জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ হয়নি। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গত এক বছরে উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সরকারের প্রশ্রয়ে এরা বেপরোয়া।

শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে বক্তারা এসব কথা বলেন। মরমি সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৬তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এ আয়োজন করে।

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’—এ বাণীকে সামনে রেখে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিখিল দাস। আলোচক ছিলেন বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, চারণের সহসভাপতি শাহজাহান কবীর, কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।

ফিরোজ রশীদ বলেন, লালন সাঁই ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার একজন লোক দার্শনিক। তিনি বাউলচিন্তার আলোকে জাত-পাত, ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানবতার জয়গান গেয়েছিলেন। তিনি সমাজের ব্রাত্যজনের চলমান অন্তস্রোতের ভাবসম্পদ ধারণ করতে পেরেছিলেন।

বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গত এক বছরে উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটেছে। এই ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাজার, মন্দির, পীরের দরগা, লালনের আখড়া, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যে আক্রমণ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে চলেছে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মব লিঞ্চিং বা গণপিটুনিতে হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। লাশ কবর থেকে তুলে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে ফেলা, নারীদের খেলা বন্ধ করাসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দিচ্ছে। এই সাম্প্রদায়িক মব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সরকারের প্রশ্রয়ে এরা বেপরোয়া। এটি গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

বক্তারা আরও বলেন, ধর্ম-বর্ণ, জাতিতে জাতিতে, মানুষে মানুষে বিভাজনের রাজনীতির পরিবর্তে মিলনের রাজনীতি গড়ে তোলার চেষ্টায় লালনের দর্শন-চিন্তা ও কর্ম পথ দেখাতে পারে। লালন আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র প

এছাড়াও পড়ুন:

বাঙালি সেনানায়কদের প্রথম সম্মিলিত বৈঠক

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাতায় তেলিয়াপাড়ার নাম খুব বেশি উচ্চারিত হয় না। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার এই চা-বাগান যেমন সবুজ ছায়ায় লুকিয়ে আছে, অনেকটা তেমনি যেন ইতিহাসেও তেলিয়াপাড়া অন্তরালে। তার অস্তিত্ব নীরব।

হবিগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের নির্জন এই চা-বাগানেই হয়েছিল ঐতিহাসিক এক গোপন বৈঠক। দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর-তিন বইয়ের সূত্রে জানা যায়, তেলিয়াপাড়া চা-বাগান ব্যবস্থাপকের বাংলোতে সেদিন বৈঠকে বসেছিলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৭ জন সেনা কর্মকর্তা। মুক্তিযুদ্ধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিকল্পনা নেন তাঁরা। গড়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টরের প্রথম সেনা সদর দপ্তর।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত তেলিয়াপাড়া বিওপির পুরানো ভবন, যা ১৯৬৭ সালে নির্মিত হয়। নতুন ভবন নির্মিত হওয়ায় এটি পরিত্যক্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ