বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, সঠিক সরকারি পরিসংখ্যান বা তথ্য–উপাত্ত না থাকায় অধিকাংশ সময় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। দেশের বড় অর্থনীতিবিদেরাই এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছেন। কিন্তু এসব পরিসংখ্যান মারাত্মক ফ্যাসাদ তৈরি করা ছাড়া আর কোনো কিছু করে নয়।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘খাদ্যের বাজার, সরবরাহ ও দেশজ সক্ষমতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তফা কামাল, কাজী ফার্মসের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এসিআই লিজিস্টিকসের (স্বপ্ন) এমডি সাব্বির হাসান নাসির, কোয়ালিটি ফিডসের গ্রুপ করপোরেট ও লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স পরিচালক শাফির রহমান, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) পারভেজ সাইফুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আকতার হোসেন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘সরকারি পরিসংখ্যানগুলোকে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে গ্রহণ করি। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলো খুবই বিভ্রান্তিকর। এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন। সরকারি পরিসংখ্যান ঠিক করা খুবই প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’

বিগত সময়ে সরকারগুলো ব্যয়ের মহোৎসব করেছে বলে মন্তব্য করেন শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, কৃষিপণ্যের সংরক্ষণের জন্য সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নত করা ও এ খাতে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার তা কীভাবে করবে। কারণ, সরকার তো আগে ব্যয়ের মহোৎসব করেছে এবং এর মাধ্যমে নাগরিকদের ওপর চূড়ান্ত দায় তৈরি করেছে।

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘সরকারি ক্রয় কমিটিতে বিভিন্ন ধরনের (অতীতের) প্রকল্পের রেফারেন্স দেখি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ব্যয়ের ফিরিস্তি দেখি। তাতে মনে হয়েছে, (অতীতে) যেকোনো একটা খাত সৃষ্টি করে খরচ করতে পারাটাই একধরনের কৃতিত্ব মনে করা হয়েছিল একসময়। এটাই যোগ্যতার নিয়ামক ছিল যে কে কত খরচ করতে পারে। কতভাবে দায় তৈরি করা যায় দেশের ওপর, নাগরিকদের ওপর সেটি করা হয়েছে।’

দেশে খাদ্যনিরাপত্তাভিত্তিক একটি জাতীয় নীতি তৈরির পরামর্শ দিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বণ্টন ও মজুতব্যবস্থার জন্য দেশব্যাপী একটা ব্যবস্থা তৈরি করা প্রয়োজন। এটি রাজনৈতিক সরকারের সহায়তা ছাড়া রাতারাতি করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল্যস্ফীতি পরিমাপের (পণ্যের) বাস্কেট বেশ বড়। আমি মনে করি, ১৭টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে আলাদা একটি ইনফ্লেশন ইনডেক্স থাকা উচিত।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট পর স খ য ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বোরো ধানে নামছে চালের দর উত্তাপ সবজির বাজারে

বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বাজারে এ জাতের চাল আসতে শুরু করায় সরু বা মিনিকেট চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে কমেছে সর্বোচ্চ ৪ টাকা। গ্রীষ্ম মৌসুমে সরবরাহ কম থাকায় বেশির ভাগ সবজির দর তুলনামূলক বেশি। ফলে দীর্ঘ সময় পর নিত্যপণ্যের বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও ক্রেতাকে ভোগাচ্ছে সবজি। 

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা ও নাখালপাড়ার সমিতি বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে বোরো ধানের। সরবরাহ বাড়ায় নতুন সরু বা মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮২ টাকায়। এ মানের পুরোনো চালের কেজি এখনও ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা। মোটা চালের দর কেজিতে ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। 

মাঝারি চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬৫ টাকায়। এ মানের চালের কেজিতেও এক-দুই টাকা কমেছে। 
বেশ কয়েক মাস স্থির থাকার পর চালের দর কমছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারের নোয়াখালী রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. শাওন সমকালকে বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। ফলে খুচরা বাজারেও দাম কমছে। সরবরাহ বাড়লে আরও কমতে পারে দাম। তবে পুরোনো মিনিকেটের দাম এখনও কিছুটা বেশি। 
সবজি কিনতে গেলে ক্রেতাকে হতাশ হতে হচ্ছে। বেশির ভাগ সবজি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে অন্তত ৬০ টাকা। কোনোটির দর শতক পার হয়েছে। মাসখানেক ধরে সবজির বাজার চড়া।
বিক্রেতারা বলছেন, শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে। গ্রীষ্মের সবজি আসা শুরু হয়েছে। এসব সবজির দর এ সময় কিছুটা বেশি থাকে। 

খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁপে, পটোল, ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ও ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। উচ্ছে ও বেগুনের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বরবটি ও কাঁকরোলের মতো গ্রীষ্মকালীন সবজি কিনতে ক্রেতাকে কেজিপ্রতি খরচ করতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া টমেটো ৩০ থেকে ৪০, শসা ৬০ থেকে ৭০ ও গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। কাঁচামরিচের দরও কিছুটা বেড়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। আলুর দর কমেছে। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ১৭ থেকে ২০ টাকায়। গত সপ্তাহে কেজি ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা। সেই হিসাবে কেজিতে কমেছে ২ থেকে ৩ টাকা।

গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের বাজারে কিছুটা চড়াভাব দেখা যায়। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশ কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের রুই ও কাতলা ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি।

মাসখানেক ধরে পেঁয়াজের বাজারও চড়া। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
ডিম-মুরগির দামে অনেকটা স্বস্তি আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দর দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিতে অন্তত ৪০ টাকা কম।
প্রায় দুই মাস ধরে ডিমের বাজার ঠান্ডা। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। ভ্যানে করে কিছুটা ছোট আকারের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরবরাহ ঠিক করতে সুবিধা বাড়াতে হবে, দাবি ব্যবসায়ীদের
  • গাজা ‘দখলসহ’ নতুন যেসব পরিকল্পনা অনুমোদন দিল ইসরায়েল
  • এবার কোরবানিযোগ্য প্রাণী ১ কোটি ২৪ লাখ, থাকবে উদ্বৃত্ত: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
  • ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারে দাম কমেছে ১৯ টাকা
  • নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের পরিত্যক্ত মালামালে আগুন, বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • বিপুল ব্যয়ের প্রকল্প, তবু পানি মিলছে না
  • গাজায় এখন একবেলার খাবার খুঁজে পাওয়া অসম্ভব
  • স্বাদে অতুলনীয় ‌‘বর্নির ধুছনির দই’
  • বোরো ধানে নামছে চালের দর উত্তাপ সবজির বাজারে