তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল হওয়ার পর দেশ গণতন্ত্রের মহাসড়কে হাঁটবে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করে যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে দেশের গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছিল।

আজ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার রায়ের বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে আনা ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে ১৪ বছর আগে দেওয়া রায় পুরোটাই বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর ও এ-সংক্রান্ত রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। রায়ে বলা হয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সম্পর্কিত বিধানাবলি এই রায়ের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত ও সক্রিয় করা হলো। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত বিধানাবলি ভবিষ্যৎ প্রয়োগ যোগ্যতার ভিত্তিতেই কার্যকর হবে বলে রায়ে এসেছে।

দেশের বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট রায় দেয় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তিনি সেটি মনে করেন না। কোন রায় রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, আর কোন রায় আইনি ব্যাখ্যায় দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে, গণতন্ত্র রক্ষা করবে, মানুষের ভোটাধিকার রক্ষা করবে, আইনের শাসন রক্ষা করবে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্বহাল করবে, তা জাতি বিবেচনা করবে।

আসাদুজ্জামান বলেন, আজকের রায়ে পূর্বের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল হলো। এটা কার্যকর হবে পরবর্তী সংসদ ভাঙার পরের ১৫ দিনের মধ্যে।

আরও পড়ুনতত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান পুনরুজ্জীবিত, কার্যকর ভবিষ্যতে৩ ঘণ্টা আগে

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনা হয়েছিল। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না বলে তা সাংবিধানিক হিসেবেই রায়ে ঘোষিত হলো। তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি সহায়ক ব্যবস্থা হিসেবে ফুল জাজমেন্টে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

জুলাই সনদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার যে রূপরেখা আছে, তার পরিবর্তন সম্ভব হবে কি না, জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পার্লামেন্টের কিছু ডিসকাশন থাকবে। ২০ বছর পরে জনগণ যদি মনে করে এই ব্যবস্থা পচে-গলে গেছে, এর থেকেও ভালো কোনো ব্যবস্থা গণতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন, তাহলে অবশ্যই পার্লামেন্টের ডিসকাশন থাকবে।’

আরও পড়ুনএই রায়ে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে: বদিউল আলম মজুমদার১ ঘণ্টা আগে

একই আপিল বিভাগে তাঁর আগের রায়কে কলঙ্কিত ও ত্রুটিপূর্ণ বলার ব্যাখ্যা জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ত্রুটিপূর্ণ ও কলঙ্কিত বলেই ওই রায় বাতিল করা হয়েছে। অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা কারণ ছিল, এই রায় লেখার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও তাঁর সহযোগীরা দণ্ডবিধির ২১৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।

গণতন্ত্রের স্বার্থে ভবিষ্যতে আবার এই রায় নিয়ে কোনো মন্তব্য আসবে না বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

আরও পড়ুনহাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে: রুহুল কুদ্দুস৩২ মিনিট আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আস দ জ জ ম ন গণতন ত র র ব যবস থ এই র য়

এছাড়াও পড়ুন:

জকসু: জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনিকের সম্মানে পদ খালি রাখল ছাত্রশক্তি

প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি। তবে বিশেষ সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ সম্পাদক পদটি খালি রেখেছে সংগঠনটি।

গত বছরের জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়া অনিক কুমার দাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংগঠনটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

জকসু: প্যানেল ঘোষণাতেই আচরণবিধি লঙ্ঘন শিবির-ছাত্রশক্তির

জকসু নির্বাচন: নবীনদের ‘তরুণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদ হাসান প্যানেল ঘোষণা করলে এ তথ্য জানা যায়।

গত বছরের ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম আদালত এলাকায় আন্দোলন চলাকালে চারজন গুলিবিদ্ধ হন। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা অনিক তাদেরই একজন।

জবি শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে চারজন প্রথম গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, অনিক তাদের মধ্যে একজন। তার ত্যাগ পুরো দেশ দেখেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগ সমর্থক—এই প্রচলিত ধারণাটিও অনিক ভেঙে দিয়েছে নিজের বুক পেতে গুলি খেয়ে।”

তিনি বলেন, “অনিকের সেই অবদান ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশক্তি ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ সম্পাদক পদে কোনো প্রার্থী দেইনি।”

অনিক কুমার দাস বর্তমানে ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জকসু নির্বাচন। আগামী ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি ঢাকায় আসছেন আজ
  • ‘মব ভায়োলেন্স’ থেকে সরে আসতে হবে: ফখরুল
  • জকসু: জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনিকের সম্মানে পদ খালি রাখল ছাত্রশক্তি
  • আমরা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি, একটা দোলাচল চলছে: মির্জা ফখরুল
  • প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন অ্যাপ উদ্বোধন, ‘নতুন অধ্যায়’ বললেন সিইসি