গুমের বিচারে তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি সময়ের দাবি: বিচারপতি মইনুল ইসলাম
Published: 18th, October 2025 GMT
গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, গুমের বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োগ জরুরি। এর সঙ্গে সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ: গুম-সংক্রান্ত ঘটনায় বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় এ কথাগুলো বলেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম। ঢাকায় অবস্থিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন কার্যালয়ের সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করে গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গুমের ঘটনাগুলো শুধু বিচারিক প্রক্রিয়ার বিষয়ই নয়; এটি মানবাধিকার, নৈতিকতা ও জবাবদিহিরও প্রশ্ন। বিচারকদের ন্যায়বিচারের প্রতিটি সিদ্ধান্ত মানবতার পক্ষে একটি অবস্থান।
বিচারক কেবল আইনের ব্যাখ্যাকারী নন, তিনি সমাজের বিবেক। মানবতা ছাড়া ন্যায়বিচার কেবলই একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু সহমর্মিতার সঙ্গে ন্যায়বিচারই প্রকৃত নিরাময়লিয়াকত আলী মোল্লা, সচিব, আইন ও বিচার বিভাগগুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বলেন, গুম প্রতিরোধে দেশের বিচারব্যবস্থা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা জোরদারে কাজ করছে কমিশন। এই লক্ষ্যে বিচারকদের জন্য ধারাবাহিক কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিচারকদের দায়িত্ব শুধুই বিচারকার্য সম্পাদন নয়; একই সঙ্গে তাঁরা মানবাধিকারের রক্ষক ও মানবাধিকারকর্মীও।
অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, বিচারক কেবল আইনের ব্যাখ্যাকারী নন, তিনি সমাজের বিবেক। মানবতা ছাড়া ন্যায়বিচার কেবলই একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু সহমর্মিতার সঙ্গে ন্যায়বিচারই প্রকৃত নিরাময়।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো.
কমিশনের আরেক সদস্য মো. নূর খান লিটন তাঁর বক্তব্যে গুম প্রতিরোধে বিচারকদের দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরেন। এ বিষয়ে বিচারকদের সাহসী ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন কর্মশালার ওয়ার্কিং সেশন পরিচালনা করেন। এ সময় অংশগ্রহণকারী বিচারকেরা গুম-সংক্রান্ত মামলায় প্রমাণ সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ, মানবাধিকার মানদণ্ডের প্রয়োগ ও বিচারপ্রক্রিয়ার জবাবদিহি নিশ্চিতের বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশে গুমের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু গুরুত্বপূর্ণ, নির্বিচারে আটকদের মুক্তি জরুরি১৫ অক্টোবর ২০২৫আলোচনায় উঠে আসে গুম প্রতিরোধে স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠনের। বিচার বিভাগের আওতায় আলাদা তদন্ত সংস্থা গঠন, গুম–সংক্রান্ত মামলাগুলোর জটিলতা নিরসনে স্থায়ী মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাবও এসেছে। পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং কমিশন ও বিচার বিভাগের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের কাঠামো উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশও আলোচনায় এসেছে।
দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কাজে নিয়োজিত বিচারক ও কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ ৯০ জন প্রশিক্ষণার্থী এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুনগুমের ঘটনায় অভিযোগ দাখিল ন্যায়বিচারের পথে অগ্রগতি১০ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মইন ল ইসল ম ম নব ধ ক র ব চ রকদ র প রক র য় ব চ রপত ব চ রক তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে দেখতে ইংল্যান্ডের ডা. রিচার্ড বিলি হাসপাতালে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সহায়তায় যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিলি ঢাকায় এসেছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
আরো পড়ুন:
হৃদরোগ চিকিৎসায় নতুন সক্ষমতা, বিদেশ নির্ভরতা কমবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইলেন ডিপজল
ঢাকায় এসেই ডা. রিচার্ড বিলি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। এ হাসপাতালেরই করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
শায়রুল কবির জানিয়েছেন, বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের অংশগ্রহণে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নতুন দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় মেডিকেল রিপোর্ট ও সাম্প্রতিক পরীক্ষার রিপোর্টগুলো নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য বিএনপির সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। তবে, বর্তমান অবস্থা ও মেডিকেল বোর্ডের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। যুক্তরাজ্য থেকে তাকে (খালেদা জিয়া) দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসবেন।
ডা. জাহিদ হোসেন আরো জানান, যুক্তরাজ্যের চিকিৎসক দেখার পর যদি মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখন খালেদা জিয়াকে যথাযথভাবে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। গত রবিবার ভোরের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও, তার উন্নত ও সার্বিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ও চলমান মেডিকেল ব্যবস্থাপনার আরও গভীর মূল্যায়নের জন্য হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড অতিরিক্ত বিশেষজ্ঞ মতামতের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই যুক্তরাজ্য ও চীন থেকে দুটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/রফিক