পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে সহকারী প্রকৌশলী পদে
Published: 8th, July 2025 GMT
প্রকৌশল খাতের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, নবম গ্রেডের সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে কোটার ভিত্তিতে পদোন্নতি নয়, বরং নিয়োগ হতে হবে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা হতে হবে বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি।
গতকার মঙ্গলবার বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে কর্মসূচি শুরু করেন। তারা ‘কোটা না মেধা; মেধা, মেধা’ এবং ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও’ স্লোগানে মুখর করে তোলেন ক্যাম্পাস।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, বর্তমানে প্রকৌশল খাতে চরম বৈষম্য চলছে। ডিপ্লোমাধারী উপসহকারী প্রকৌশলীরা অভ্যন্তরীণ কোটার মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত পদোন্নতি পাচ্ছেন। ফলে সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রবেশাধিকারে বাধা তৈরি হচ্ছে। নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর তা বাতিল করে ডিপ্লোমাধারীদের পদোন্নতি দেওয়ার নজিরও রয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
তারা বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের বিপরীতে ৩৩ শতাংশ পদোন্নতির হার নির্ধারিত থাকলেও বাস্তবে তা অতিক্রম করে ৪০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত প্রবেশ পর্যায়ের পদ সংকুচিত হচ্ছে এবং নিয়োগ পরীক্ষায় মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার সুযোগ কমে যাচ্ছে, যা সংবিধানের ‘সুযোগের সমতা’র নীতির পরিপন্থি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো অনুযায়ী ডিপ্লোমা ডিগ্রি ‘লেভেল-৬’ এবং বিএসসি ডিগ্রি ‘লেভেল ৭’-এর অন্তর্ভুক্ত। যেখানে ডিপ্লোমাধারীরা দশম গ্রেডের পদে আবেদন করতে পারেন, সেখানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বিএসসি প্রকৌশলীরা সেই পদে আবেদন করতে পারেন না– এটি অবিচার ও বৈষম্যের উদাহরণ। এমন বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা প্রতিবেশী দেশগুলোতেও নেই।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা তিনটি প্রধান দাবি উত্থাপন করেন। প্রথমত, ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদেরই নিয়োগ দিতে হবে। কোনো কোটার মাধ্যমে বা ভিন্ন নামে সমমান পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
দ্বিতীয়ত, দশম গ্রেড বা উপসহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষায় ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়ের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। তৃতীয়ত, বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নন-অ্যাক্রিডেটেড বিএসসি কোর্সগুলোকে যথাযথভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের অ্যাক্রিডিটেশনের আওতায় আনতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন য় গ পর ক ষ সমম ন পদ ব এসস সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
গণপূর্তের কর্মকর্তা সরকারি বাসার দরজা-জানালা ‘খুলে নিয়ে গেছেন’
পাবনায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক উপসহকারী প্রকৌশলী বদলির সময় সরকারি বাসার দরজা-জানালা খুলে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বাসাটি পরিত্যক্ত স্থাপনায় পরিণত হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম ইব্রাহিম বিশ্বাস। তিনি ছয় মাস আগে পাবনা থেকে বদলি হয়েছেন। বর্তমানে রাঙামাটিতে কর্মরত।
স্থানীয় লোকজন ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসাটি একতলা হওয়ায় বেশ কিছু দিন সেখানে কেউ থাকতেন না। এতে ভবনটি কিছুটা বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। উপসহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম বিশ্বাস পাবনায় দায়িত্ব পালনকালে বাসাটিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিছু মেরামত ও রঙের কাজ করে তিনি সেখানে থাকতেন। ছয় মাস আগে রাঙামাটিতে তাঁর বদলি হয়। এ সময় তিনি বাসাটি ছেড়ে রাঙামাটিতে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি সরকারি বাসার কিছু আসবাবপত্র ও দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যান।
ইব্রাহিম বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওটা একটা পরিত্যক্ত বাসা ছিল। তাই দরজা-জানালা খুলে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার লাগানো হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা ভবনটির অবস্থা অনেকটা কঙ্কালের মতো। অবকাঠামো আছে, দরজা-জানালা কিছু নেই। ভবনের ভেতরটা পুরো ফাঁকা।
গণপূর্ত বিভাগের কয়েকজন কর্মচারীর দাবি, ভবনটিতে ওঠার সময় ইব্রাহিম বিশ্বাস কিছু মেরামতের কাজ করেছিলেন। খরচের টাকা না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। পরে বদলির সময় দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যান। এতে পুরো ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।
প্রায় ছয় মাস পর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় শহরের ইছামতী নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ও শিক্ষক মাহবুবুল আলম বলেন, জানামতে সরকারি সম্পদে খরচ করা যায়। কিন্তু নিয়ে যাওয়ার কোনো বিধান নেই। ওই কর্মকর্তা যে কাজ করেছেন, সেটি একটি অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, সরকারি সম্পদ জনগণের সম্পদ। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন দায়িত্বহীন আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয়। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার।
এ প্রসঙ্গে গণপূর্ত বিভাগ পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ কবির বলেন, কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত ছিল। ইব্রাহিম বিশ্বাস যেসব জিনিস নিয়ে গেছেন, সেগুলো দ্রুতই আবার প্রতিস্থাপন করা হবে।