Prothomalo:
2025-12-08@13:59:29 GMT

প্লুটো কেন গ্রহ নয়

Published: 22nd, October 2025 GMT

একসময় আমাদের সৌরজগতের নবম গ্রহ হিসেবে পরিচিত ছিল প্লুটো। ১৯৩০ সালে আবিষ্কারের পর দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে প্লুটোই ছিল সৌরজগতের শেষ সীমানার প্রতীক। ২০০৬ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়, যার কারণে প্লুটো তার গ্রহের মর্যাদা হারায়। সেই সময় বামন গ্রহের শ্রেণিতে প্লুটোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তটি শুধু মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল।

২০০৬ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো গ্রহের আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। সেখানে বলা হয়, গ্রহ হতে হলে অবশ্যই তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। বস্তুটিকে অবশ্যই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে হবে। এ ছাড়া বস্তুটির নিজস্ব মহাকর্ষ বলের কারণে প্রায় গোলাকার আকৃতি থাকতে হবে। প্লুটো সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার পাশাপাশি গোলাকার আকৃতির হওয়ায় দুটি শর্ত পূরণ করলেও শক্তিশালী কক্ষপথ অনুসরণ না করায় তৃতীয় শর্ত পূরণ করতে পারেনি।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, প্লুটো সূর্যের বাইরে কুইপার বেল্ট অঞ্চলে অবস্থিত। এ অঞ্চলটি বরফ ও শিলাযুক্ত ছোট ছোট বস্তু দিয়ে পূর্ণ। প্লুটো তার কক্ষপথের অঞ্চলে মহাকর্ষীয়ভাবে বেশি শক্তিশালী নয়। প্লুটোর নিজস্ব ভর তার কক্ষপথের অন্য সব বস্তুর মোট ভরের তুলনায় অনেক কম। প্লুটোর কক্ষপথ কুইপার বেল্টের অসংখ্য বস্তুর সঙ্গে ভাগ করে। প্লুটো এই অঞ্চলে একচেটিয়া মহাকর্ষীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। তুলনামূলকভাবে পৃথিবীর মতো গ্রহ তাদের কক্ষপথে ৯০ শতাংশের বেশি বস্তুকে আকর্ষণ বা বিতাড়িত করে নিজেদের মহাকর্ষীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। প্লুটো সেই মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে পারেনি।

যেসব বস্তু গ্রহের প্রথম দুটি শর্ত পূরণ করে, কিন্তু তৃতীয় শর্ত অর্থাৎ শক্তিশালী কক্ষপথ অনুসরণ করে না, সেগুলোকেই বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বর্তমানে প্লুটো ছাড়া এরিস, সেরেস, হাউমেয়া ও মেকেমেকে হলো পরিচিত বামন গ্রহ। এই বৈজ্ঞানিক বিভাজন জ্যোতির্বিজ্ঞানকে আরও সুসংহত করেছে ও সৌরজগতের কাঠামোগত বোঝাপড়াকে শক্তিশালী করেছে। প্লুটো গ্রহের মর্যাদা হারালেও বামন গ্রহ হিসেবে এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র: নাসা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন গ রহ গ রহ র গ রহ হ

এছাড়াও পড়ুন:

বেন্নু গ্রহাণুর নমুনাতে লুকিয়ে আছে জীবনের রহস্য

নাসার ওসিরিস-রেক্স মিশন বেন্নু গ্রহাণুর নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছে। সেই নমুনাতে জীবনের বিল্ডিং ব্লক বা মূল উপাদান শনাক্ত করেছেন জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়োশিহিরো ফুরুকাওয়ার নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বেন্নু গ্রহাণুর নমুনা বিশ্লেষণ করে রাইবোজ ও গ্লুকোজের উপাদানের পাশাপাশি নাইট্রোজেন-সমৃদ্ধ পলিমারের সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়া সুপারনোভা ধূলিকণার উচ্চ ঘনত্বের গঠন পরিবেশ ও আমাদের প্রাথমিক সৌরজগতের বিভিন্ন প্রিসোলার পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে গ্রহাণুটিতে, যা আদিম জীবনের রাসায়নিক উৎস সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিয়েছে।

নাসার ওসিরিস-রেক্স মিশন বেন্নু গ্রহাণুর অক্ষত নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনেছে। সেই নমুনা বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক সৌরজগৎ ও জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দিচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির নমুনা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করতে পেরেছেন। বেন্নু গ্রহাণুর নমুনাতে থাকা আণুবীক্ষণিক কণা আমাদের মহাজাগতিক প্রতিবেশীকে রূপদানকারী প্রক্রিয়া সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র সরবরাহ করছে। এসব উপাদান জীবনের উত্থানে অবদান রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

নেচার জিওসায়েন্সেস ও নেচার অ্যাস্ট্রোনমি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা ফলাফলে বলা হয়েছে, বেন্নু গ্রহাণুর নমুনাতে ডিওক্সিরাইবোজ শনাক্ত করা যায়নি। এটি ইঙ্গিত করে প্রাথমিক সৌরজগতে রাইবোজ আরও বেশি প্রচলিত ছিল, যা আরএনএ ওয়ার্ল্ড ধারণাকে সমর্থন করে। ফলে জীবনের প্রথম অণু তথ্য সংরক্ষণ ও জৈব-রাসায়নিক বিক্রিয়া উভয়ের জন্যই আরএনএর ওপর নির্ভরশীল ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বেন্নু গ্রহাণুর নমুনাতে একটি অস্বাভাবিক আঠার মতো উপাদানও শনাক্ত করা হয়েছে।

মহাকাশের কোনো শিলায় আগে কখনো এ ধরনের উপাদান দেখা যায়নি। বিজ্ঞানীদের ধারণা, জৈবপদার্থটি সম্ভবত বেন্নুর মূল গ্রহাণুর প্রাথমিক উত্তাপের সময় গঠিত হয়েছিল। এই প্রাচীন স্পেস গাম নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন-সমৃদ্ধ পলিমার-সদৃশ যৌগ দিয়ে গঠিত, যা একসময় নরম ও নমনীয় ছিল কিন্তু শত শত কোটি বছর ধরে শক্ত হয়ে গেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেন্নু গ্রহাণুর নমুনাতে লুকিয়ে আছে জীবনের রহস্য