লক্ষ্মীপুরে কাঠমিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
Published: 21st, October 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আরিফ হোসেন (৪০) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আরিফের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বোন নাসরিন আক্তার।
নিহতের স্ত্রী নাসিমা আক্তার বলেছেন, তিন দিন আগে শনিবার রাতে আরিফের মোবাইল ফোনে কল আসে। কিন্তু, তিনি ঘর থেকে বের হননি। পরে কে যেন বাইরে থেকে তাকে ডাক দিয়েছে। তখন আরিফ বের হয়ে যান, পরে আর ফিরেননি। পরদিন সকালে স্থানীয়রা বাড়ির অদূরে একটি গভীর নলকূপের পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহতের মেয়ে মুন্নি আক্তার বলেছেন, আমার বাবার মাথায়, ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার পা ভাঙা ছিল। কে যেন বাবাকে ডেকে নিয়েছে।
আরিফ কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। তিনি রায়পুর পৌরসভার গোলাম রহমান সর্দার বাড়ির মানিক মিয়ার ছেলে।
নিহতের ভাই শরীফুল ইসলাম ও বোন নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, বাড়ির সামনে কবরস্থানের জমি নিয়ে রায়পুর পৌরসভার সাবেক নারী কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলিদের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। এর জের ধরে ১০ অক্টোবর লিলির নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে শরীফুলের মাথায় জখম হয়। এ ঘটনায় লিলিরা আবার থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তারা (শরীফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা) জামিন পান। এরপর প্রকাশ্যে হুমকি দেন লিলির পক্ষের লোকজন। লিলিরা পরিকল্পিতভাবে শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে আরিফকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। পরদিন রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে নাসরিন বাদী হয়ে রায়পুর থানা মামলা দায়ের করেন।
নাসরিন আক্তার বলেছেন, আমার ভাই শরীফের মাথায় রক্তাক্ত জখম করেছে লিলি ও মামুনরা। এরপর তারা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে। পরে জামিন পাওয়ায় তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাদেরকে হুমকিও দিয়েছে। তারাই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাই আরিফকে হত্যা করেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিবশী লিলিদের সঙ্গে জমি নিয়ে আরিফদের বিরোধ আছে। কিছুদিন আগেও তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আরিফের মৃত্যু রহস্যজনক। দ্রুত মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাবেক কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেছেন, আরিফের মরদেহের ডান পায়ের হাড়ে একাধিক অংশ ভাঙা ছিল। তবে, পায়ে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। কপালের ডান পাশে চোখের কাছে থেঁতলানো জখম ছিল।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র বল ছ ন ন হত র আর ফ র মরদ হ রহস য
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ বিকেলের দুই আঘাতে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
রাওয়ালপিন্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। দিনের একদম শেষ মুহূর্তে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে খানিকটা এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৮৫, এখনও তারা পাকিস্তানের থেকে পিছিয়ে আছে ১৪৮ রানে। দলের ভরসা এখনো টিকে থাকা ব্যাটার ট্রিস্টান স্টাবসের উপর। যিনি ধৈর্য ধরে গড়েছেন অপরাজিত অর্ধশত রানের ইনিংস।
দিনের শুরুটা ছিল পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে। আগের দিন অপরাজিত থাকা সৌদ শাকিল নিজের অর্ধশতক সম্পূর্ণ করেন। অন্য প্রান্তে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছিলেন সালমান আগা। দু’জনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে দল পার হয়ে যায় তিনশ রানের গণ্ডি। ম্যাচ তখন পুরোপুরি পাকিস্তানের দখলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু এরপর বদলে যায় চিত্রটা।
আরো পড়ুন:
ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বরেকর্ড, প্রথমবার ৫০ ওভার করলেন স্পিনাররা
ছয় উইকেট হারিয়ে ধুকছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
স্পিনের জাদু দেখিয়ে কেশভ মহারাজ ভাঙেন ৮৭ রানের সেই পার্টনারশিপ। প্রথমে সালমান আগাকে ফেরানোর পর পরের আঘাতেই বিদায় করেন সেট ব্যাটার সৌদ শাকিলকে (৬৬)। এরপর যেন পাকিস্তান ব্যাটিং এক নিমেষে ভেঙে পড়ে। টেইলএন্ডারদেরও রেহাই দেননি মহারাজ। শেষ পর্যন্ত ইনিংসে তুলে নেন ৭ উইকেট, যা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে অন্যতম সেরা স্পেলগুলোর একটি। পাকিস্তানের শেষ পাঁচ উইকেট পড়ে যায় মাত্র ১৭ রানে।
ব্যাটিং ব্যর্থতার পর পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল এক উজ্জীবিত বোলিং শুরু এবং সেটাই এনে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ইনিংসের শুরুতেই ফেরান রায়ান রিকেলটনকে। আর পাকিস্তান পেয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। কিন্তু এরপর ব্যাট হাতে স্থির হয়ে যান তরুণ স্টাবস। সাধারণত আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত এই ব্যাটার আজ খেললেন সম্পূর্ণ বিপরীত ভূমিকায়; ধৈর্য, মনোযোগ আর সময় নিয়ে।
অন্য প্রান্তে অবশ্য এইডেন মার্করাম বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সাজিদ খানের বলে লং অনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। পাকিস্তানের পক্ষে তখন সুযোগ ছিল আরও এক ধাক্কায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার। কিন্তু তা হতে দেননি টনি ডি জর্জি।
স্টাবসকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন গুরুত্বপূর্ণ জুটি। প্রথম বাউন্ডারিটা এল তার ব্যাট থেকে ৬১তম বলে। এরপর ক্রমে আস্থার সঙ্গে এগোতে থাকেন দুই ব্যাটার। একঘেয়ে সময় ভাঙেন ডি জর্জি। টানা দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছে যান অর্ধশতকে। একই ওভারে ফিফটি করেন স্টাবসও। তাদের জুটি পার করে যায় শতরানের মাইলফলক।
দেখে মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয় দিনের খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার হাসিমুখ নিয়েই শেষ হবে। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় দিনের একেবারে শেষ দিকে। অভিষেক দারুণ মুহূর্ত এনে দেন আসিফ আফ্রিদি। প্রথমে এলবিডব্লিউ করে ফেরান ডি জর্জিকে। এরপর নিজের পরের ওভারেই শূন্য রানে ফেরান ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকে।
শেষ বিকেলের দুই আঘাতে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে দিন শেষ করে পাকিস্তান। তবুও লড়াই বাকি। কারণ উইকেটে এখনো আছেন সেট ব্যাটার স্টাবস (৬৮*) এবং অভিজ্ঞ কাইল ভেরেইনে। আগামীকাল বুধবার সকালে শুরু হবে তৃতীয় দিনের খেলা।
ঢাকা/আমিনুল