারিয়েন্টটিকে আইএল-৯৬-৩০০পিইউ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। রুশ ভাষায় ‘পিইউ’-এর পূর্ণ অর্থ হলো পুনক্ট উপরাভলেনিয়া, যার অর্থ দাঁড়ায় ‘কমান্ড পয়েন্ট’ বা ‘কমান্ড পোস্ট’।
পুতিনের ‘উড়ন্ত ক্রেমলিন’–এর বিশেষত্বআইএল-৯৬-৩০০পিইউ জাতীয় জরুরি অবস্থার সময় সম্পূর্ণ একটি মোবাইল কমান্ড সেন্টার হিসেবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এই উড়োজাহাজে এনক্রিপ্টেড যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে, যা সারা বিশ্বের সামরিক, গোয়েন্দা ও সরকারি নেটওয়ার্কগুলোর সঙ্গে সুরক্ষিত যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম।
উড়োজাহাজটি নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ বজায় রাখতে সুরক্ষিত স্যাটেলাইট লিংক এবং সুরক্ষিত রেডিও ও ডেটা চ্যানেল ব্যবহার করে থাকে। এর ককপিটে ছয়টি মাল্টিফাংশন এলসিডি ডিসপ্লে রয়েছে।
উন্নত হ্যান্ডলিং ও নিরাপদ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য জেটটিতে ‘ফ্লাই-বাই-ওয়্যার’ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়েছে। উড়োজাহাজটিতে ইলেকট্রনিক কাউন্টারমেজার এবং রাডার-জ্যামিং প্রযুক্তিসহ উন্নত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা রয়েছে।
যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলার জন্য ইনফ্রারেড ডিকয় লঞ্চার (ক্ষেপণাস্ত্রকে বিভ্রান্ত করার কৌশল) এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধব্যবস্থার মাধ্যমে এই উড়োজাহাজ সুরক্ষিত।
প্রতিবেদন অনুসারে, উড়োজাহাজটিকে ইলেকট্রনিকস ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালসের (ইএমপি) আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত।
জানা যায়, আইএল-৯৬-৩০০পিইউ জরুরি কমান্ড ফাংশনকে সহায়তা করতে পারে। এখান থেকে প্রেসিডেন্ট আকাশ থেকে সামরিক আদেশ জারি করার সুবিধা পান।
ধারণা করা হয়, এই উড়োজাহাজে একটি পারমাণবিক কমান্ড ইন্টারফেস অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে। শুধু চরম পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে।
পুতিনের উড়োজাহাজে সুযোগ-সুবিধাআইএল-৯৬-৩০০পিইউ ভেতরে চলমান ক্রেমলিন বাসভবন হিসেবে কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদন ও সরকারি তথ্য অনুসারে, এটিকে সরকারি উড়োজাহাজের চেয়ে আকাশে একটি বিলাসবহুল প্রাসাদ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
বিমানটির ভেতরের সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে শয়নকক্ষসহ প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত স্যুট, বোর্ডরুমে বসার ব্যবস্থাসহ বড় কনফারেন্স রুম, প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত অফিস ও কাজের জায়গা, কর্মকর্তা বা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য গেস্ট লাউঞ্জ, বিলাসবহুল বাথরুম, যাতে গোসলেরও ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানা যায়।
এ ছাড়া রান্নাঘর ও খাবারের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা, চিকিৎসাসুবিধা বা চিকিৎসা কক্ষ, দীর্ঘ ফ্লাইটে ব্যায়ামের জন্য ফিটনেস বা জিম স্পেস ইত্যাদি।
উড়োজাহাজের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জাও বেশ চোখে পড়ার মতো। যেমন এতে রয়েছে সোনার প্লেট বসানো ফিটিংস, দামি কাঠের কাজ, নিওক্ল্যাসিক্যাল আসবাব, ট্যাপেস্ট্রি ও শিল্পকর্ম, প্রিমিয়াম চামড়া ও গৃহসজ্জার সামগ্রী।
অন্যান্য অনেক বিশ্বনেতা বোয়িং বা এয়ারবাসের পরিবর্তিত জেট ব্যবহার করলেও পুতিনের উড়োজাহাজটি পুরোপুরি রাশিয়ায় তৈরি।