রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল পুনর্বিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
Published: 19th, November 2025 GMT
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনের তফসিল পুনর্বিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁরা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে করার দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ব্রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে ২ ও ৩ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ৬ ডিসেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ৯ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে। ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোট গ্রহণ শেষে গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ পাশে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আহমাদুল হক, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিবলী সাদিক ও অর্থনীতি বিভাগের মেহেদী হাসান। তাঁরা বলেন, নির্বাচন কমিশন ২৯ ডিসেম্বর ব্রাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর থেকে। এরও আগে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ির পথে রওনা হয়ে যান। এই পরিস্থিতিতে ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় প্রশাসনের উদ্দেশ্য নিয়ে যৌক্তিক প্রশ্ন উঠছে।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ব্রাকসু নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল পুনর্বিবেচনা করে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হয়।
জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শাহ জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আমরা ভেবেচিন্তে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছি। অনেক পর্যালোচনা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আমরা যৌক্তিক সময় নিয়েছি। শীতকালীন অবকাশের বিষয়ে ভোট–পরবর্তী ছুটি দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে আজ একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থীদের লাগবে ডোপ টেস্ট, অনলাইনে ব্যক্তি আক্রমণ ও গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (শাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে ডোপ টেস্ট করাতে হবে। একই সঙ্গে ভোটার ও প্রার্থীদের নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক ও গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশনের মনিটরিং সেল।
গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত শাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আচরণবিধির ‘মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রত্যাহার’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রার্থী নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে ডোপ টেস্টের স্যাম্পল দেওয়ার পর প্রাপ্ত রসিদটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেবেন। নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সব প্রার্থীর ডোপ টেস্টের প্রতিবেদন সংগ্রহ করবে। ডোপ টেস্টের ফলাফল ‘পজিটিভ’ হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন গঠিত রিভিউ কমিটির চূড়ান্ত মতামত নেওয়া হবে।
অনলাইনে প্রচার-প্রচারণার নিয়ম ও তা লঙ্ঘনের বিষয়ে আচরণবিধির অনুচ্ছেদ-৫-এ বলা হয়েছে, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো যাবে, তবে তা অবশ্যই আইনসিদ্ধ ইতিবাচক পদ্ধতিতে হতে হবে। দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ এমন কোনো কাজ অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা যাবে না।
এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারণা ও প্রচারপত্রে কিংবা প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হনন, গুজব, মানহানিকর আচরণ, অশালীন উক্তি, উসকানিমূলক কোনো কথা কিংবা কারও বিরুদ্ধে কোনো অসত্য তথ্য ছড়ানো, কোনো ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক দল বা সংশ্লিষ্ট কারও অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোনো কিছু করা যাবে না। নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো প্রচারণা করা যাবে না।
এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্বাচনের জন্য ক্ষতিকর যেকোনো অনলাইন সাইট বা গ্রুপ বন্ধ, কনটেন্ট ডিলিট এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কমিশনের মনিটরিং সেল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। আচরণবিধিতে এমনটাই উল্লেখ করা আছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনে শাস্তি কী, সে বিষয়ে উল্লেখ আছে অনুচ্ছেদ-১৮ তে। এতে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ বা কোনো ভোটার নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা অথবা রাষ্ট্রীয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য যেকোনো দণ্ডে দণ্ডিত হবে। নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’