শিল্প শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়, সচেতনতা তৈরির এক কার্যকর মাধ্যম। বিশেষ করে যখন ‘অস্বস্তিকর’ কোনো বিষয়ে খোলামেলা আলোচনার দরকার হয়, তখন শিল্প মানুষের মনের ভেতরে ঢোকার ও সেটাকে প্রকাশ করার সবচেয়ে মানবিক উপায় হয়ে ওঠে।

পাবলিক প্লেস বা জনপরিসরে পানি, স্বাস্থ্যবিধি ও স্যানিটেশন ঠিক এমনই একটি ইস্যু। এটি আমাদের নিত্যদিনের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। কিন্তু সামাজিক পরিসরে অনালোচিত ও উপেক্ষিত। দীর্ঘকালের অপ্রাপ্তি ও অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার জন্য জনপরিসরে এটা নিয়ে আলোচনা না করাটা যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘পথে হলো দেখা’ ক্যাম্পেইন সেই অচলায়তনকে ভাঙতে চেয়েছে, জানতে চেয়েছে মানুষের ভাবনা। আলোচনায় আনতে চেয়েছে ভবিষ্যতের উন্নত নাগরিক জীবনে পাবলিক স্যানিটেশনের গুরুত্বকে।

এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগার নিয়ে সামাজিক মনোভাব পরিবর্তন করা, স্যানিটেশন–ব্যবস্থার প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা ও সম্মানজনক ব্যবহারকে উৎসাহিত করা। আর পুরো প্রক্রিয়ায় শিল্পকলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে মূল হাতিয়ার হিসেবে।

ক্যাম্পেইনের আওতায় আয়োজন করা হয় তিনটি অংশগ্রহণমূলক প্রতিযোগিতা—চিত্রাঙ্কন, গল্প লেখা আর মোবাইল ভিডিও তৈরি। ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। শিশুরা কল্পনার চোখে এঁকেছে এমন সব পাবলিক টয়লেট, যা পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সবার জন্য ব্যবহারযোগ্য। ছবিতে দেখা গেছে, টয়লেটের প্রবেশপথে র‍্যাম্প, হাত ধোয়ার বেসিন, আলো–বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা, এমনকি টয়লেট ব্যবহারে উৎসাহ দিতে লেখা ‘স্বাগতম’ বার্তাও; পাশে রয়েছে ফুলের টব ও বাগান।

১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণদের জন্য ছিল গল্প লেখার প্রতিযোগিতা। এখানে উঠে এসেছে ব্যক্তিগত ও আবেগঘন অভিজ্ঞতার বর্ণনা। কেউ লিখেছেন মাসিক চলাকালে প্রয়োজনীয় সেবা না পাওয়ার কষ্টের কথা। কেউবা তুলে ধরেছেন দিনের পর দিন ঘরের বাইরে যাওয়ার আগে পানি না খাওয়ার গল্প। আবার কেউ বলেছেন, শহরের এক কোণে হঠাৎ পাওয়া একটি পরিচ্ছন্ন টয়লেটের কথা, যা নতুন এক ভরসা জুগিয়েছে নাগরিক জীবনের প্রতি।

গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এক প্রতিযোগীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক ও ব্র্যাকের ক্লাইমেট চেঞ্জ, আরবান ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পরিচালক লিয়াকত আলী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য প বল ক টয়ল ট

এছাড়াও পড়ুন:

সখীপুরে স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

টাঙ্গাইলের সখীপুরে জিহাদ (১০) নামের এক স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তুচ্ছ ঘটনায় মায়ের বকুনি খেয়ে অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে। 

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সখীপুর উপজেলার বেতুয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে জিহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। 

জিহাদ ওই এলাকার প্রবাসী আনিস মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।

জিহাদের চাচাত ভাই জনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়িতে একই বয়সের চাচাত ভাইয়ের সঙ্গে জিহাদের ঝগড়া হয়। এতে রাগ করে জিহাদের মা তাকে বকাঝকা করেন। এরপর সে দৌড়ে নিজের ঘরে যায়। রাত ৮টার দিকে ওই ঘরে ঢুকে জিহাদকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জিহাদের মা বিলাপ করছেন। স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

আরিফুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, “ঘটনাটি মর্মান্তিক। এটি বর্তমান সময়ে যারা বাবা-মা আছেন, তাদের জন্য শিক্ষণীয়। শিশুর প্রতি কেমন আচরণ করতে হবে, এ বিষয়ে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশকে তা জানানো হয়েছে।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেছেন, মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ