তার ১০০-২০০ করার অভ্যাস আছে, মুশফিকুরের সেঞ্চুরি নিয়ে মুমিনুল
Published: 19th, November 2025 GMT
বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের ঠিক উপরের গ্যালারি থেকেই ‘সিঙ্গেল-সিঙ্গেল’ চিৎকারটা আসছিল। মিরপুর স্টেডিয়ামে শেষ বিকেলের ঘটনা। মুশফিকুর রহিম ৯৯ রানে অপরাজিত। ১ রান হলেই শততম টেস্টে তার সেঞ্চুরি। এমন মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে কেউ কি অপরাজিত থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরতে চায়?
মুশফিকুরকে অপেক্ষায় থাকতে হলো। সঙ্গে পুরো বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে ৯৯ রানে অপরাজিত মুশফিকুর। সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থেকে তাকে যেতে হয়েছে ড্রেসিংরুমে। অথচ সমর্থকরা খুব করে চেয়েছিল আজকেই সেঞ্চুরিটা হয়ে যাক।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পন্টিং বললেন, ‘অবিশ্বাস্য অর্জন’
শততম টেস্টের মঞ্চে মুশফিকুরকে সম্মানজনক সংবর্ধনা
মুশফিকুর রহিমও চেয়েছিলেন আরেকটি ওভার খেলতে। কিন্তু সময় শেষের সঙ্গে আলোক স্বল্পতার কারণে আম্পায়াররা নতুন ওভার শুরু করেননি। তার সেঞ্চুরি, হবে কি হবে না তা নিয়ে দোলাচাল ছিল। ড্রেসিংরুমে থাকা মুমিনুল জানালেন, তারাও মনে করেছিলেন আজ সেঞ্চুরিটা হয়ে যাবে।
“শেষের সময়টায় মনে হচ্ছিল, আজ সেঞ্চুরি হয়ে যাবে। যদিও ওরা বোলিং দেরি করছে।এই কারণে হয়তো হয়নি।”
মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে রাতভর অপেক্ষা করার মধুর যন্ত্রণা কঠিনই হওয়ার কথা। মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি থেকে দূরে…কতটা প্রভাব পড়তে পারে মুশফিকের?
মুমিনুল উত্তর দিলেন, “কোনো প্রভাবই পড়বে না। কারণ উনি তো আপনার ১০০ করা, ২০০ করার অভ্যাস আছে। আমি জানি যে, ওই জায়গায় উনি প্যানিক হন না। ওই কারণে আত্মবিশ্বাসটা আছে। কালকে গিয়ে অন্য কেউ থাকলে হয়তো একটু প্যানিক থাকতাম। কালকে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”
দিনের শেষ দিকে বোলিং একেবারেই স্লো করে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। শেষ ৪ ওভার তারা করেছে ২১ মিনিটে। যার কারণে মুশফিকুরকে সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। দিন শেষে মুশফিকুর মুখে হাসি রাখলেও কতটা চনমনে ছিলেন সেই প্রশ্নও উঠেছে।
মুমিনুলের মুখেই শুনুন বাকিটা, “আসলে মুখ দেখে তো মনে হয়েছে উনি কোনেভাবে নার্ভাস ছিল। উনি স্বাভাবিকই ছিল। ১০০ টেস্ট খেলার আগে যেমন ছিলেন এখন তেমনই আছেন। যখন ক্রিজে গিয়েছিলেন তখন তো শূন্য রানেই ছিল। তখন তাকে ধীর ও স্থির দেখেছি। স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলছিল পরিস্থিতি বুঝে। দিন শেষে তো এমনই দেখলাম। পুরো ইনিংসটি ছিল নিয়ন্ত্রিত।”
সাত সকালে নানা আয়োজনে মুশফিকুরকে সম্মানিত করেছে বিসিবি। পরিবারের সামনে, বড় আয়োজনে এমন কিছু করায় বিসিবিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন মুমিনুল। সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে এমন কিছু যুক্ত হওয়াতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তিনি, “এই পরিবেশ তো এর আগে কোন সময় দেখিনি, সত্যি কথা। অবসরের সময়ও দেখিনি। একটা সময় মনে হচ্ছিল যে, অবসরের দিকে যাচ্ছে। পরে দেখলাম যে না, ১০০ টেস্টের দিকে যাচ্ছে। আমার নিজের দেখে অনেক ভালো লাগল। আমার কাছে মনে হয়, এই জিনিসটা এই সংস্কৃতি যদি সবসময় থাকে বাংলাদেশে তাহলে তরুণ যারা আছে তারাও কিন্তু টেস্ট খেলার জন্য অথবা ১০০ টেস্ট খেলার জন্য অনুপ্রাণিত হবে।”
ঢাকা/ইয়াসিন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছবির আবদার, অনুশীলন— শততম টেস্টের আগে আর কী করলেন মুশফিক
ঘড়ির কাঁটায় সকাল সাড়ে নয়টা। রোদ ছড়িয়ে পড়েছে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। পুরো মাঠজুড়েও ম্যাচের আগের দিন সকালের সেই চিরচেনা আবহ। সম্প্রচারক আর মাঠকর্মীদের শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। বাকিরাও নিজেদের কাজ শেষ করার তাড়াহুড়ায়।
শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ডে ক্যামেরার স্ট্যান্ড বসতে শুরু করেছে। ভিডিও ধারনের জন্য খুলছে ক্যামেরার লেন্স। বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরুর আগে এই দৃশ্যও পরিচিত। ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুম থেকে বের হচ্ছেন, গা গরম করবেন।
এর মধ্যেই হুট করে ক্যামেরার ক্লিকের খটখট শব্দ। হুট করেই ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেল আলোকচিত্রীদের। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ছবি তুলছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। আলোকচিত্রীরা ফ্রেমবন্দি করতে চাইছেন সেই মুহূর্তই।
মুশফিক আর নাজমুল একসঙ্গে খেলছেন প্রায় এক দশক। খেলা চলাকালে একই ড্রেসিংরুম এবং মাঠের বাইরে একই হোটেল তাঁদের ঠিকানা। তবুও হঠাৎ নাজমুল কেন মুশফিকের সঙ্গে ছবি তুলে রাখছেন? কারণ, মুশফিকের সামনে একটি বিশেষ উপলক্ষ।
প্রায় ২০ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে বহু পথ পাড়ি দিয়ে মুশফিক দাঁড়িয়ে আছেন শততম টেস্ট খেলার দুয়ারে। আগামীকাল মিরপুরের এই শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নাজমুল টস করে দলের খেলোয়াড় তালিকা জমা দিলেই সেই দুয়ার দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই মাইলফলকে পা রাখবেন মুশফিক।
অনুশীলনে এমন ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন মুশফিক