প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও বার গোনার জটিলতা এড়িয়ে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। রবিবার (২২ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপ শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, “মেয়াদ ও বার এই দুই শব্দ ঘিরে বহু ব্যাখ্যা ও জটিলতা তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, দুইবার, কেউ বলছেন দুই মেয়াদ। তবে, এমন পরিস্থিতি হতে পারে, যেখানে কেউ অল্প সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন আবার কেউ বারবার অল্প মেয়াদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হবেন। এতে প্রকৃত মেয়াদের চেয়ে বার গোনা অর্থহীন হয়ে পড়ে।”

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা লিখিত প্রস্তাবেও বলেছি, কোনো ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। তবে, মেয়াদ বলতে সংসদ পূর্ণ থাকবে কিনা, সেটা নির্ভর করে সংসদের ওপর। আমাদের সংবিধানে সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর নির্ধারিত আছে, কিন্তু তা রাজনৈতিক বাস্তবতায় পরিবর্তন হতে পারে।”

আরো পড়ুন:

ধর্ষণের শিকার শিশুর পরিবার পেল আর্থিক সহযোগিতা 

বিএনপির পথসভায় ‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানালেন ছাত্রদল নেতা

তিনি আরো বলেন, “বার গোনার বদলে একজন ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ কত বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। যদিও আমি নির্দিষ্ট কোনো বছর উল্লেখ করিনি, কারণ সেটি আমার একক সিদ্ধান্তে বলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে চূড়ান্ত অবস্থান নিতে হবে।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত অবস্থান নিতে আগ্রহী। মেয়াদ নির্ধারণ হোক কিংবা বছর, মূল কথা হচ্ছে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নিশ্চিত করা এবং গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।”

ঢাকা/রায়হান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, নির্বাচনে আসেন না কেন: সালাহউদ্দিন আহমদ

সরকারি দল হওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হলে নির্বাচনে আসতে এত বাহানা কেন—এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা যখন এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে কারা সরকারে যাবে আর কারা বিরোধী দলে যাবে সেটা ঠিক করবে। আজকে এক বাহানা, কালকে আরেক বাহানা- এসব অজুহাত দেখিয়ে কেন আপনারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চান?’

আজ শনিবার রাজধানীর কাকরাইল ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে সামাজিক সংগঠন অর্পণ আলোক সংঘ আয়োজিত ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তার তৃতীয় সংলাপ’-এ এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা করেন বীথিকা বিনতে হোসাইন।

সালাহউদ্দিন বলেন, 'আজকে শিরোনাম দেখলাম কোথাও— জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি যাবে বিরোধী দলে। তো ভাইসাব, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে নাকি জনগণ ঠিক করবে। যারা জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে না, তারাই এসব কথা বলে।’

গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরে আয়োজিত এক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুহাম্মাদ শাহজাহান বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠনের মতো আসনে বিজয়ী হবে। জামায়াতে ইসলামী সরকারি দল হবে। বিএনপিকে বিরোধী দলে যেতে হবে।

এর প্রেক্ষিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। বিরোধী দল প্রসঙ্গে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন আরও বলেন,

সরকার সব সময় চায় বিরোধী দল যেন মাঠে না থাকে। অথচ গণতন্ত্রে সরকার ও বিরোধী দল দুটোই জনগণের। বিরোধী দল মানে শত্রু নয়, রাষ্ট্রের অংশ।

একই সময়ে কেউ সরকারি দল ও বিরোধী দল হতে পারে না

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, একই সময়ে কেউ সরকারি দল ও বিরোধী দল হতে পারে না। দরজা হয় খোলা থাকে, নয় বন্ধ থাকে— এক সাথে দুটো হয় না। যারা এখনো ছাত্র প্রতিনিধি হয়ে সরকারে বসে আছেন, প্রতিদিনই তাদের দায়ভার বহন করতে হচ্ছে। জনগণের সঙ্গে দ্বিমুখী আচরণ করে কোনো দল বা সংগঠন টিকে থাকতে পারে না।

জনগণ ভোটের মাধ্যমে পিআর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি দাবির প্রসঙ্গে বিএনপি'র এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, কেউ কেউ বলছেন, ‘পিআর চাই’। আমরা বলেছি জনগণ ভোটের মাধ্যমে তা দেবে। দাবি-দাওয়াগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে নির্বাচনে আসুন। জনগণ সমর্থন দিলে তখনই তা বাস্তবায়ন হবে। এটা-ই গণতন্ত্রের রীতি। একতরফা ঘোষণা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যায় না।

জুলাই সনদ নিয়ে কোর্টের মতামত উত্তম

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়াই উত্তম। কারণ সংবিধান অনুযায়ী বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের রায় মানা না হলে রাষ্ট্রে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। আদালতের রায়ের বাইরে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক সমাধান টেকসই হয় না।

রাজনীতি মিডিয়া, ব্যবসায়ী, মাফিয়ার হাতে বন্দী, বললেন হাসনাত

সংলাপে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন মিডিয়া, ব্যবসায়ী, মাফিয়ার হাতে বন্দী হয়ে গেছে। জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব হারিয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের কাছে জবাবদিহি না করে কিছু গোষ্ঠীর কাছে জবাবদিহি করছে। এভাবে চলতে থাকলে গণতন্ত্র কখনোই শক্তিশালী হবে না।

বর্তমান প্রজন্মের ভুল স্বীকার করার সাহস আছে বলে উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, 'আমরা তরুণ প্রজন্ম ভিন্ন। আমরা স্বীকার করি আমাদেরও ভুল থাকতে পারে, কিন্তু ভুল স্বীকার করার সাহস আমাদের আছে। আগের প্রজন্মের অনেক রাজনীতিবিদ ভুল করেও সেটা অস্বীকার করে গেছেন, যার ফল ভুগছে পুরো জাতি। তাই নতুন প্রজন্মই পারে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে।'

আরও পড়ুনজামায়াতে ইসলামী সরকারি দল হবে, বিএনপিকে বিরোধী দলে যেতে হবে২১ ঘণ্টা আগে

হাসনাত আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মকে আজ রাজনীতির বাইরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ তারাই দেশের ভবিষ্যৎ। তরুণেরা যদি রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত না হয়, তাহলে এই দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। এনসিপি সেই পথ তৈরি করতে চায়, যেখানে তরুণেরা নিজের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারবে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারবে।

সংলাপে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান, কবি জসীম উদ্দীন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর বারী হামিম, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কয়েকটি রাজনৈতিক দলের জেদ ও ভুলের কারণে নির্বাচন হুমকির মুখে পড়তে পারে: এবি পার্টি
  • জমিয়ত নেতার হত্যার রহস্য উদঘাটন না হলে হরতালের হুঁশিয়ারি
  • ঢাবিতে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও প্রযুক্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আরও পর্যালোচনা হচ্ছে
  • দেশে আর চেতনার ব্যবসা চলবে না: সালাহউদ্দিন
  • এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, নির্বাচনে আসেন না কেন: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • ‘আলোচনা চলমান অবস্থায় আন্দোলন স্ববিরোধী’
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা
  • আমরা আশাবাদী একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব: বদিউল আলম মজুমদার
  • ঐকমত্যের জন্য আর কতকাল অপেক্ষা