বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের সংকটকালে তুরস্ক পাশে দাঁড়িয়েছে: যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা
Published: 5th, July 2025 GMT
বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংকটকালে তুরস্ক বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় তুরস্কের ইস্তানবুলে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রসারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট নেজমুদ্দিন বিলাল এরদোয়ান।
আরো পড়ুন:
‘শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তীর আঁকা পোস্টারে ফুটে উঠবে জুলাইয়ের অনিবার্যতা’
তৃণমূল থেকেই উঠে আসবে লাল-সবুজের ভবিষ্যৎ তারকা: আসিফ মাহমুদ
বৈঠকে তারা দুই দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং এসব লোকজ ক্রীড়া প্রসারে পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে বিলাল এরদোয়ান বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, যেমন কাবাডি, কুস্তি, বলিখেলা এবং নৌকা বাইচের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই খেলাগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে আমরা একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।” তাছাড়া, তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলা নিয়ে কাজ করা ফেডারেশনগুলোকে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদস্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তুরস্কের শিক্ষা কার্যক্রমে নিজের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য তুরস্কে শিক্ষাবৃত্তি, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও বিষয় ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে তার সংস্থার পরিচালিত স্কুলের একটি শাখা চালু করারও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তাছাড়া, ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় তিনি তার কক্সবাজার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা প্রসারে সহায়তা প্রদানের আগ্রহ জানান। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জীবন সহজতর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে তুরস্কের চলমান প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ নিজেদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি ও সাফল্য পুনরুদ্ধারে কাজ করছে।”
বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ তার প্রকৃত ও বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যেখানে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।” তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তরুণদের মধ্যে রাজনীতি সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সভ্যতাগত রূপান্তরে গুরুত্ব আরোপ করছে বাংলাদেশ।
তিনি আরো জানান, তুরস্কের মতো বাংলাদেশের অতীত গৌরবোজ্জ্বল সময়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনর্জীবন ঘটানোর প্রতি আগ্রহের কথা।
উপদেষ্টা গাজায় চলমান গণহত্যাসহ বিশ্বের নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর আন্তর্জাতিক জোট গঠনের আহ্বান জানান এবং জানান, এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সক্রিয় সমর্থন ও অংশগ্রহণ থাকবে।
উপদেষ্টা আসন্ন “গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫”-এ বিলাল এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সফর দুই দেশের যুব, ক্রীড়া ও রাজনৈতিক সম্পর্কের পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে আরো সুদৃঢ় ও বেগবান করবে।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত রস ক র এরদ য় ন উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ
দেশের সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজকে ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ দিবস ও ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ’ দিবস উদযাপনের নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
আজ বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. খালিদ হোসেনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জারি করে মাউশি। এ সংক্রান্ত চিঠি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে। খবর বাসসের
চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার প্রতিবছর ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস (সাধারণ ছুটিসহ) ঘোষণা করেছে এবং উক্ত তারিখ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১ নম্বর সূত্রোক্ত পরিপত্রের ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
সরকার প্রতিবছর ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং উক্ত তারিখ জুলাই শহীদ দিবস হিসেবে পালনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১ নম্বর পরিপত্রের ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সম্প্রতি ঘোষিত ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। পরে বিভিন্ন পক্ষ থেকে আপত্তি ও প্রতিবাদের মুখে সিদ্ধান্তটি বাতিল করে সরকার।