২১ দফা দাবিতে রংপুর কারমাইকেল কলেজে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টায় কয়েকশ শিক্ষার্থী নগরীর লালবাগ এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন।

রোববার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এরপর তারা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে সড়কে অবস্থান নেন। এতে করে রাস্তার দু’পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন যাতায়াতকারীরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা লালবাগ রেলক্রসিংয়ে যান। আন্দোলনকারীদের সরিয়ে রেল চলাচল স্বাভাবিক করেন। 

এরপর কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রমিজ আলম, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তোফায়েল আহমেদসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ ঘণ্টা পর সড়ক থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন।

শিক্ষার্থী মনোয়ার হোসেন, আরমিলা জাহান ও মনীষা ইসলাম জানান, উত্তরের অক্সফোর্ডখ্যাত কারমাইকেল কলেজ শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা। রংপুরের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও এখানে আধুনিক ক্লাস রুম নেই, পরিবহন ব্যবস্থা নেই, বিশাল কলেজের নিরাপত্তার জন্য কোনো পুলিশ বক্স নেই। এমন নানা অপ্রাপ্তির মাঝে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ২১ দফা দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। 

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ফ্যান, বেঞ্চ, পর্যাপ্ত আলো, হোয়াইট বোর্ড নিশ্চিত করা, প্রতি বিভাগে প্রজেক্টরের মধ্যে ক্লাস পরিচালনার ব্যবস্থা করা, মাসিক পরীক্ষার আয়োজন করা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জারি করা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, প্রতি ক্লাসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে যোগ্য ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচন করা ও শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ওয়ার্কের ব্যবস্থা করা, কলেজ ম্যাগাজিন প্রকাশ ও শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা, কলেজে নতুন বিভাগ সংযোজন করা, শতাব্দী ভবনে ক্লাস শুরু করা ও ক্লাস রুমের সংখ্যা বাড়ান, শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড নিশ্চিত করা, পুলিশ বক্স নির্মাণ, যাতায়াতের জন্য বাস কেনা, অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণকাজ শেষ করা, ছাত্র ও ছাত্রী বিশ্রামাগার মেরামত ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, ওসমানী হল সংস্কার করে দ্রুত সিট বরাদ্দ, সিএম হলের পরিবর্তে নতুন হল নির্মাণ, হেল্পলাইন নম্বর চালু, আইসিটি ভবনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণের সুবিধা নিশ্চিত করা, আর্থিক কার্যক্রমে অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম চালু, কলেজের দখল হওয়া জায়গা উদ্ধার, কলেজের প্রধান ফটক নির্মাণ, লাইব্রেরি ও সেমিনারে পর্যাপ্ত বই সরবরাহ, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কলেজে কম্পিউটার, ফটোকপি, অফিস স্টেশনারি দোকানের ব্যবস্থা করা।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রমিজ আলম বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দাবি পূরণে কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার দপ্তরসহ কলেজের বিভিন্ন বিভাগে তালা লাগিয়েছিল। পরে প্রশাসন ও পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টার মাধ্যমে দাবি পূরণের ঘোষণা না এলে তারা কলেজে আবারও শাটডাউন কর্মসূচি পালন করবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ ন শ চ ত কর ব যবস থ কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধমুক্ত সবুজ বিশ্ব গড়ার বার্তা

এভারেস্টজয়ী প্রয়াত বন্ধু সজল খালেদ স্মরণে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প অভিযান করেছেন লেখক ও গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ। ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই সবুজ বিশ্ব গড়তে চাই’ স্লোগান নিয়ে তিনি এ অভিযান সম্পন্ন করেন। ১৩ জুন বিকেল পৌনে ৩টায় তিনি বেস ক্যাম্প পৌঁছান। এর আগে ৬ জুন সকালে নেপালের লুকলা থেকে বেস ক্যাম্পের উদ্দেশে ট্র্যাকিং শুরু করেন। অষ্টম দিনের মাথায় তিনি পৌঁছান পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে (৫,৩৬৪ মিটার)।
গাজী মুনছুর আজিজ বলেন, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে যারা এ অভিযানে সম্পৃক্ত হয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিশেষ ধন্যবাদ বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশে পর্বতারোহণের স্বপ্নদ্রষ্টা ইনাম আল হকের প্রতি এবং বিএমটিসি ক্লাবের সবার প্রতি। এ ছাড়া ধন্যবাদ অল্টিচিউড হান্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌফিক আহমেদ তমালের প্রতি। তাঁর সার্বিক সহযোগিতায় এ অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করি।
গাজী মুনছুর আজিজ বলেন, আমরা একটি যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী দেখতে চাই, যেখানে বোমার আঘাতে একটি শিশুও মারা যাবে না। এ ছাড়া একটি দূষণমুক্ত বিশ্ব গড়তে চাই, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঁচবে নির্মল আনন্দে। এসব বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে বেছে নিয়েছি।
আজিজ আরও বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করে নামার পথে সজল মারা যান। এখন বাংলাদেশের অনেকেই এভারেস্ট জয় করেছেন, সবাই তাদের গল্প শুনছেন। আমি মনে করি তাদের সঙ্গে সজলের গল্পটাও মানুষ জানুক। সেজন্যই তাঁকে স্মরণ করে আমার এ অভিযান। এ ছাড়া ২০০৭ সালে ইনাম আল হকের পরিকল্পনায় এবং সজলের উদ্যোগে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে দেশে প্রথম বারের মতো বাংলা ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৯ ও ২০১০ সালেও সজলের উদ্যোগে ম্যারাথন হয়। সজল মারা যাওয়ার পর আর বাংলা ম্যারাথন হয়নি। এরপর সজলকে স্মরণ করে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর মেরিন ড্রাইভে আমি একক ম্যারাথন করে আসছি। এখন বাংলাদেশে প্রচুর ম্যারাথন প্রতিযোগিতা হচ্ছে। আমি মনে করি ম্যারাথনের শুরুর গল্পটাও মানুষ জানুক।
সজল চেয়েছেন ম্যারাথনের মাধ্যমে কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের পর্যটনকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করে তোলা এবং একই সঙ্গে পরিবেশ 
সচেতনতার বার্তা দেওয়া।
লেখক ও গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য। ভ্রমণ বিষয়ে তাঁর বেশ ক’টি বই বের হয়েছে। গত একুশে বইমেলায় বের হয়েছে তাঁর ভ্রমণবিষয়ক বই ‘পাখির খোঁজে বাংলাজুড়ে’। বিভিন্ন ম্যারাথন প্রতিযোগিতা, সাইকেল অভিযানসহ নিয়মিত ভ্রমণ ও অভিযানে বের হন। এ ছাড়া পরিবেশ সচেতনতায় গাছ লাগানোসহ নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকেন। u

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আত্মঘাতী গোলে প্রমোশনের সুযোগ, এরপর যা ঘটল
  • জিমেইলের ভুয়া আনসাবস্ক্রাইব বাটনের মাধ্যমে সাইবার হামলা, সতর্ক থাকার পরামর্শ
  • ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম, এরপর যেভাবে যৌনপল্লিতে কিশোরী
  • ‘এরপর যেই শিশুর মৃত্যু হবে, সে হতে পারে আপনার সন্তান’
  • ‘স্পাইডার ম্যান’খ্যাত অভিনেতা জ্যাক বেটস মারা গেছেন
  • রাজশাহীতে প্রিমিয়ার লিগ চালুর ঘোষণা বিসিবি সভাপতির
  • রাঙা বউয়ের সন্ধানে
  • আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো
  • যুদ্ধমুক্ত সবুজ বিশ্ব গড়ার বার্তা