কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠে (বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন মাঠ) বৃহস্পতিবার বিএনপির দুই পক্ষকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। তবে দুই পক্ষই কর্মসূচি পালনে অনড়। তারা বৃহস্পতিবার সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কুমিল্লা-৬ আসনে (কুমিল্লা আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। তিনি বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে জনসভার ঘোষণা দেন। একই দিন একই মাঠে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদের (ইয়াছিন) অনুসারীরা। পাশাপাশি স্থানে দুই পক্ষই মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু করে। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে কর্মসূচি পালনের জন্য দুই পক্ষই আবেদন করে। সাধারণত আমাদের কাছে এমন আবেদন এলে আইনশৃঙ্খলা অবনতির কোনো শঙ্কা আছে কি না, বিষয়টি নিয়ে মতামতের জন্য পুলিশের বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) প্রেরণ করা হয়। এই দুটি আবেদনও আমরা ডিএসবিতে প্রেরণ করে মতামত চেয়েছি। আজ রাতে ডিএসবির গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আমাদের জানানো হয়েছে, একই দিনে একই মাঠে একই দলের দুই পক্ষের কর্মসূচি থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন বা অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যার কারণে আমরা চূড়ান্তভাবে কাউকে টাউন হল মাঠ বরাদ্দ দিচ্ছি না।’

মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, ‘এরই মধ্যে দুই পক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা কেউই বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবে না। তাদের বিকল্প স্থানে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। কেউ সিদ্ধান্ত অমান্য করার চেষ্টা করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে বৃহস্পতিবারের জনসভা ঘিরে বুধবার রাতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে টাউন হল মাঠ পরিদর্শন করেন মনিরুল হক চৌধুরী। এরপরই আমিন-উর-রশিদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা টাউন হল মাঠে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই পক্ষই তাদের কর্মসূচি পালনে অনড় অবস্থায় রয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে তাঁর ব্যক্তিগত আইনজীবী আবদুল মোতালেব মজুমদার মাঠ বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন। বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগামীকাল জনসভা করবই। সেভাবেই আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টাউন হল মাঠেই আমরা জনসভা করব।’

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম (রায়হান) আমিন-উর-রশিদের কর্মসূচির জন্য মাঠ বরাদ্দের আবেদন করেছেন। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা টাউন হল মাঠেই অনুষ্ঠান করব। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময় কুমিল্লা-৬ আসনে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়। ওই দিন থেকেই আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আমিন-উর-রশিদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমতি না পেলেও একই স্থানে কর্মসূচি পালনে অনড় বিএনপির দুই পক্ষ

কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠে (বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন মাঠ) বৃহস্পতিবার বিএনপির দুই পক্ষকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। তবে দুই পক্ষই কর্মসূচি পালনে অনড়। তারা বৃহস্পতিবার সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কুমিল্লা-৬ আসনে (কুমিল্লা আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। তিনি বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে জনসভার ঘোষণা দেন। একই দিন একই মাঠে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদের (ইয়াছিন) অনুসারীরা। পাশাপাশি স্থানে দুই পক্ষই মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু করে। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে কর্মসূচি পালনের জন্য দুই পক্ষই আবেদন করে। সাধারণত আমাদের কাছে এমন আবেদন এলে আইনশৃঙ্খলা অবনতির কোনো শঙ্কা আছে কি না, বিষয়টি নিয়ে মতামতের জন্য পুলিশের বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) প্রেরণ করা হয়। এই দুটি আবেদনও আমরা ডিএসবিতে প্রেরণ করে মতামত চেয়েছি। আজ রাতে ডিএসবির গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আমাদের জানানো হয়েছে, একই দিনে একই মাঠে একই দলের দুই পক্ষের কর্মসূচি থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন বা অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যার কারণে আমরা চূড়ান্তভাবে কাউকে টাউন হল মাঠ বরাদ্দ দিচ্ছি না।’

মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, ‘এরই মধ্যে দুই পক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা কেউই বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবে না। তাদের বিকল্প স্থানে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। কেউ সিদ্ধান্ত অমান্য করার চেষ্টা করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে বৃহস্পতিবারের জনসভা ঘিরে বুধবার রাতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে টাউন হল মাঠ পরিদর্শন করেন মনিরুল হক চৌধুরী। এরপরই আমিন-উর-রশিদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা টাউন হল মাঠে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই পক্ষই তাদের কর্মসূচি পালনে অনড় অবস্থায় রয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে তাঁর ব্যক্তিগত আইনজীবী আবদুল মোতালেব মজুমদার মাঠ বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন। বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগামীকাল জনসভা করবই। সেভাবেই আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টাউন হল মাঠেই আমরা জনসভা করব।’

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম (রায়হান) আমিন-উর-রশিদের কর্মসূচির জন্য মাঠ বরাদ্দের আবেদন করেছেন। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা টাউন হল মাঠেই অনুষ্ঠান করব। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময় কুমিল্লা-৬ আসনে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়। ওই দিন থেকেই আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আমিন-উর-রশিদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ