কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার নিন্দা উদীচীর
Published: 25th, April 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। শুক্রবার উদীচী এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাওয়া নিরীহ পর্যটকদের ওপর এ ধরনের হামলা প্রকৃতপক্ষে মানবতার ওপর হামলা।
গত মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগামের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বৈসারণ উপত্যকায় বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের একজন ছাড়া সবাই ভারতীয়। নিহত একমাত্র বিদেশি পর্যটক নেপালের নাগরিক।
উদীচী বলেছে, ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর থেকেই কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিবাদ চলছে। বেশ কয়েকবার যা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেও রূপ নিয়েছে। এ ছাড়া কাশ্মীরে বেশ কিছু জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন সক্রিয়, যাদের পেছনে পাকিস্তানের সরাসরি মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ ভারতের। বিভিন্ন সময় সেসব সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠনের হামলায় বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে, যার সবশেষ উদাহরণ পর্যটকদের ওপর হামলা।
উদীচী বলেছে, জন্মলগ্ন থেকেই যেকোনো ধরনের উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার উদীচী। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিরীহ পর্যটকদের মৃত্যুকে ঘিরে উপমহাদেশের কোথাও নতুন করে যেন সাম্প্রদায়িকতা বা সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে সব ধরনের সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে উদীচী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হামলার পর আশা ও আতঙ্কের মধ্যে পেহেলগামে ধীরে ধীরে ফিরছেন পর্যটকেরা
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামের কাছে এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর শহরটিতে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। অবশ্য সেখানে অল্প অল্প করে পর্যটক ফিরতে শুরু করেছেন।
গত সপ্তাহে শহরের প্রধান মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, খালি হয়ে গিয়েছিল হোটেলগুলো। এখন সেখানে আবার অল্প অল্প করে প্রাণ ফিরছে।
গত মঙ্গলবার পেহেলগাম থেকে তিন মাইল (৫ কিলোমিটার) দূরে পাহাড়চূড়ার উপত্যকা বৈসারানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের ওপর গুলি চালায় একদল বন্দুকধারী। এই বৈসারানকে অনেক সময় ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ বলা হয়।
বৈসারানের হামলাকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা অনেক পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এবং ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কাশ্মীরের দুই অংশ দুই দেশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তরে পুরো অঞ্চলকে দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
দিল্লি এ হামলার কোনো সামরিক জবাব দেবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।
পেহেলগামের মতো এলাকার অর্থনীতি পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। হামলার জেরে সেখানে বহু মানুষের জীবিকা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে ব্যাপক ধরপাকড়, ভাঙা হচ্ছে বাড়ি: ‘আমার ভাই জড়িত থাকলেও পরিবারের অপরাধ কী’১৮ ঘণ্টা আগেহামলার পরদিন (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পেহেলগামের বৈসারান এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালান