জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে আলোচিত এক নাম অনিক কুমার দাস। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ মাস জীবন-মৃত্যুর লড়াই পেরিয়ে ওঠা এই শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে।

অনিক ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখসারির কর্মী। ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম কোর্টের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার খাদ্যনালী ভেদ করে শরীরের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেলে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়।

আরো পড়ুন:

তারেক রহমানের জন্মদিনে ছাত্রদলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

কিন্তু ৩১ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হলে অবস্থার আরো অবনতি হয়। ১১ আগস্ট ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে অনিক বলেন, “আন্দোলনের প্রথমদিন থেকেই উন্মুক্ত লাইব্রেরি থেকে আমরা কার্যক্রম শুরু করি। পরে ১১ জুলাই সিনিয়রদের সরে যাওয়ার ঘোষণার পর আমরা কয়েকজন নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে শাহবাগে পৌঁছাই। ১৪ ও ১৫ জুলাই পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে টিএসসিতে অবস্থান নিই, সেদিন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলারও শিকার হই।”

তিনি বলেন, “১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এগোতেই সিএমএম আদালতের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুক দিয়ে হামলা করে। পাল্টা ধাওয়া দিতে গেলে একটি গুলি এসে আমার পেটে লাগে। এরপর টানা ৩ মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছি।”

ছাত্রদলের প্যানেলে যুক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা, জবিকে নিয়ে তাদের ইতিবাচক চিন্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার তাকে অনুপ্রাণিত করেছে।

নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে অনিক বলেন, “এটা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের বিষয়। আমি সবসময় তাদের ন্যায্য দাবির পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, বাকিটা তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।”

বিজয়ী হলে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাই হবে প্রথম দায়িত্ব। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাবো, যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচারী শক্তি শিক্ষাজীবন বিপন্ন করতে না পারে।”

গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

১৯–২০ নভেম্বর ছিল বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৪–২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। 

৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর চলবে প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ২২–২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে ফলাফল।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জকস জকস ছ ত রদল গণঅভ য ত থ ন ছ ত রদল র ড স ম বর সন ত র স প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

৬৭৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের এমডির বিরুদ্ধে মামলা

চোরাচালানের মাধ্যমে সোনা ও হীরা সংগ্রহ করে অর্জিত ৬৭৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার গুলশান থানায় এই মামলা করা হয়েছে বলে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সিআইডি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সিআইডি ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের আর্থিক লেনদেন, নথিপত্র ও ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে সোনা ও হীরা সংগ্রহ করে অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছে। প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণে চোরাচালান ও উৎসহীন অর্থ উপার্জনের সত্যতা পেয়ে মামলা করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দেশে-বিদেশে সোনা ও হীরা ব্যবসা পরিচালনার আড়ালে অর্থ পাচার ও চোরাকারবারি করে আসছিলেন।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের বিষয়ে সিআইডি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে মোট ৩৮৪৭ লাখ টাকার সোনার বার, অলংকার, লুজ ডায়মন্ড ও অন্যান্য দ্রব্য বৈধভাবে আমদানি করে। একই সময়ে স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয়, বিনিময় ও পরিবর্তন পদ্ধতিতে ৬৭৮ কোটি টাকার সোনা ও হীরা সংগ্রহ করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সিআইডিকে এসবের উৎস বা সরবরাহকারী সংক্রান্তে বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়। বৈধ নথি না থাকায় এসব বিপুল পরিমাণ সোনা ও হীরা অবৈধ চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরদিন তাঁকে আদালতে তোলা হয়। এরপর তাঁকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। একই দিন তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর বিভিন্ন হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এসব মামলায় নিম্ন ও উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। সব মামলায় জামিন পাওয়ার পর ১ অক্টোবর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

দিলীপ কুমার আগরওয়ালা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ (আলমডাঙ্গা ও সদরের একাংশ) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ফিলিপাইনে সাবেক মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত, তবে অধ্যাদেশসহ সামগ্রিক প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ
  • ইউনিয়ন ব্যাংকের লোকসান ২৫ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা
  • মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও তাঁর স্ত্রীর ৩৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
  • আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে ঘোষিত রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে: বিএনপি
  • পুলিশ কখন গুলি করতে পারবে, গুলির উদ্দেশ্য কী হবে
  • ৬৭৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের এমডির বিরুদ্ধে মামলা
  • শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের হত্যাযজ্ঞের ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় না: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
  • এ রায়ের উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে: ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ