জামিনে মুক্তি পেয়েই গ্রেপ্তার আ.লীগ সাবেক নেতা জসিম
Published: 5th, May 2025 GMT
কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর গাইবান্ধা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা খান মো. সাঈদ হোসেন জসিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৫ মে) সকাল ১১টার দিকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গাইবান্দা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার জানান, গোবিন্দগঞ্জের একটি নাশকতার মামলায় জেল গেটের সামনে থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার খান মো.
আরো পড়ুন:
শিবচরে নদীতে নিখোঁজ তরুণীর মরদেহ উদ্ধার
ঝিনাইদহে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দম্পতি আদালতে
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত আবু ইকবাল পাশা বলেন, “২০১৪ সালে গোবিন্দগঞ্জে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গত মাসের ১৯ এপ্রিল দরবস্ত ইউনিয়নের জামায়াত কর্মী আজাদুল ইসলাম ১২১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। সেই মামলার আসামি খান মো. সাঈদ হোসেন জসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।”
জেল গেটে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের সময় জসিম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, “তিন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই। আমি পেশায় ব্যবসায়ী। রাজনীতি আমার পেশা নয়।” পুলিশ কেন গ্রেপ্তার করছে, জানতে চান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকার একোয়েস্টেট পাড়ার আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ রঞ্জুর বাসা থেকে খান মো. সাঈদ হোসেন জসিমকে গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী।
খান মো. সাঈদ হোসেন জসিম জেলা বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গেল বছরের ২৬ আগস্ট সদর থানায় দায়ের হওয়া বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি। এছাড়া পলাশবাড়ী উপজেলায় যুবদলের কর্মী সভায় হামলা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি তিনি।
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ গ র প ত র কর গ ব ন দগঞ জ স ঈদ হ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
গরমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে চারদিক ওষ্ঠাগত। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখীর হাওয়া আর বৃষ্টির ঝাপটায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও সময়টা গরমের। গরমের এই আবহাওয়ায় দেখা দেয় বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, রোগ-জরা।
গরমের কারণে এমনিতে এই সময়ে পরিশ্রমের কাজ করতে ইচ্ছে করে না। গরম বেশি পড়লে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত হাঁটতে চান না বা হাঁটতে পারেন না। আবার অতিরিক্ত গরমের ফলে অনেকে বিভিন্ন ধরনের জুস, শরবত খেয়ে থাকেন। ফলে ডায়াবেটিস হয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে যে কোনো সাধারণ অসুখে রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে।
এই গরমে ঘামের কারণে পানির সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বেরিয়ে গিয়ে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। যে সব ডায়াবেটিক রোগীর কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ রয়েছে বা ডায়ইউরেটিক্স জাতীয় ওষুধ সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে এই পানিস্বল্পতা ভয়ংকর হতে পারে। সমস্যা বেশি হলে রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে– এমনকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের শুরুতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সাধারণত দূষিত পানি বা খোলা-বাসি খাবার থেকে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা হলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট বের হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে, কিডনি বৈকল্য দেখা দিতে পারে, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। এ অবস্থায় রোগীকে খাবার স্যালাইন দিতে হবে। তবে বারবার বমি হলে, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, মুখ- জিহবা শুকিয়ে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া পানিবাহিত অন্যান্য রোগ যেমন টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এগুলো হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হযন। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে সাধারণ এই সর্দি-জ্বর থেকে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে ইনফেকশন, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা না হলে যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাংগাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে এগুলো সংক্রমিত হয়ে ভোগান্তি বাড়াতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীর ওপর অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রভাব
l অতিরিক্ত গরমে ঘামের সঙ্গে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ঝুঁকি বাড়ায়।
l ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রণ থাকলে রক্তের ঘনত্ব এমনিতেই বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা হলে এই ঘনত্ব আরও বাড়ে। এর ফলে হাইপার অসমোলার কোমার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
lঅতিরিক্ত গরমে ডায়াবেটিসের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে-কমে। রক্তে শর্করা কমানোর ওষুধ সেবনে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
সমস্যা এড়াতে করণীয়
lপর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফলের রস, আখের রস, চিনি-গুড়ের তৈরি শরবত, কোমল পানীয় খাওয়া বাদ দিতে হবে।
l ডায়রিয়াসহ যেকোনো পানিশূন্যতায় পরিমাণ মতো স্যালাইন খেতে হবে।
l সন্ধ্যার পরে অথবা খুব ভোরে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
lঅতিরিক্ত গরমে কায়িক পরিশ্রম থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে।
lবাইরে বের হলে প্রয়োজনে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
l হালকা, ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক পরতে হবে।
l নিয়মিত গোসল করতে হবে।
l চা, কফি, গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
lনিয়মিত রক্তের শর্করা পরিমাপ করে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। v
[ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন বিশেষজ্ঞ
কনসালট্যান্ট, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা।]