রাজধানীর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে বাড়তে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। টমেটো, গাজর, শিম, কাঁচা মরিচসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে হু হু করে। 

পাশাপাশি মাছ ও ডিমের দামেও দেখা দিয়েছে উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বগতি। এতে করে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষ।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির সরবরাহ শুরু হলেও দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে কিছু পণ্যের। 

যাত্রাবাড়ী বাজারে কেনাকাটা করতে আসা রাহিস নামের এক ক্রেতা বলেন, “শীতের সবজি বাজারে এসেছে, ভাবছিলাম দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবতা উল্টো। গাজর আর শিম কিনতে গিয়ে মনে হলো যেন মাংস কিনছি।”

যাত্রাবাড়ী বাজারের সবজি বিক্রেতা কলিমুল্লার দাবি, টানা বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম, ফলে পাইকারি পর্যায়েই দামে আগুন। বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা এবং আলু ২৫ টাকা। 

শনিরআখড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, “যেভাবে কিনছি, সেভাবে বিক্রি করতে গেলে লোকসান হচ্ছে। আমরাও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছি বাধ্য হয়ে।”

অন্যদিকে, মাছের বাজারেও ক্রেতাদের হাঁসফাঁস অবস্থা। সাময়িকভাবে ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকায় দেশি চাষের মাছের প্রতি চাহিদা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দামেও। বোয়াল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, কোরাল ৮৫০–৯০০ টাকা, রুই ৩০০–৪৫০ টাকা এবং ট্যাংরা ৬০০ টাকা। 

শনিরআখড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা শফিকুল বলেন, “ইলিশ না থাকায় এখন সবাই দেশি মাছ নিচ্ছে। চাহিদা বাড়লে দাম তো বাড়বেই।”

লাল ডিম ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, সাদা ডিম ১৩০ টাকায়। যদিও সরকার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করেছে, বাজারে এখনো অনেক দোকানে পুরোনো দরে তেল বিক্রি হচ্ছে। এক লিটারের বোতল ১৮৯ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৯২২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে অনেক দোকানে।

মুরগির দামে বড় কোনো পরিবর্তন না থাকলেও, অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই স্থিতিশীলতাও ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির কারণ হচ্ছে না। ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০–৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০–৬০০ টাকায়।

একাধিক বিক্রেতা জানিয়েছেন, পরিবহন ব্যয় ও সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম বাড়ছে। তবে পরের সপ্তাহে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/এএএম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সবজ

এছাড়াও পড়ুন:

এসব খাবার আপনাকে সারা দিন চনমনে রাখবে

কাজের চাপে ক্লান্ত লাগলে বা দুপুরের পর অফিসে ঘুম পেলে অনেকেই কফি বা মিষ্টি কিছু খেয়ে ক্লান্তি কাটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো আপনাকে সারা দিন চনমনে রাখতে পারে, আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো উল্টো আপনাকে দুর্বল করে দেয়!

সকালের নাশতা বাদ দেওয়া আমাদের অন্যতম বড় ভুল। এতে ক্লান্তি ও মানসিক চাপ তুলনামূলক বেশি হয়। তাই সকাল শুরু হোক এমন খাবার দিয়ে, যা ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করবে; যেমন ওটস, চিড়া, ডিম ও পূর্ণ শস্যের টোস্ট, দুধ বা দইয়ের সঙ্গে ফল ও বাদাম—এই খাবারগুলো শরীরে শর্করা, প্রোটিন ও ফাইবার সরবরাহ করে, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় সতেজ রাখবে।

সারা দিন শক্তি ধরে রাখার কৌশল

বাদাম, বীজ আর শস্যজাতীয় খাবার শক্তির অন্যতম বড় উৎস। এগুলোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন ও ভিটামিন—যা রক্তে চিনির মাত্রা স্থির রাখে এবং হঠাৎ এনার্জি ড্রপ থেকে বাঁচায়। একমুঠো কাজু, আখরোট বা সূর্যমুখীর বীজের মতো স্ন্যাক হতে পারে আপনার দুপুরের ‘এনার্জি ব্রেক’।

প্রোটিন: ঠিকভাবে দেহের প্রতিটি কোষের কাজ চালাতে প্রোটিন অপরিহার্য। মাছ, মুরগি, ডিম, ডাল ও ছোলা হলো এমন কিছু প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যা দ্রুত ক্লান্তি দূর করে। বিশেষ করে মাছ (যেমন ইলিশ, রুই, টুনা) শুধু প্রোটিন নয়, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও দেয়, যা মস্তিষ্ককেও সক্রিয় রাখে।

জটিল শর্করা: সাদা চাল বা পরিশোধিত ময়দা শরীরে দ্রুত শক্তি দেয়, কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়েও যায়। এর পরিবর্তে বেছে নিন লাল চাল, ব্রাউন রাইস, গমের রুটি বা ওটস—এগুলো ‘কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট’, যা ধীরে হজম হয় এবং সারা দিন স্থিতিশীল এনার্জি দেয়।

শাকসবজি ও ফল: নিয়মিত রঙিন শাকসবজি ও ফল খান। আপেল, কলা, কমলা, পালংশাক, ব্রকলি, গাজর—এগুলোর ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরকে চাঙা রাখে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।

আরও পড়ুনকৈশোরে সঠিক পুষ্টি না পেলে যা হয়, যেসব খাবার খেতে হবে১৬ নভেম্বর ২০২৫যেগুলো এড়িয়ে চলা ভালো

অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টিজাত খাবার দ্রুত শক্তির জোগান দিলেও খুব দ্রুতই ক্লান্ত করে ফেলে।

অতিরিক্ত ক্যাফেইন সাময়িকভাবে মনোযোগ বাড়ায়, কিন্তু ঘুমের ছন্দ নষ্ট করে দেয়।

অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত বা ভারী খাবার। এগুলো হজমে সময় নেয়, ফলে ঘুম ঘুম লাগে।

ছোট ছোট টিপস

পানিশূন্যতা ক্লান্তি ডেকে আনে, নিয়মিত পানি পান করুন।

দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকবেন না।

পর্যাপ্ত ঘুম ও হালকা ব্যায়াম প্রাকৃতিকভাবে আপনার শক্তি বাড়াবে।

শক্তি ধরে রাখার কোনো ‘জাদুকরি খাবার’ নেই, তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাসই পারে আপনাকে সারা দিন প্রাণবন্ত রাখতে। তাই পরেরবার শক্তি কমে গেলে চিনি বা সফট ড্রিংকের দিকে না ছুটে, বেছে নিন প্রকৃতির দেওয়া সঠিক খাবারগুলো।

আরও পড়ুনএকবারে কতটা বাদাম খাওয়া নিরাপদ২১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্র সংসদ নির্বাচন হঠাৎ স্থগিত, উপাচার্যের দপ্তরের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান  
  • সরকার কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের অধিকারের তোয়াক্কা করছে না: জোনায়েদ সাকি
  • মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প
  • এবার পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানিতে ডিজেল ‘গায়েব’, দেড় লাখ লিটার গেল কোথায়
  • পোশাক, ইস্পাত, সারসহ শিল্প খাতে উৎপাদন ৩০–৫০% কমেছে: ঢাকা চেম্বার সভাপতি
  • এসব খাবার আপনাকে সারা দিন চনমনে রাখবে