ঢাকা কলেজ চত্বরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে শিক্ষার্থীরা ভর্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র পূরণ করছিলেন। তাঁদের কেউ এসেছেন অভিভাবক নিয়ে, কেউ আবার একাই। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা কলেজে দেখা মিলল এমন দৃশ্যের। ঢাকার সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির’ অধীনে চলমান ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তির অংশ হিসেবে এখানে ভর্তি কার্যক্রম চলছে।

কিন্তু সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা যখন ভর্তির কাজ করছেন, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় পাঁচ মাস ক্লাস করে ফেলেছেন। এমনকি আসন্ন ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির আবেদনও ১৯ নভেম্বর শেষ হয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে ২৮ নভেম্বর, আর পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে ২০ ডিসেম্বর। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থাও প্রায় একই।

অথচ ঢাকার সরকারি সাত কলেজে ভর্তির কাজ শেষ করে এখনো ক্লাস শুরু হয়নি। আজ রোববার ক্লাস শুরুর সম্ভাব্য একটি তারিখ ছিল। কিন্তু নতুন করে ভর্তিসংক্রান্ত কার্যক্রমের সময় ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এখন ক্লাস শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ৩০ নভেম্বর।

ঢাকা কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদান আইনসিদ্ধ নয়। ‘কাঠামো কী হবে, আমরা কোন অবস্থানে থাকব—এগুলো এখনো পরিষ্কার নয়। তাই এসব নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত প্রথম বর্ষে ক্লাস নেওয়ার পক্ষে নই,’ বলেন তিনি। 

এ রকম পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীরা পড়েছেন তীব্র সেশনজটে। তাঁরা জানিয়েছেন, দ্রুত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে অধ্যাদেশ প্রকাশ ও ক্লাস শুরু না হলে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

এ পরিস্থিতির সমাধান সহজ—কর্তৃপক্ষ যদি শিক্ষক ও অধিকাংশ শিক্ষার্থীর প্রত্যাশিত মডেলে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে। এ কে এম ইলিয়াস, অধ্যক্ষ, ঢাকা কলেজ ও অন্তর্বর্তী প্রশাসক, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিসংকট ও শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা

আগে থেকেই ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজে সংকট বিরাজ করছে। ২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই এগুলোকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। সরকারি এই কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এর মধ্যে ইডেন ও তিতুমীরে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়; বাকি পাঁচটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর—তিন স্তরেই পাঠদান হয়। এগুলোতে শিক্ষার্থী দেড় লাখের মতো। চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিযোগ্য আসন ১১ হাজারের মতো। ৭ কলেজে মোট শিক্ষক হাজারের বেশি।

আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ২১ অক্টোবর ২০২৪ তোলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ বর ষ স ত কল জ ভর ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ‘চীনা গুপ্তচর’ মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত ফিলিপাইনের সাবেক মেয়র অ্যালিস গুও-কে একটি জালিয়াতি কেন্দ্র পরিচালনার ভূমিকার জন্য মানব পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর), তাকে এবং আরো তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২ মিলিয়ন পেসো (৩৩ হাজার ৮৩২ ডলার ) জরিমানা করা হয়েছে। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

চীন-জাপান উত্তেজনা: জাপানগামী প্রায় ৫ লাখ ফ্লাইট টিকিট বাতিল

চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাচ্ছে জাপান

কর্তৃপক্ষ মেয়র অ্যালিসের ছোট শহর বাম্বানে দেশের বৃহত্তম জালিয়াতি কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি উদঘাটন করার পর অ্যালিস গুওর মামলাটি বছরের পর বছর ধরে ফিলিপাইনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। অভিযানের পর প্রায় ৮০০ ফিলিপিনো এবং বিদেশিকে জালিয়াতির কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর গুওর বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনোর আড়ালে জালিয়াতি কেন্দ্র এবং মানব পাচার সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। 

ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ গত জুলাই মাসে অ্যালিস গুওর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। ৩৫ বছর বয়সী এই নারী এরপর কয়েক সপ্তাহ পলাতক থাকার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি আপিল করতে পারবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

গুওর বিরুদ্ধে এখনও পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে একটিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

২০২২ সালে, গুও রাজধানী ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত বাম্বানের মেয়র নির্বাচিত হন। বাম্বানের বাসিন্দারা আগে বিবিসিকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন যত্নশীল ও সহানুভূতিশীল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

কিন্তু ২০২৪ সালে, কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি বড় জালিয়াতি কেন্দ্র উদঘাটন করার পর নীরব শহরটি জাতীয় আলোচনায় আসে। গুও প্রথমে ওই জায়গা সম্পর্কে তার সমস্ত জ্ঞান অস্বীকার করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে সিনেটের তদন্তে তার অফিসের কাছে অবস্থিত আট হেক্টর কেন্দ্রটি সনাক্ত করতে তার অক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পরে জানা যায় যে কম্পাউন্ড- যার মধ্যে ৩৬টি ভবন ছিল- গুওর পূর্বে মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত হয়েছিল।

কর্তৃপক্ষ গুওর জীবন কাহিনীতেও অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। গুও দাবি করেছিলেন, তিনি ফিলিপাইনে জন্মগ্রহণ করেননি, বরং কিশোর বয়সে তার পরিবারের সাথে চীন থেকে চলে এসেছিলেন। পরে তদন্তকারী সংসদ সদস্যরা দেখতে পান যে, তার আঙুলের ছাপ হুয়া পিং নামে একজন চীনা নাগরিকের সাথে মিলে যায়।

তাকে দ্রুতই মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। মামলার আরো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের সাথে সাথে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি নিখোঁজ হন, যার ফলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য চারটি দেশে আন্তর্জাতিক অভিযান শুরু হয়।

একই বছরের সেপ্টেম্বরে, তাকে ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং ফিলিপাইনে প্রত্যর্পণ করা হয়। তার ফিলিপাইনের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়।

দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে ফিলিপাইন ও চীনের বিবাদ অব্যাহত থাকায় গুওর মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফিলিপাইনে মামলাটি ব্যাপক আলোচিত হলেও, অ্যালিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে চীন এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। 

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিটি ব্যাংকের মাসরুর আরেফিন পেলেন ‘সিইও অব দ্য ইয়ার ২০২৫’ পুরস্কার
  • ভূমিকম্পে ধামরাইয়ে হেলে পড়া সেই ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে
  • শিক্ষকেরা চ্যাটজিপিটি থেকে কপি-পেস্ট করেন
  • মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার সাজা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে পরীক্ষায় ফেলেছে
  • জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক
  • চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ফিলিপাইনে সাবেক মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • ফিলিপাইনে ‘চীনা গুপ্তচর’ মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড