৭ মাসের গর্ভবতী অ্যাথলেট ১০ কিলোমিটার দৌড়িয়ে আলোচনায়
Published: 18th, October 2025 GMT
ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের রাস্তায় তিনি ছুটে চলেছেন আর দুই পাশের দর্শক করতালি দিয়ে তাঁকে অনুপ্রাণিত করছেন। হাসিমুখে দৌড় শেষ করার পর সহ–অ্যাথলেটরাও তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, তাঁর সাহসিকতাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।
তিনিও বুঝিয়ে দিয়েছেন, খেলাধুলার প্রতি তাঁর টান শুধু পদক জেতার জন্য নয়; বরং তা এক গভীর ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণার উৎস। গর্ভে ৭ মাসের সন্তান নিয়ে দৌড়ানো তো আর চাট্টিখানি কথা নয়!
হোসেলিন ব্রেয়া সেই কাজটাই হাসিমুখে করেছেন। ৩১ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট সম্প্রতি কারাকাস রক দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সবার মন জিতে নিয়েছেন। গর্ভে সন্তান নিয়ে মাত্র ৪০ মিনিট ৩১ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০ কিলোমিটার দৌড় শেষ করে আলোচনায় এসেছেন।
প্রতিযোগিতার নারী বিভাগে ১২তম হয়েছেন হোসেলিন। এরপরও সোনার পদক গেছে হোসেলিনের পরিবারের কাছে। তাঁর ছোট বোন এদিমার ব্রেয়া যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন! এদিমারের ফিনিশ লাইন ছুঁতে সময় লেগেছে ৩৪ মিনিট ৩ সেকেন্ড।
দৌড় শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হোসেলিন লিখেছেন, ‘মূলত মজা করার জন্যই দৌড়েছিলাম। কারণ, কারাকাস রক আমার প্রিয় প্রতিযোগিতাগুলোর একটি। আমার বোন এখানে অংশ নিয়েছিল। তাই আমি ভিন্নভাবে, একটু ধীরে ও সচেতনভাবে দৌড়াতে চেয়েছিলাম। তবে এত মানুষের ভালোবাসা পাব, ভাবতেই পারিনি। নারী, পুরুষ, এমনকি শিশুরাও আমাকে বার্তা পাঠিয়েছে। এটা সত্যিই দারুণ এক অনুভূতি।’
জন্ম স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় হলেও মা–বাবার সূত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভেনেজুয়েলাকে প্রতিনিধিত্ব করেন হোসেলিন। তাঁর কাছে দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। ২০২৩ সালে তিনি স্প্যানিশ ক্রস–কান্ট্রি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ২০২২ সালে আলকোবেন্দাস ও সান মার্তিনো দে অরেনসে প্রতিযোগিতাতেও সোনার পদক জেতেন।
১০ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় হোসেলিনের সেরা টাইমিং ৩২ মিনিট ৫ সেকেন্ড। আর ২০২৩ সালে তিনি ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছিলেন ১৪ মিনিট ৩৬ দশমিক ৫৯ সেকেন্ড, যা স্পেনের জাতীয় রেকর্ড ভেঙে দিলেও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি।
কারাকাসে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতাতেও হোসেলিন প্রতি কিলোমিটারে গড়ে ৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডের গতি ধরে রেখেছিলেন। দৌড় শুরু হয় প্রাদোস দেল এস্তে মহাসড়ক থেকে, শেষ হয় আভেনিদা লাস মার্সিডিজ এলাকায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কম, ইংরেজিতে অকৃতকার্য বেশি
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। এ বোর্ডে বিগত ছয় বছরের তুলনায় এবার সর্বনিম্ন পাসের হার ও জিপিএ-৫ এসেছে। তবে দুই বিষয়েই এগিয়ে আছেন মেয়েরা। এবার বোর্ডটিতে শিক্ষার্থী পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহা. তৌহিদুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ফলাফলের বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এবার ৬৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ৫ হাজার ৮৯১ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৬০ হাজার ৮৮২ জন। অনুত্তীর্ণ ৪৫ হাজার ৯ জন, যা শতকরা হিসেবে ৪২ দশমিক ৫০। তবে শুধু এক বিষয়েই ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৪১ জন। এবার ৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেননি।
আরও পড়ুনইংরেজিতে কম পাসে যশোর বোর্ডে ‘ফল বিপর্যয়’১ ঘণ্টা আগেফলাফল ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ফলাফল অপেক্ষাকৃতভাবে খারাপ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় অংশ ইংরেজি বিষয়ে ফেল করেছেন এবং এক বিষয়ে ফেল করেছেন।
৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস না করার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ওই কলেজগুলোতে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যাই কম। এমনও কলেজ আছে যেখান থেকে মাত্র একজন বা দুজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে এসব কলেজ কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান যাচাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, দিনাজপুর বোর্ডে এবার পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। যেখানে ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৫৬, ২০২৩ সালে ৭৪ দশমিক ৪৮, ২০২২ সালে ৭৯ দশমিক ০৮, ২০২১ সালে ৯২ দশমিক ৪৩ এবং ২০২০ সালে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছিলেন। অন্যদিকে এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ হাজার ২৬০ জন। যেখানে ২০২৪ সালে ১৪ হাজার ২৯৫, ২০২৩ সালে ৬ হাজার ৪৫৯, ২০২২ সালে ১১ হাজার ৮৩০ এবং ২০২১ সালে ১৫ হাজার ৩৪৯ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুনসব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে পিছিয়ে কুমিল্লা, পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন১ ঘণ্টা আগেমেয়েরা এগিয়েএ বোর্ডে গত সাত বছর ধরে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোতেই ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে থাকছেন মেয়েরা। এবার ছেলেদের পাসের হার ৫২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি বছরে মেয়েদের পাসের হার ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছেলেদের সংখ্যা ২ হাজার ৭৭৪ জন। অন্যদিকে ৩ হাজার ৪৮৬ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এবার মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৪ জন এবং ছেলে ৫০ হাজার ৫১৭ জন।
প্রথম স্থানে রংপুর জেলাএ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৬৬৬টি কলেজের পরীক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর মধ্যে পাসের হারে প্রথম স্থানে আছে রংপুর জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। পাসের হার ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নীলফামারী জেলা। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে আছেন রংপুর জেলার পরীক্ষার্থীরা। মোট ২ হাজার ৬২৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন এ জেলায়।
আরও পড়ুনবরিশালে জিপিএ–৫—এ এগিয়ে মেয়েরা, ১২ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেননি১ ঘণ্টা আগে৪৩ কলেজে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেননিএবার ৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাসে করেননি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০টি কলেজ নীলফামারীর। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ৯টি, ঠাকুরগাঁওয়ের ৬টি, লালমনিরহাটের ৫টি, রংপুরের ৪টি, দিনাজপুরের ৪টি, পঞ্চগড়ের ৩টি এবং গাইবান্ধা জেলার অন্তর্ভুক্ত ২টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি।