কন্নড় ভাষার আলোচিত সিনেমা ‘কানতারা’। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ঋষভ শেঠি পরিচালিত এই সিনেমা। মুক্তির পর বক্স অফিস দাপিয়ে বেড়ায় এটি। ১৬ কোটি রুপি বাজেটের সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী আয় করে ৪০০ কোটি রুপির বেশি।   

শুধু বক্স অফিস নয়, ‘কানতারা’ সিনেমা দর্শকদেরও প্রশংসা কুড়ায়। নির্মিত হয়েছে সিনেমাটির প্রিকুয়েল। ‘কানতারা’ সিনেমার এই প্রিকুয়েলের নাম রাখা হয়েছে ‘কানতারা লিজেন্ড: চ্যাপ্টার ওয়ান’। হোম্বেল ফিল্মস প্রযোজিত সিনেমাটিতে ঋষভ শেঠির ফার্স্ট লুক দারুণ সাড়া ফেলেছিল। তারপর নানা কারণে আলোচনায় উঠে এসেছে। গত ২ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে এটি। মুক্তির পর থেকে দর্শক-সমালোচকদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়াচ্ছে। বক্স অফিসও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিনেমাটি। যদিও তুলনামূলক আয় কমেছে।       

আরো পড়ুন:

সমালোচনা ভুলে ৩৮ বছরের ছোট নায়িকার সঙ্গে চিরঞ্জীবীর রোমান্স

কানতারা টু: ‘রাজকন্যা কঙ্কাবতী’ রুক্মিণীকে কতটা জানেন?

স্যাকনিল্ক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘কানতারা টু’ ১৭ দিনে ভারতে আয় করেছে ৫৮৯.

৫ কোটি রুপি (গ্রস)। বিদেশে আয় করেছে ১০৪.৫ কোটি রুপি। বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির আয় দাঁড়িয়েছে ৬৯৪ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা)।     

বলি মুভি রিভিউজের তথ্য অনুসারে, মুক্তির প্রথম দিনে ‘কানতারা টু’ আয় করে ৮৭.৯ কোটি রুপি, দ্বিতীয় দিনে আয় করে ৬১ কোটি রুপি, তৃতীয় দিনে আয় করে ৮১ কোটি রুপি, চতুর্থ দিনে আয় করে ৯০ কোটি রুপি, পঞ্চম দিনে আয় করে ৪০ কোটি রুপি, ৬ষ্ঠ দিনে আয় করে ৪৫ কোটি রুপি, সপ্তম দিনে আয় করে ৩০ কোটি রুপি, অষ্টম দিনে আয় করেছে ২৫.৯ কোটি রুপি, নবম দিনে আয় করেছে ২৯.০৫ কোটি রুপি, দশম দিনে আয় করেছে ৫৩.৫ কোটি রুপি। 

এগারো দিনে আয় করে ৫৫ কোটি রুপি, বারো দিনে আয় করে ১৯ কোটি রুপি, তেরো দিনে আয় করে ২০ কোটি রুপি, চৌদ্দ দিনে আয় করে ১৬ কোটি রুপি, পনেরো দিনে আয় করে ১২ কোটি রুপি, ষোল দিনে আয় করে ১১.২ কোটি রুপি, সতেরো দিনে আয় করে ১৪.৫ কোটি রুপি। যার মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৭০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৭২ কোটি ১২ লাখ টাকা)। 

‘কানতারা টু’ মুক্তির আগেই মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেছে। একটি সূত্র পিঙ্কভিলাকে বলেন, “অ্যামাজন প্রাইম ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’-এর পোস্ট-থিয়েট্রিক্যাল স্ট্রিমিং রাইটস ১২৫ কোটি রুপিতে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বেশি) কিনে নিয়েছে। এটি কন্নড় সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ চুক্তি, ‘কেজিএফ টু’-এর পরের অবস্থানে রয়েছে এটি। এই প্ল্যাটফর্মটি সব ভাষার স্ট্রিমিং রাইটস কিনেছে।”   

‘কানতারা’ শব্দের অর্থ গহিন জঙ্গল। স্থানীয় গ্রামবাসীর দেবতা ‘ভূতা’-কে কেন্দ্র করে নির্মিত হয় সিনেমাটির কাহিনি। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সময় ধরে প্রথম পার্টে তা দেখিয়েছেন পরিচালক। পরিচালনার পাশাপাশি ‘কানতারা’ সিনেমার চিত্রনাট্য রচনা ও অভিনয়ও করেন ঋষভ শেঠি। ‘কানতারা টু’ সিনেমার চিত্রনাট্য রচনা, পরিচালনা এবং অভিনয়ও করছেন ঋষভ।

‘কানতারা’ প্রথমে কন্নড় ভাষায় নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে আরো ছয়টি ভাষায় ডাব করে প্রদর্শিত হয়। তখন শুধু নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ১৬ কোটি রুপি; সব মিলিয়ে বাজেটের অঙ্ক গিয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৩৫ কোটি। প্রিকুয়েলটি নির্মাণে এর দ্বিগুণ খরচ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বলি মুভি রিভিউজ জানিয়েছে, সিনেমাটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২৫ কোটি রুপি।  

‘কানতারা: চ্যাপ্টার ১’ বা ‘কানতারা টু’ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন—জয়রাম, রাকেশ পূজারি, রুক্মিণী, গুলশান প্রমুখ।  

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক নত র পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে হামলার ছক, দুই বাংলাদেশিসহ ৫ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদ

বাংলাদেশভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) পাঁচজন সদস্যকে ভারতজুড়ে বোমা বিস্ফোরণ ও অন্যান্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে কলকাতার একটি আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। খবর ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেসর।

তিনজন দোষী সাব্যস্ত পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামের বাসিন্দা হলেও, দুজন বাংলাদেশি নাগরিক। তারা হলেন- বাংলাদেশের জামালপুরের আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে এনাম (৩৮) এবং মোহাম্মদ রুবেল ওরফে রফিক (২৬); বর্ধমানের মাওলানা ইউসুফ শেখ ওরফে শেখ ইউসুফ ওরফে আবু বক্কর ওরফে সুলেমান শেখ (৩১), আসামের বোরবেতার মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম ওরফে সামিম ওরফে আসরাফুল আলম ওরফে নির্মল ওরফে সূর্য সামিম (২২) এবং জাবিরুল ইসলাম (৩০)।

আরো পড়ুন:

বিজয়ের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে যা বললেন রাশমিকা

পুতিন দিল্লি পৌঁছানোর আগেই ভারত-রাশিয়ার সামরিক চুক্তি অনুমোদন

২০১৪ সালের খাগড়াগড় (বর্ধমান) বোমা বিস্ফোরণ মামলায়ও মোহাম্মদ রুবেল এবং জাবিরুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

২০১৬ সালে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) গ্রেপ্তার করেছিল এই জঙ্গিদের। মামলা চলাকালীন আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে নেয় অভিযুক্তরা।  ৯ বছর ধরে চলা মামলায় বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এই রায় দেওয়া হয়। কলকাতার সিটি সেশনস কোর্টের এনডিপিএস কোর্টের বিশেষ বিচারক রোহান সিনহা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।

১২১এ ধারা (ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, চেষ্টা, অথবা যুদ্ধে প্ররোচনা দিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র) এর অধীনে দণ্ডনীয় অপরাধের জন্য মাওলানা ইউসুফকে অতিরিক্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশি আইনের ১৪ ধারার অধীনেও দণ্ডিত করা হয়েছে।

তদন্তের সাথে জড়িত একজন কর্মকর্তা বলেন, “গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে, সন্ত্রাসী মডিউল সদস্যরা তাদের ভারতীয় সহযোগীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল।”

তিনি আরো বলেন, “তাদের উদ্দেশ্য ছিল উত্তর-পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যগুলোর কিছু অংশ এবং দেশের অন্যান্য অংশে বোমা বিস্ফোরণের মতো ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালানো।” 

তিনি আরো বলেন, “এই গোষ্ঠীর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে ইসলামি আইন (শরিয়া) বাস্তবায়ন, বৃহত্তর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং রোহিঙ্গা ও কাশ্মীরি জনগণের ওপর নির্যাতনের প্রতিশোধ নেওয়া। এই দলটি তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ভারতকে একটি বড় বাধা বলে মনে করে।”

এই পাঁচজনকে এসটিএফ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বনগাঁও, বসিরহাট, কোচবিহার এবং আসাম থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক, আইইডি উপাদান, ভারতে বিস্ফোরণের পরিকল্পনার বিবরণী, সাংগঠনিক বই, নগদ অর্থ, একটি ল্যাপটপ এবং একটি এসডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছিল।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রথমে এসটিএফ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল কিন্তু খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ মামলায় জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) তাদের হেফাজতেও নিয়েছিল। অভিযুক্ত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই সব সাক্ষ্য ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে ওই পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেন আদালত।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ