ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাত বন্ধে ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সেই প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদন পেয়েছে। প্রস্তাবে গাজাকে নিরাপদ করার জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স’ (আইএসএফ) নামে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার নিরাপত্তায় সহায়তার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঠিকঠাক বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তার ওপর নজর রাখবে আন্তর্জাতিক এই বাহিনী। তবে তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে, এই বাহিনী কাজ করবে ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে। তাদের লক্ষ্য গাজাকে অস্ত্রমুক্ত করা। একই সঙ্গে একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

আইএসএফ কী

আইএসএফ একটি বহুজাতিক বাহিনী। গাজায় পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, সীমান্তের সুরক্ষা দেওয়া, উপত্যকাটিকে অস্ত্রমুক্ত করে নিরাপত্তা বজায় রাখা, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়া, মানবিক কার্যক্রম চালানোসহ নানা দায়িত্ব পালন করবে তারা। এ ছাড়া সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে এই বাহিনী।

গাজার নিরাপত্তাসংক্রান্ত অনেক দায়িত্বও নিজেদের হাতে তুলে নেবে আইএসএফ। ১৯ বছর ধরে এসব দায়িত্ব পালন করে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ২০০৬ সাল থেকে গাজা শাসন করছে সংগঠনটি। উপত্যকাটির সামাজিক ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত সেবা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও রয়েছে তারা।

গত অক্টোবরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, গাজায় সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে তাঁর দেশ। পরে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।কাদের নিয়ে গঠন হবে এই বাহিনী

বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই বাহিনী মিসর ও ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করবে। সঙ্গে থাকবে নতুন প্রশিক্ষণ পাওয়া একটি পুলিশ বাহিনীও। ট্রাম্পের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বলেছেন, এই বাহিনীতে সেনা পাঠাতে চেয়েছে আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়া।

ওই উপদেষ্টার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আইএসএফে যোগ দেওয়ার জন্য মিসর, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও আরব আমিরাতের সরকারি কর্মকর্তা আনোয়ার গারগাশ আল-জাজিরাকে বলেছেন, এই বাহিনীতে তাঁর দেশ অংশ নেবে না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, বাহিনীটির নেতৃত্ব দিতে পারে মিসর।

এ ছাড়া গত অক্টোবরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, গাজায় সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে তাঁর দেশ। পরে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তখন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সার বলেছিলেন, গাজার ভূখণ্ডে তুরস্কের সেনাসদস্যদের উপস্থিতি মেনে নেবে না তাঁর দেশ।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের দৃশ্য। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র এই ব হ ন প রস ত ব ত রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাবে জাতিসংঘের সমর্থন

গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে পরিষদের ১৩ সদস্য। কোনো দেশ বিরোধিতা না করলেও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে।

প্রস্তাবের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত গাজার জন্য ২০ দফা পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন পেল। 

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

পরিকল্পনায় গাজায় যুদ্ধবিরতি টেকসই করা, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং হামাসসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করার প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, একাধিক দেশ আইএসএফে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাহিনীটি ইসরায়েল, মিসর এবং নবগঠিত ও যাচাইকৃত ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।

তবে হামাস প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলে, প্রস্তাবটি গাজায় ‘আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব’ চাপিয়ে দেয়। এটা তাদের জনগণ ও বিভিন্ন গোষ্ঠী মানতে রাজি নয়।

প্রস্তাবে একটি অন্তর্বর্তী শাসন কাঠামো ‘বোর্ড অব পিস’ (বিওপি) গঠনের কথাও বলা হয়েছে, যা গাজা পুনর্গঠন, মানবিক সহায়তা তদারকি এবং একটি টেকনোক্র্যাট–নির্ভর ফিলিস্তিনি কমিটির কার্যক্রম দেখভাল করবে। গাজার পুনর্গঠনে অর্থায়ন বিশ্বব্যাংক–নিয়ন্ত্রিত একটি ট্রাস্ট ফান্ড থেকে আসবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, প্রস্তাবটি মাঠপর্যায়ে দ্রুত বাস্তবায়িত হতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি দুই রাষ্ট্র সমাধানের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সহায়ক হতে হবে।

প্রস্তাবের পক্ষে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষসহ মিসর, সৌদি আরব, তুরস্কসহ আরো কয়েকটি আরব ও মুসলিম দেশ সমর্থন করে দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাবে জাতিসংঘের সমর্থন