এনসিপিকে ‘শাপলা’ প্রতীক দিতে আইনি বাধা নেই: সারজিস
Published: 19th, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করুক, কোন আইনের ভিত্তিতে শাপলা প্রতীক কোনো রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে এনসিপিকে বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। আইনজ্ঞ, বিশ্লেষক ও আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে একাধিকবার পরামর্শ করার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি, আইনগতভাবে এনসিপিকে ‘শাপলা’ প্রতীক প্রদানে বাধা নেই।’’
রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এনসিপির জেলা সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
রাকসুতে পরাজিতদের মিলনমেলা, সম্প্রীতির ক্যাম্পাস গড়ার প্রত্যয়
রাকসু: হল সংসদে শিবিরের আধিপত্য, ছাত্রদলের শূন্য
সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা যখন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিলাম, তখনই ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়েছিলাম। কিন্তু গত কয়েক মাসে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রকাশিত প্রতীকের তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করেনি। এর পেছনে নিশ্চয়ই কমিশনের নিজস্ব গাফিলতি, অবহেলা বা খামখেয়ালিপনা রয়েছে। আবার এটি কোনো প্রভাব বা চাপের ফলেও হতে পারে, যার কারণে তারা প্রয়োজনীয় সাহস দেখাতে পারেননি।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘যে নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দলকে তার ন্যায্য প্রতীক দিতে সাহস পায় না, সেই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তবুও আমরা আশাবাদী, আমরা ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়েই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। যদি আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়, আমরা সেই অন্যায়ের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।”
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে সারজিস আলম বলেন, ‘‘অভ্যুত্থানের আগে দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই রাস্তায় নেমে কর্মসূচি দিত, কিন্তু জনগণ সাড়া দিত না। অথচ যখন জনগণ নিজেরাই রাস্তায় নেমেছে, তখনই পরিবর্তনের ধারা শুরু হয়েছে। এখন যদি জনগণের সেই প্রত্যাশার প্রতিদান কেউ না দেয়, ভবিষ্যতে নাগরিকরা তার যথাযথ প্রতিফলন দেখাবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক ফয়সাল করিম সোয়েব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড.
সভায় দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, ‘‘নাগরিকদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে এনসিপি শাপলা প্রতীকের মাধ্যমেই জনগণের আস্থা অর্জন করবে।’’
ঢাকা/মোসলেম/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
পিআর নিয়ে জামায়াতের আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়: নাহিদ
জামায়াতে ইসলামীর কথিত ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) আন্দোলন’ একটি সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ রোববার এক ফেসবুক পোস্টে নাহিদ একথা বলেছেন। তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া এবং জাতীয় সংলাপকে গণ–অভ্যুত্থানের আলোকে সংবিধান ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রকৃত প্রশ্ন থেকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এটা (পিআর আন্দোলন) তোলা হয়েছে।
সংবিধানের একটি সুরক্ষা হিসেবেই ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি মৌলিক সংস্কারের অন্যতম দাবি ছিল বলে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের মৌলিক সংস্কার এবং বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদের আইনি কাঠামো তৈরি করার জন্য একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু জামায়াত এবং তার সহযোগীরা এটা ছিনতাই করেছে, তারা একে পিআর ইস্যুর মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে এবং এটাকে তাদের ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য দর কষাকষির একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে।’
জামায়াতে ইসলামী জুলাই অভ্যুত্থানের আগে ও পরে কখনোই সংস্কার আলোচনায় যুক্ত হয়নি বলে অভিযোগ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তারা কোনো তাৎপর্যপূর্ণ প্রস্তাব দেয়নি, কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকারও দেখায়নি।’
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের অধীনে সংস্কারের বিষয়ে তারা আকস্মিক যে অনুমোদন দিয়েছে, সেটা সংস্কার আকাঙ্ক্ষার ফল নয়, বরং একটি কৌশলগত অনুপ্রবেশ। সংস্কারবাদের ছদ্মবেশে একটি রাজনৈতিক নাশকতা।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের জনগণ এই প্রতারণা স্পষ্টভাবে বুঝে গেছে। তারা সত্যের পক্ষে জেগে উঠেছে এবং আর ভুয়া সংস্কারবাদী বা ছলনাকারীদের দ্বারা প্রতারিত হবে না।’
আল্লাহ ও এদেশের স্বার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী জনগণ আর কখনোই অসৎ, সুযোগসন্ধানী এবং নৈতিকভাবে দেউলিয়া শক্তিকে তাদের শাসন করার সুযোগ দেবে না বলেও মন্তব্য করেছেন নাহিদ ইসলাম।