এবার কান্দিরপাড়ে পাশাপাশি কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি বিএনপির দুই পক্ষের
Published: 20th, November 2025 GMT
কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠে (বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন মাঠ) আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির দুই পক্ষকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। আজ সকাল থেকে ওই স্থান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মাঠের প্রধান ফটকের গেটেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় আজ বিকেলে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় পাশাপাশি স্থানে কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপির ওই দুই পক্ষ।
কুমিল্লা-৬ আসনে (কুমিল্লা আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। তিনি বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে জনসভার ঘোষণা দেন। একই দিন একই মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদের (ইয়াছিন) অনুসারীরা। পাশাপাশি স্থানে দুই পক্ষই মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু করে। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ পরিস্থিতিতে বিএনপির দুই পক্ষকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী মাঠ বরাদ্দের জন্য দুই পক্ষের আবেদনকারী ব্যক্তিদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেন।
প্রশাসন অনুমতি না দিলেও বিএনপির দুই পক্ষ কর্মসূচি পালনে অনড়। আজ সকাল ১০টায় এক পক্ষের অনুসারীদের টাউন হলে কর্মসূচি পালন হওয়ার কথা থাকলেও সেটির সময় ও স্থান পরিবর্তন করে বিকেলে নেওয়া হয়েছে। আজ বিকেলে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় পাশাপাশি স্থানে কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপির দুই পক্ষ।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম (রায়হান) আমিন-উর-রশিদের কর্মসূচির জন্য মাঠ বরাদ্দের আবেদন করেছিলেন। আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠান করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্ততি নিয়েছি; কিন্তু প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমাদের বারবার অনুরোধ করেছে যেন টাউন হল মাঠে কর্মসূচি পালন না করি। এ জন্য আমরা তাঁদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করেছি। আজ বেলা তিনটায় আমরা কান্দিরপাড় ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়কে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে কর্মসূচি পালন করব। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন।’
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা জানান, তাঁরা নির্ধারিত সময়ে জনসভা করবেন। শেষ পর্যন্ত যদি টাউন হল মাঠে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া না হয়, তাহলে পাশেই কান্দিরপাড় ‘পূবালী চত্বরে’ সমাবেশ করবেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঅনুমতি না পেলেও একই স্থানে কর্মসূচি পালনে অনড় বিএনপির দুই পক্ষ১২ ঘণ্টা আগেটাউন হল মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার কান্দিরপাড় ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) বিরঙ্গ চন্দ্র মণ্ডল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে যেন বিঘ্ন না ঘটে, এ জন্য আমরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি। টাউন হল মাঠে কোনো পক্ষের লোকজনকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চূড়ান্তভাবে কাউকে টাউন হল মাঠ বরাদ্দ দিইনি। রাতেই দুই পক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা কেউই বৃহস্পতিবার টাউন হল মাঠে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবে না। তাদের বিকল্প স্থানে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। কেউ সিদ্ধান্ত অমান্য করার চেষ্টা করলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোট্জ এর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরো পড়ুন:
ভুয়া তথ্য প্রচার ঠেকাতে গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠকে শেখ হাসিনার রায় পরবর্তী জনমত ও সার্বিক পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ও প্রস্তুতি, বন্দি প্রত্যর্পণ, সাইবার অপরাধ এবং দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকারে জার্মান রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ ও জার্মানি পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। অদূর ভবিষ্যতে এ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলে আশা করছি।”
নির্বাচনের তারিখ ও প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঘোষণা করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন যে তারিখই নির্ধারণ করুক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।”
শেখ হাসিনার রায়-পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। ছোটখাটো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত। কেউ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।”
অপরাধের মাত্রা সম্পর্কে তিনি বলেন, “অপরাধ বাড়ছে না; নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। মানুষ এখন স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে, যা বিগত ১৫ বছরের কথিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সম্ভব হয়নি।”
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান এবং জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আন্যা কেরস্টেন উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী