রোনালদোকে সামনে বসিয়ে কী বললেন ট্রাম্প
Published: 19th, November 2025 GMT
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া এক জমকালো নৈশভোজে হাজির ছিলেন ফুটবল মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে সম্মান জানাতে আয়োজিত এই ভোজে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ছিলেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক, টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কসহ বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা।
অনুষ্ঠানে রোনালদোকে ইস্ট রুমের সামনের দিকে বসানো হয়। সেখানেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ক্রাউন প্রিন্স অতিথিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের মধ্যেই রোনালদোর উপস্থিতিকে আলাদা করে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। জানান, তিনি রোনালদোকে তাঁর ১৯ বছর বয়সী ছেলে ব্যারন ট্রাম্পের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
রোনালদোকে ধন্যবাদ জানিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার ছেলে রোনালদোর বড় ভক্ত। রোনালদো যেখানে, সে-ও সেখানে থাকতে চায়। ব্যারন আজ তাকে সরাসরি দেখা করার সুযোগ পেয়েছে। আর আমার মনে হয়, শুধু তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরেছি বলেই সে এখন তার বাবাকে একটু বেশি সম্মান করছে।’
আরও পড়ুনট্রাম্পকে ‘শান্তির জন্য খেলা’র বার্তা লিখে জার্সি উপহার রোনালদোর১৮ জুন ২০২৫ট্রাম্পকে ঘিরে রোনালদো এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনায় এসেছেন। চলতি বছরের জুনে নিজে স্বাক্ষর করা জার্সি উপহার পাঠান তিনি। পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা কানাডার আলবার্টার কানানাসকিসে ট্রাম্পকে বিশেষ সেই জার্সি তুলে দেন। এরপর কদিন আগে পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে নিয়ে রোনালদো বলেন, ‘তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি বিশ্বের পরিবর্তন ঘটাতে বা পরিবর্তনে সাহায্য করতে পারেন।’
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে রোনালদোদের এই সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হলে দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রে যাননি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের মূল্যায়নে জানিয়েছিল, এই অপারেশন অনুমোদন করে থাকতে পারেন ক্রাউন প্রিন্স। তবে প্রিন্স শুরু থেকেই অভিযোগটি অস্বীকার করে আসছেন। সব মিলিয়ে তাঁর এই সফরকে তাই বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুনরোনালদো কি সত্যিই বিশ্বকাপে ১-২ ম্যাচ মিস করবেন, কীভাবে১৬ নভেম্বর ২০২৫রোনালদোও অনেক দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন। এই দেশে তিনি সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৪ সালে। তবে তাঁর সামনে আবার এক বড় যাত্রা অপেক্ষা করছে। আগামী বছর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে তাঁকে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে আসতে হবে।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হবে ৫ ডিসেম্বর, ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে। সেখানে থাকার কথা আছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পেরও। ২০২৬ বিশ্বকাপকে ঘিরে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আগ্রহ এখন প্রায় উচ্ছ্বাসের পর্যায়ে। ইতিমধ্যেই তিনি নানা মন্তব্য করে সেই আগ্রহের প্রমাণ দিয়েছেন
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র উন প র ন স য ক তর ষ ট র ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
আইএসএফ কী, এতে কারা থাকবে, গাজায় তাদের কাজ কী
ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাত বন্ধে ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সেই প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদন পেয়েছে। প্রস্তাবে গাজাকে নিরাপদ করার জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স’ (আইএসএফ) নামে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার নিরাপত্তায় সহায়তার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঠিকঠাক বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তার ওপর নজর রাখবে আন্তর্জাতিক এই বাহিনী। তবে তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে, এই বাহিনী কাজ করবে ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে। তাদের লক্ষ্য গাজাকে অস্ত্রমুক্ত করা। একই সঙ্গে একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া।
আইএসএফ কীআইএসএফ একটি বহুজাতিক বাহিনী। গাজায় পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, সীমান্তের সুরক্ষা দেওয়া, উপত্যকাটিকে অস্ত্রমুক্ত করে নিরাপত্তা বজায় রাখা, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়া, মানবিক কার্যক্রম চালানোসহ নানা দায়িত্ব পালন করবে তারা। এ ছাড়া সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে এই বাহিনী।
গাজার নিরাপত্তাসংক্রান্ত অনেক দায়িত্বও নিজেদের হাতে তুলে নেবে আইএসএফ। ১৯ বছর ধরে এসব দায়িত্ব পালন করে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ২০০৬ সাল থেকে গাজা শাসন করছে সংগঠনটি। উপত্যকাটির সামাজিক ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত সেবা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও রয়েছে তারা।
গত অক্টোবরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, গাজায় সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে তাঁর দেশ। পরে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।কাদের নিয়ে গঠন হবে এই বাহিনীবিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই বাহিনী মিসর ও ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করবে। সঙ্গে থাকবে নতুন প্রশিক্ষণ পাওয়া একটি পুলিশ বাহিনীও। ট্রাম্পের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বলেছেন, এই বাহিনীতে সেনা পাঠাতে চেয়েছে আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়া।
ওই উপদেষ্টার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আইএসএফে যোগ দেওয়ার জন্য মিসর, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও আরব আমিরাতের সরকারি কর্মকর্তা আনোয়ার গারগাশ আল-জাজিরাকে বলেছেন, এই বাহিনীতে তাঁর দেশ অংশ নেবে না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, বাহিনীটির নেতৃত্ব দিতে পারে মিসর।
এ ছাড়া গত অক্টোবরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, গাজায় সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে তাঁর দেশ। পরে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তখন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সার বলেছিলেন, গাজার ভূখণ্ডে তুরস্কের সেনাসদস্যদের উপস্থিতি মেনে নেবে না তাঁর দেশ।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের দৃশ্য। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে