আলাদা গুম কমিশন হচ্ছে না, এখতিয়ার বাড়ল মানবাধিকার কমিশনের
Published: 30th, October 2025 GMT
মানবাধিকার কমিশনই গুম কমিশনের দায়িত্ব পালন করবে, এমন বিধান রেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ চূড়ান্ত করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকারের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এর ফলে সংবিধানে যে মৌলিক অধিকার আছে এর বাইরেও বাংলাদেশ যেসব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি অনুসমর্থন করেছে বা পক্ষভুক্ত হয়েছে, এমনকি আন্তর্জাতিক আইনে মানবাধিকারের যেসব ধারণা আছে, সেগুলো বলবৎ করার ক্ষেত্রেও মানবাধিকার কমিশন ভূমিকা রাখতে পারবে।
আসিফ নজরুল বলেন, আগে মানবাধিকার কমিশন দুর্বল ছিল; নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি এবং এখতিয়ারে মারাত্মক ঘাটতি ছিল। নতুন অধ্যাদেশের লক্ষ্য হলো কমিশনকে সত্যিকারের ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা, যাতে এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো সম্পর্কে আইন উপদেষ্টা বলেন, একজন চেয়ারম্যান এবং চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য (মোট পাঁচজন) নিয়ে কমিশন গঠিত হবে। চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগের জন্য আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে, যাঁরা সাক্ষাৎকার ও গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকার বা রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনকে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুম প্রতিরোধ এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের মূল দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনকে প্রদানের সুযোগ রাখা হয়েছে। কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পরিবারের বাইরেও নিঃস্বার্থ অঙ্গ দান করা যাবে
সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রচলিত আইনে শুধু পরিবারের সদস্যরা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করতে পারবেন বলে বিধান ছিল। এ ক্ষেত্রে রোগীরা বিদেশ গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বাইরেও টাকাপয়সা দিয়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংস্থাপনের চেষ্টা করতেন।
আসিফ নজরুল বলেন, এখন থেকে শুধু পরিবারের সদস্য নয়, যাঁদের সঙ্গে ‘ইমোশনাল অ্যাটাশমেন্ট’ আছে, কেউ যদি অন্য কাউকে নিঃস্বার্থভাবে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করতে চান, সেটা আইনের মধ্য থেকে করার সুযোগ পাবেন।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশ চূড়ান্ত হয়েছে উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, এর গুরুত্ব এবং আবেদন বিবেচনা করে এটাকে সম্পূর্ণ একটা স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এই অধ্যাদেশটা করা হয়েছে। সারা দেশের আয়নাঘরগুলো এই জাদুঘরের অধীনে থাকবে। তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা আইনি সুরক্ষা পাবেন—সৌদি সরকারের সঙ্গে এমন চুক্তি হয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশ চূড়ান্ত হয়েছে উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, এর গুরুত্ব এবং আবেদন বিবেচনা করে এটাকে সম্পূর্ণ একটা স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এই অধ্যাদেশটা করা হয়েছে। সারা দেশের আয়নাঘরগুলো এই জাদুঘরের অধীনে থাকবে।সংবাদ সম্মেলনে মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এই আইনের অপব্যবহার ঠেকাতে নিবেদিত একটি কমিটি থাকবে, যাতে গরিব মানুষের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অঙ্গ কেনাবেচা রোধ করা যায়।
এ সময় শফিকুল আলম জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় বন নীতি, ২০২৫–সহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুরুতর আহতদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ব্যয়ের প্রকল্পপদ্ধতির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, আহত ৬৫ জন এখনো বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং একজনের পেছনে সর্বোচ্চ ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তাঁরা যত দিন বাইরে থাকবেন, সরকার এই ব্যয় বহন করবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, রায়েরবাজার শহীদ কবরস্থানে জুলাই শহীদদের অজ্ঞাত লাশ শনাক্তে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় একটি ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট পর ব র র জ দ ঘর সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
এই তিন কন্যার একজন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা, স্বামীও নায়ক
ছবির সেই ছোট্ট মেয়ে, যাঁর চোখে একদিন স্বপ্ন দেখার আগ্রহ ছিল, বড় হয়ে ঢালিউড মাতিয়েছেন। হয়েছেন আলোচিত নায়িকা, যাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে ভক্তরা চোখ রাখতেন। ১৯৯১ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ ছবিতে তাঁর অভিষেক। সেই সময়েই তিনি রীতিমতো সাড়া ফেলেছিলেন। তবে আজ আর চলচ্চিত্রের পর্দায় নেই তিনি। স্বামী, সন্তান আর সংসারেই ব্যস্ত জীবন কাটাচ্ছেন ঢাকার উত্তরায়। নাটক ও চলচ্চিত্র—দুটি মাধ্যমেই একসময় মাতিয়েছিলেন। এখন অবশ্য আড়ালে থাকেন, মাঝেমধ্যে হঠাৎ দেখা মেলে চলচ্চিত্র বা নাটকসংশ্লিষ্ট কিছু ঘরোয়া আয়োজনে।
গতকাল বুধবার ছিল এই নায়িকার জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে অভিনয়শিল্পী ছোট বোন তাঁর ছোটবেলার কিছু স্থিরচিত্র শেয়ার করেছেন। ছবি দুটি দেখেই অনেকে চমকে গেছেন। শুরুতে কেউই চিনতে পারেননি। কেউ বলছেন, হাসির কারণে চিনেছেন। কেউ আবার ফেসবুকে ট্যাগ করায় সহজে বুঝতে পেরেছেন—না হলে হয়তো এত সহজে চেনা যেত না।
ছোটবেলার ছবির এই মেয়ে আর কেউ নন, ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনাজ। চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় ওই সময়ের অন্য একজন জনপ্রিয় নায়ক নাঈমের। ধীরে ধীরে প্রেমে গড়া বন্ধন একদিন বিবাহে রূপ নেয়। আজ ২৯ অক্টোবর, সেই তারকার জন্মদিন—যে জন্মদিনে অতীতের শিশুসুলভ হাসি আর আজকের পরিণত নায়িকার গল্প একসঙ্গে মিলেছে।
ছবির এই ছোট্ট মেয়ে ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা