তরুণ প্রজন্মের মডেল-অভিনেত্রী ফারজানা সুমি। ‘জলরঙ’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এবার তার অভিনীত ‘আতরবিবিলেন’ চলচ্চিত্র সেন্সর সার্টিফিকেট পেয়েছে। সিনেমাটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। টাইমস মিডিয়ার ব্যানারে এটি পরিচালনা করেছেন মিজানুর রহমান লাবু। নির্মাণের পাশাপাশি সিনেমাটির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন এই পরিচালক।
‘আতরবিবি’ চরিত্র রূপায়ণ প্রসঙ্গে ফারজানা সুমি বলেন, “সিনেমার গল্পে আতরবিবি সমাজের একটি স্বাভাবিক মেয়ের মতো বাঁচার স্বপ্ন দেখে। একটা সুখের জীবন কাটানোর স্বপ্ন তার। কিন্তু এই সমাজে ভদ্রবেশি কিছু ভয়ংকর স্বার্থলোভীর স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বার বার বলি হতে হয় আতরবিবিকে। তার জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের ঘটনা ঘটতে থাকে। পুরো সিনেমায় উঠে আসে আতরবিবির সংগ্রামী জীবন। তার জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনাকে এক সুতোয় বেঁধে নির্মাতা এগিয়ে নিয়েছেন কাহিনি। এর পরতে পরতে রয়েছে আতরবিবির সংগ্রামী জীবন।”
চরিত্রটি রূপায়নের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন সুমি। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আতরবিবিলেন’ সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করে অসাধারণ ভালো লাগা কাজ করছে। যদিও নির্মাতা লাবু ভাইয়ের কল্পনায় ভাসা আতরবিবি হওয়া খুব সহজ ছিল না। এই চরিত্রের জন্য আমাকে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে। তারপর ক্যামেরার সামনে আতরবিবি সেজেছি। নির্মাতার চাহিদা অনুযায়ী অভিনয়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এই চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে আমার চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। রোজার মাসে অসম্ভব রকমের পরিশ্রম করে সিনেমাটির শুটিং করেছি। ডাবিংয়ে এসে সিনেমার ফুটেজ দেখে ভালো লাগছে। আমার বিশ্বাস এটি দর্শকের ভালো লাগবে। আর তাদের ভালো লাগলেই আমার এবং সিনেমার পুরো ইউনিটের কষ্ট স্বার্থক হবে বলে মনে করি।”
আরো পড়ুন:
পরিচালক জাহিদুর রহিম অঞ্জন মারা গেছেন
কেন উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ভূমি?
সিনেমাটিতে ফারজানা সুমির বিপরীতে অভিনয় করেছেন গোলাম মুস্তফা প্রকাশ। এছাড়াও অভিনয় করেছেন— রাশেদ মামুন অপু, আশীষ খন্দকার, এলিনা শাম্মী, সানজিদা মিলা, জয়রাজ, পারভেজ সুমন, ফরহাদ লিমন, কাজী উজ্জ্বল, সকাল, সীমান্ত প্রমুখ।
নির্মাতা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন লোকেশন ছাড়াও দৌলতদিয়া যৌনপল্লী, রাজবাড়ি, গোয়ালন্দ, ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে ‘আতরবিবিলেন’ সিনেমার শুটিং হয়েছে। আগামী ঈদ কিংবা ঈদ পরবর্তী কোনো সুবিধাজনক সময়ে সিনেমাটি মুক্তি পাবে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা
চলতি বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইন। দেশটির মধ্যাঞ্চলে কালমেগির আঘাতে ভয়াবহ বন্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
‘সঠিক স্থান নির্ধারণ না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে’
প্রতিবেদনে বলা হয়, কালমেগির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কালমেগির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। আহত হয়েছে ৮২ জন। এছাড়া ১২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ঘূর্ণিঝড় কালমেগির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সপ্তাহান্তে দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যদি এতগুলো অঞ্চল এই ধরনের প্রভাবের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ।”
জাতীয় দুর্যোগের মানে হলো, এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক হতাহত, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং সরবরাহ দ্রুত করার জন্য আরও ক্ষমতা দেয়।
স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড় কালমেগি মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানে। এতে সেবুর আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ছোট অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, শহরজুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পরই সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন রাগাসা আঘাত হেনেছিল এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে দেশটি ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছিল, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
ঘূর্ণিঝড় কালমেগি আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।
পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় কালমেগি শুক্রবার সকালে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানকার ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহ ধরে বন্যা ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের সাথে লড়াই করছে। দেশটির বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখনও বন্যার কবলে রয়েছে।
থাইল্যান্ডও ঝড়ের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা কালমেগির প্রভাবে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ