জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগে বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতাকে ১৩ থেকে ৬৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন তিউনিসিয়ার আদালত। এই বিচারপ্রক্রিয়াকে ‘প্রহসনমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আজ শনিবার জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর বিরোধীদলীয় নেতা, ব্যবসায়ী এবং আইনজীবীদের ১৩ থেকে ৬৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

তবে বিরোধীরা বলছেন, অভিযোগগুলো বানোয়াট এবং এই বিচার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইয়েদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতীক।

মামলা সম্পর্কে যা জানা গেছে

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা টিএপি অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে ১৩ থেকে ৬৬ বছরের কারাদণ্ডের খবর জানিয়েছে। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে টিএপি জানিয়েছে, এই দণ্ড তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়েছে।

মোট ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

তিউনিসিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় হুমকি এবং একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার’ দায়ে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আসামিরা দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং সাইয়েদকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছিলেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই প্রেসিডেন্টের কট্টর সমালোচক ছিলেন। এর মধ্যে প্রধান বিরোধী জোট জাতীয় স্যালভেশন ফ্রন্টের নেতা নেজিব চেব্বিও ছিলেন।

গতকাল শুক্রবার রায় ঘোষণার আগে চেব্বি সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলা প্রমাণ করে যে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষ ‘বিরোধীদের অপরাধী’ প্রমাণ করতে চায়।

কারাদণ্ড পাওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন নেজিব চেব্বির ভাই মধ্যপন্থী রিপাবলিকান পার্টির নেতা ইসাম চেব্বি, মধ্য-বামপন্থী ডেমোক্রেটিক কারেন্ট পার্টির প্রধান গাজি চউয়াচি এবং ইসলামিক গণতান্ত্রিক দল এননাহদার আবদেল হামিদ জেলাসি। সাবেক গোয়েন্দা প্রধান কামেল গুইজানও আসামিদের মধ্যে একজন।

সাজা ঘোষণার শুনানির আগে আসামিপক্ষের আইনজীবী আহমেদ সোয়াব এই বিচারকে ‘প্রহসন’ বলে বর্ণনা করেন।

মার্চ মাসে শুরু হওয়া এই বিচার দুবার স্থগিত করা হয়েছিল। সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মামলার শুনানিতে উপস্থিত হতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রেসিডেন্ট কাইস যা করেছেন

আরব বসন্তের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়া একমাত্র দেশ তিউনিসিয়ায় কাইস সাইয়েদ ২০১৯ সালে একটি জনপ্রিয় দুর্নীতিবিরোধী জোট থেকে লড়াই করে নির্বাচিত হন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছর পর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ব্যাপক ক্ষমতা দখল করেন এবং ডিক্রি জারির মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা শুরু করেন।

এর পর থেকে বিচারকদের বরখাস্ত করা এবং প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের গ্রেপ্তারের নানা ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে।

গত বছর অক্টোবরে প্রথম দফার ভোটে কাইস সাইয়েদ পুনর্নির্বাচিত হন। পর্যবেক্ষকেরা রেকর্ড কম ভোটার উপস্থিতির এই নির্বাচনকে ‘প্রহসনমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বারবার সাইয়েদের শাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, তিউনিসিয়ায় ‘সমালোচকদের ভয় দেখানো, শাস্তি দেওয়া এবং চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্য যথেচ্ছভাবে আটক এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার পরিমাণ বেড়েছে।’

সাইয়েদ তাঁর বিরুদ্ধে ‘স্বৈরশাসক’ হয়ে ওঠার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর দাবি, তিনি রাজনৈতিক অভিজাতদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ব চ র ৬৬ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না: হাইকোর্ট

আসন্ন কোরবানির ঈদে রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়ায় গরুর হাট বসানো যাবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (২৮ এপ্রিল) এ আদেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রিটকারীর আইনজীবীর জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ২১ এপ্রিল রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়ায় পশুট হাট বসানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন সরকার। রিটের শুনানি নিয়ে গতকাল হাইকোর্ট মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি রুল জারি করেন।

আরেক আইনজীবী খুররম শাহ মুরাদ বলেছেন, বনশ্রী আবাসিক এলাকা। বনশ্রীর মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসলে এ হাট পুরো আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এ কারণে এলাকাবাসীর পক্ষে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছিল।

ঢাকা/এম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
  • কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না: হাইকোর্ট