পাকিস্তানের ‘কাপুরুষোচিত হামলা’য় তিন আফগান ক্রিকেটার নিহতের ঘটনাকে ‘বর্বরতাপূর্ণ’ বললেন রশিদ খান
Published: 18th, October 2025 GMT
আফগানিস্তানের আরগুন জেলায় বিমান হামলায় তিন স্থানীয় ক্রিকেটার নিহত হওয়ায় পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করেছেন রশিদ খান। আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের চোখে এই হামলা ‘নীতিবিবর্জিত ও বর্বরতাপূর্ণ’।
কবির, সিবঘাতুল্লাহ এবং হারুন নামে তিন স্থানীয় ক্রিকেটার নিহত হওয়ার এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দুষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। নিজেদের এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টের বিবৃতিতে এসিবি বলেছে, ‘আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড পাকতিকা প্রদেশের আরগুন জেলার সাহসী ক্রিকেটারদের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক এবং সমবেদনা জানাচ্ছে, যাঁরা সন্ধ্যায় পাকিস্তানি বাহিনীর কাপুরুষোচিত হামলার শিকার হয়েছেন।’
শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানে আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসিবি।
বাংলাদেশ সময় গতকাল রাতে এসিবি ত্রিদেশীয় সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানোর পর রশিদ খানের এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টে বলা হয়, ‘আফগানিস্তানে পাকিস্তানি বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানিতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন নারী, শিশু এবং তরুণ ক্রিকেটাররা—যাঁরা একদিন বিশ্বমঞ্চে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখছিলেন।’
এই তারকা লেগ স্পিনারের পোস্টে আরও বলা হয়, ‘বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো সম্পূর্ণ নীতিবিবর্জিত এবং বর্বরতাপূর্ণ কাজ। এ ধরনের অন্যায় ও অবৈধ হামলা মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর উদাহরণ—যা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না।’ এসিবির ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানানো হয় রশিদের পোস্টে, ‘আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। এই কঠিন সময়ে আমি আমাদের জনগণের পাশে আছি। জাতীয় মর্যাদার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।’
আরও পড়ুনহামলায় নিহত তিন আফগান ক্রিকেটার, পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে না আফগানিস্তান১ ঘণ্টা আগেআফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে করা পোস্টে বলা হয়, ‘এই দমনকারীদের হাতে নিরপরাধ বেসামরিক মানুষ এবং আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলোয়াড়দের হত্যার শিকার হওয়া নৃশংস ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।’
আফগানিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখা হয়, ‘আরগুন জেলার বীর ক্রিকেটারদের খবর শুনে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হয়েছে, যাঁরা প্রীতি ম্যাচের পর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন। এই ঘটনা শুধু পাকতিকা প্রদেশের জন্যই নয়, বরং সমগ্র আফগান ক্রিকেট পরিবার ও দেশের জন্যও একটি গভীর শোকের বিষয়।’
আগামী ১৭ থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ত্রিদেশীয় সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আফগানিস্তানেরও অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুনঅদ্ভুত সব নিয়ম নিয়ে এল ক্রিকেটের নতুন সংস্করণ—টেস্ট টোয়েন্টি১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
জনসমক্ষে বোরকা নিষিদ্ধে পর্তুগালের পার্লামেন্টে বিল পাস
পর্তুগালের পার্লামেন্ট জনসমক্ষে ‘লিঙ্গ বা ধর্মীয়’ কারণে মুখ ঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ করতে একটি বিল অনুমোদন করেছে। এটি মূলত মুসলিম নারীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে, যারা মুখ ঢাকা বোরকা পরেন।
বিলটি গতকাল শুক্রবার পাস হয়েছে। এ বিলটি প্রস্তাব করেছিলেন দক্ষিণপন্থি চেগা পার্টির নেতা আন্দ্রে ভেনচুরা। শনিবার (১৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই বিলে পর্তুগালে জনসমক্ষে বোরকা ও নিকাব নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। তবে বিমান, কূটনৈতিক প্রাঙ্গণ এবং উপাসনালয়ে এখনও মুখ ঢাকা বোরকা ব্যবহারের অনুমতি থাকবে।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, জনসমক্ষে নিকাব পরলে ২০০ থেকে ৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। এছাড়া কাউকে জোরপূর্বক নিকাব পরাতে হলে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
সংসদীয় কমিটি এখন বিলটি নিয়ে আলোচনা করবে এবং পরবর্তী ধাপে সাংবিধানিক বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে। পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা বিলটিতে ভোট দিতে পারেন অথবা আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সাংবিধানিক আদালতে পাঠাতে পারেন। এ বিল আইনে পরিণত হলে পর্তুগালও সেই ইউরোপীয় দেশগুলোর তালিকায় নাম লেখাবে, যেখানে জনসমক্ষে মুখ ঢাকা বোরকা পরা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। ইতিমধ্যে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে এ ধরনের বিধিনিষেধ রয়েছে।
বিলটি পাসের সময় পার্লামেন্টে চেগা পার্টির নেতা আন্দ্রে ভেনচুরা বলেন, “আজ আমরা পার্লামেন্টের নারী সদস্যদের, আমাদের মেয়েদের এই দেশে একদিন বোরকা পরার হাত থেকে রক্ষা করছি। এটি নারীদের ‘বর্জন ও হীনমন্যতার পরিস্থিতির’ শিকার করে। এছাড় এটি আমাদের ‘স্বাধীনতা, সমতা ও মানবিক মর্যাদা’ এর মতো নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
তবে বামপন্থি দলগুলোর আইনপ্রণেতারা দ্বিমত পোষণ করেছেন। বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া মধ্য-বাম সমাজতান্ত্রিক দলের আইনপ্রণেতা পেদ্রো দেলগাডো আলভেস বলেন, “এই উদ্যোগটি কেবলমাত্র বিদেশিদের লক্ষ্য করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, যাদের ভিন্ন ধর্ম রয়েছে।”
ঢাকা/ফিরোজ