শোবিজে কাজ করতে এসেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্পেনের নাগরিক মারিয়া মিম। এসে ২০১২ সালে অভিনেতা সিদ্দিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনেও আবদ্ধ হন তিনি। কিন্তু বেশিদিন আর সে সংসার এগোয়নি। এক  ২০১৯ সালের শেষের দিকে ডিভোর্স হয় তাদের। এরপর থেকেই সিঙ্গেল এই মডেল ও অভিনেত্রী। 

তবে নামের শুরুতে মডেল ও অভিনেত্রী থাকলেও খুব একটা এ সেক্টরে তাকে কাজ করতে দেখা যায় না। বেশি দেখা মেলে বিদেশে ঘুরাঘুরিতে।  সোশ্যাল অ্যাকাউন্টগুলোতে নিয়মিত আবেদনময়ী ছবি শেয়ার করেন তিনি। এ নিয়ে নিন্দাও সহ্য করতে হয় তাকে। তবে মারিয়া নিজের ইচ্ছেমতোই চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

সম্প্রতি সেলিব্রেটিদের নিয়ে আয়োজিত ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে অংশ নিয়েছেন এই মডেল। সেখানেই গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন, ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তিনি। 

মারিয়া মিম বলেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে সমালোচনা শুনতে হয়। কিন্তু আমি তো দেশে ছোট পোশাক পরি না, বিদেশে পরি। কারণ আমি বেড়ে উঠেছি বার্সেলোনায়। সে কারণে ওয়েস্টার্ন পোশাক পছন্দ করি। এ ধরণের পোশাকে আমাকে ভালোও লাগে।’

এই মডেল বলেন, ‘বলিউডের কেউ ছোট পোশাক পরলে তখন প্রশংসা করা হয়, কিন্তু আমরা ছোট পোশাক পরলে সেটা ভালো লাগছে না। আমি মনে করি, মানুষের মেন্টালিটি পরিবর্তন করা উচিত। কারণ মিডিয়াতে কাজ করতে হলে তো গ্ল্যামারাস থাকতে হবে, সুন্দর ড্রেস পরতে হবে।’

ছোট পোশাক তারাই পরবে যাদের মানায়, সুন্দর লাগবে। যারা ফিট না, তারা যদি ছোট পোশাক পরে বা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে সেটা দেখতে খারাপ লাগবে— যোগ করেন মারিয়া মিম। 

এসময় প্রাক্তন স্বামী অভিনেতা সিদ্দিকুরের বিষয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন অভিনেত্রী। তবে সিদ্দিককে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। 

কেবল বলেছেন, ‘তার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হয়েছে ৬-৭ বছর আগে। সে তো আমার স্বামী নন, তাই এই বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ট প শ ক পর

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা

চলতি বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইন। দেশটির মধ্যাঞ্চলে কালমেগির আঘাতে ভয়াবহ বন্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা

‘সঠিক স্থান নির্ধারণ না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে’

প্রতিবেদনে বলা হয়, কালমেগির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।

সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, কালমেগির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। আহত হয়েছে ৮২ জন। এছাড়া ১২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট মার্কোস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ঘূর্ণিঝড় কালমেগির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সপ্তাহান্তে দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যদি এতগুলো অঞ্চল এই ধরনের প্রভাবের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ।” 

জাতীয় দুর্যোগের মানে হলো, এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক হতাহত, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং সরবরাহ দ্রুত করার জন্য আরও ক্ষমতা দেয়।

স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড় কালমেগি মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানে। এতে সেবুর আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ছোট অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, শহরজুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করছে।

ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পরই সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন রাগাসা আঘাত হেনেছিল এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই।

আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে দেশটি ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছিল, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।

ঘূর্ণিঝড় কালমেগি আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।

পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় কালমেগি শুক্রবার সকালে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানকার ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহ ধরে বন্যা ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের সাথে লড়াই করছে। দেশটির বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখনও বন্যার কবলে রয়েছে।

থাইল্যান্ডও ঝড়ের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা কালমেগির প্রভাবে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ