পদোন্নতি সংশ্লিষ্ট কাজে পারিতোষিক পুনর্নির্ধারণ
Published: 28th, October 2025 GMT
সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও দপ্তরে নিয়োগ/পদোন্নতি সংশ্লিষ্ট কাজের সম্মানী/পারিতোষিক পুনর্নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। ২০ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুনর্নির্ধারিত সম্মানী/পারিতোষিকের বিবরণ
১. প্রশ্নপত্র প্রণয়নের জন্য সম্মানী (জনপ্রতি) পুনর্নির্ধারিত হার: ৬,০০০ টাকা।
২.
৩. মৌখিক/ব্যবহারিক পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য পুনর্নির্ধারিত হার: ৬,০০০ টাকা।
৪. উত্তরপত্র পরীক্ষণ:
ক) পূর্ণ উত্তরপত্র (প্রতিটি): ১৩০ টাকা;
খ) পূর্ণ অবজেকটিভ টাইপ উত্তরপত্র (প্রতিটি): ৩৫ টাকা।
৫. লিখিত/ব্যবহারিক/মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন/উত্তরপত্র মূল্যায়নের আপ্যায়ন ব্যয় (জনপ্রতি):
ক) দুপুর/রাতের খাবার (প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে): ৫০০ টাকা;
খ) নাশতা: অপরিবর্তিত।
৬. লিখিত/ব্যবহারিক মৌখিক পরীক্ষা পরিচালনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত কর্মচারীদের সম্মানী প্রতি দিনের জন্য (জনপ্রতি):
ক) ৯ম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব: ১,২০০ টাকা;
খ) ১০মথেকে ১৬তম গ্রেড: ১,০০০ টাকা;
গ) ১৭তম গ্রেড থেকে ২০ম গ্রেড: ৮০০ টাকা।
৭. খাতা পুনর্মূল্যায়ন: ৫০ টাকা।
৮. ভেন্যুর প্রতিষ্ঠানপ্রধান অথবা প্রতিষ্ঠানপ্রধান কর্তৃক মনোনীত সমন্বয়কারীর সম্মানী: ৩,৫০০ টাকা।
৯. লিখিত পরীক্ষাকেন্দ্রের পরিদর্শকের সম্মানী প্রতি দিনের জন্য (জনপ্রতি): ১,৮০০ টাকা।আরও পড়ুনপরিবেশ অধিদপ্তরে রাজস্ব খাতে বড় নিয়োগ, নেবে ১৮৮ জন১ ঘণ্টা আগে
১০. কোডিং ও ডিকোডিং ফি: ৩ টাকা।
১১. লিখিত পরীক্ষার আসনবিন্যাস বাবদ ব্যয় (প্রতি পরীক্ষার্থীর জন্য): ৩ টাকা।
১২. লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র তৈরি (কাগজসহ) (প্রতি পরীক্ষার্থীর জন্য): ৬ টাকা।
১৩. বিবিধ (কাগজ, কলম ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি): ৮,০০০ টাকা।
যা যা শর্ত
ক) প্রশ্নপত্র প্রণয়নের জন্য নির্বাচন কমিটির সদস্য/বিশেষজ্ঞরা একাধিক পদের পরীক্ষা হলেও দৈনিক জনপ্রতি একটির বেশি সম্মানী প্রাপ্য হবেন না;
(খ) একই কার্যদিবসে পদোন্নতি/নির্বাচন কমিটির একাধিক সভার ক্ষেত্রে একটির বেশি সম্মানী প্রাপ্য হবেন না;
(গ) একই কার্যদিবসে লিখিত/মৌখিক/ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হলে একাধিক পদের পরীক্ষা হলেও সর্বোচ্চ দুটি সম্মানী প্রাপ্য হবেন।
বিস্তারিত দেখুন এই ঠিকানায়
আরও পড়ুনচাকরির পাশাপাশি যে পাঁচটি কাজ আপনার আয় বাড়াবে২৬ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৪৫ প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করেছে সরকার১৮ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র ক ন র জন য পর ক ষ র ক পর ক ষ ০০০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৭ সালে কি নতুন শিক্ষাক্রম পাওয়া যাবে
২০২২ সালে সর্বশেষ যে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণীত হয়েছিল, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পরে তা বাতিল করা হয়। কারণ, এই শিক্ষাক্রমের ব্যাপারে প্রবল জন–অসন্তোষ ছিল। বিপরীতে ঘোষণা দেওয়া হয়, ২০২৭ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চালু করা হবে। কিন্তু এ জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম পাওয়া আদৌ সম্ভব হবে কি না।
একটি শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করার জন্য কতটুকু সময় লাগতে পারে, সেটি বলা মুশকিল। কারণ, শিক্ষাক্রমের কতটা বদল করা হবে এবং কারা, কীভাবে এই সংস্কারের কাজ করবেন, তার ওপর সময়ের ব্যাপ্তি নির্ভর করে। অন্য দেশের শিক্ষাক্রম গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে; কারণ তখন এর ভালো-মন্দ পাইলটিং করে যাচাই করার দরকার হয়। শিক্ষাক্রম প্রণয়ন বা সংস্কারে অর্থের জোগানদাতা অন্য রাষ্ট্র বা বিদেশি সংস্থা হলেও সময় বেশি লাগতে পারে। আবার বিদ্যমান শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে কেবল সংশোধনের কাজ করলে সময় কম লাগে। ২০২৭ সালের শিক্ষাক্রমে বদল কতটুকু, কীভাবে আনা হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি।
শিক্ষাকে যুগোপযোগী রাখার স্বার্থেই শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের বদল আনতে হবে। তবে যেকোনো কিছু নতুন করে প্রতিষ্ঠা করার কাজটি সব সময় সহজ হয় না। বিদ্যমান কাঠামোকে বিবেচনায় নিয়েই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো হবে।২০২২ সালের শিক্ষাক্রম প্রণয়নের জন্য প্রায় চার বছর সময় লেগেছিল। এই শিক্ষাক্রমে পাঠদানের পদ্ধতি, শিখন কার্যক্রম ও মূল্যায়নের প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়। মূলত ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থাকে অনুসরণ করে এই শিক্ষাক্রম প্রণীত হয়েছিল। অতীতের পাঠদানের পদ্ধতিতে শিক্ষকের লেকচার বা বক্তৃতাদানের প্রাধান্য ছিল। সে ক্ষেত্রে শিক্ষাদানের ব্যাপারটি ছিল একমুখী। নতুন পদ্ধতিতে শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিষয় উপস্থাপনের সুযোগ রাখা হয়, যাতে এর মাধ্যমে শিক্ষক তাঁদের জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। শিক্ষকের পড়ানোর কাজটি এর পরে শুরু করার নির্দেশনা ছিল।
মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। গ্রেড ও নম্বরের বদলে যোগ্যতার স্তরভিত্তিক মূল্যায়নব্যবস্থা চালু করা হয়। অভিভাবকদের সবচেয়ে আপত্তি ছিল এখানে। তাঁরা জোর দিয়ে বলেছেন, নম্বর ও গ্রেড না থাকার কারণে বুঝতে পারছেন না শিক্ষার্থীর পড়াশোনার অবস্থা কী। তবে সবচেয়ে বেশি আপত্তি ছিল শিক্ষাক্রমকে অনুসরণ করে রচিত পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন কনটেন্ট বা উপকরণ নিয়ে। যেমন সমাজ বইয়ের ক্ষেত্রে অনেকেই বলেছেন, সেখানে বাংলাদেশের ইতিহাসকে একপেশে করে তুলে ধরা হয়েছে। বিজ্ঞান বইয়ের ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট থেকে হুবহু অনুকরণের অভিযোগ ছিল। এ ছাড়া পাঠ্যবইয়ের বানান ও তথ্যগত প্রচুরসংখ্যক ভুল নিয়েও সমালোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুনশিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই: পরিমার্জন ও সংস্কারের আগে যা বিবেচনায় নিতে হবে১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে পাঠ্যবই প্রণীত হয়। বর্তমানে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত যেসব পাঠ্যবই পড়ানো হয়েছে কিংবা ছাপার কাজ চলছে, সেগুলো মূলত ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে রচিত। পুরোনো বই কিছু সংশোধন করেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই সংশোধন-পরিমার্জনসহ অন্যান্য কাজে এবারও এত বেশি সময় লেগেছে যে আগামী শিক্ষাবছরে যথাসময়ে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হবে কি না, সে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
এখন যদি পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে ২০২৭ সালে নতুন পাঠ্যবই প্রণয়ন করতে হয়, তবে আরও আগে এর রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা হাজির করার দরকার ছিল। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার এ কাজে হাত না দিয়ে নতুন সরকারের ওপর দায়িত্ব বর্তাতে চায়। সে ক্ষেত্রে কয়েক মাসের মধ্যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন এবং সেই ভিত্তিতে পাঠ্যক্রম রচনা ও প্রকাশের উদ্যোগ নিলে লেজেগোবরে অবস্থা হবে। তা ছাড়া এনসিটিবির চেয়ারম্যান ও সদস্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোও ২০২৪-এর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে শূন্য থেকেছে। এর ফলে নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজটিও গতিশীল হয়নি। সুতরাং ভালো পরিবর্তন চাইলে আরেকটু সময় নেওয়া উচিত। আর শিক্ষাক্রমের ব্যাপারটিই এমন, একসঙ্গে সব কটি শ্রেণিতে এর প্রয়োগ করা যায় না—নিচের ক্লাস থেকে ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে হয়।
শিক্ষাকে যুগোপযোগী রাখার স্বার্থেই শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের বদল আনতে হবে। তবে যেকোনো কিছু নতুন করে প্রতিষ্ঠা করার কাজটি সব সময় সহজ হয় না। বিদ্যমান কাঠামোকে বিবেচনায় নিয়েই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো হবে।
তারিক মনজুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক