তারা মনে করে, শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্যই এই গণ–অভ্যুত্থান হয়েছিল
Published: 10th, July 2025 GMT
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা গণ–অভ্যুত্থানের পরে সাত-আট মাস দেখেছি, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে ক্ষমতার জন্য আসন ভাগ–বাঁটোয়ারায় ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। একটা গণ–অভ্যুত্থানকে তারা গণ–অভ্যুত্থান বলেই স্বীকার করতে চায় না। তারা মনে করে, শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্যই এই গণ–অভ্যুত্থান হয়েছিল।’
আজ বুধবার বিকেলে নড়াইল শহরের পুরোনো বাস টার্মিনালে এনসিপির সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশ পুনর্গঠনের জন্য, একটি সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য এই গণ–অভ্যুত্থান হয়েছিল। আপনার সন্তান, আমাদের ভাইয়েরা রাজপথে নেমেছিল সেই নতুন দেশ গড়ার জন্য।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আপনারা যাঁরা এখানে এসেছেন, শুনেছেন—সারজিস আলম বলেছেন, নতুন দল করা আমাদের লক্ষ্য ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল এই দেশকে পুনর্গঠন করা, দেশটাকে ভালোভাবে তৈরি করা। বিদ্যমান যে রাজনৈতিক দলগুলো ছিল, যদি তাদের নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠন হওয়া সম্ভব হতো, তাহলে হয়তো আমাদের দল করার প্রয়োজনই হতো না। কিন্তু আমরা আস্থা রাখতে পারিনি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই গণ–অভ্যুত্থানের পরে আমাদের স্বপ্ন ছিল—যাঁরা এই গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, দলমত–নির্বিশেষে আমরা এই দেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলব।’ জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের একটি বছর পার হলেও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাননি উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘এক বছরে আমরা পাইনি সেই আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ, প্রত্যাশিত বাংলাদেশ। ফলে আমরা রাস্তায় নেমেছি আবার। আমরা আপনাদের কাছে যাচ্ছি, এলাকায় যাচ্ছি, দরজায় যাচ্ছি। আমরা বলছি, আমরা সেই তরুণেরা, যারা গণ–অভ্যুত্থান করেছিলাম, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজের বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিলাম। আমরা সেই তরুণেরা, যারা আবার এসেছি আপনাদের কাছে নতুন দেশ গড়ার আহ্বান নিয়ে, যারা কখনো আপস করিনি, লোভ করিনি। আমরা সর্বদা দেশের মানুষের জন্য, আপনার অধিকারের জন্য কাজ করেছি, আমরা সামনেও কাজ করে যেতে চাই। আমরা চাই, আপনারা গণ–অভ্যুত্থানের সময় যে আস্থা রেখেছিলেন, আবারও সেই আস্থা রাখুন।’
নিজেদের স্বপ্নের কথা তুলে ধরে জনগণের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গত ৫৪ বছরের বাংলাদেশ আমরা দেখেছি। গত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সময়ও আমরা দেখেছি। সকল রাজনৈতিক দলকে আপনারা দেখে নিয়েছেন। এই নতুন তরুণ নেতৃত্ব, বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে, যারা আপনার কথা বলতে চায়। বাংলাদেশকে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে গড়ে তুলতে চায়। এখন আপনাদের সামনে সুযোগ এসেছে নতুন একটি শক্তির উত্থান ঘটাতে। আমরা চাই, আপনারা-আমরা মিলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই দেশকে গড়ে তুলব। আমরা চাই, আগামীর বাংলাদেশে নতুন করে কোনো স্বৈরাচার যাতে না হতে পারে। আগামীর বাংলাদেশে আপনার–আমার কথা বলার অধিকার থাকবে, ভাত-কাপড়ের অধিকার থাকবে। বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না।’
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেলে মাগুরা থেকে নড়াইলে আসেন এনসিপি কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এনসিপির জেলার প্রধান সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম সাব্বির আহমেদ। সমাবেশে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে।
সমাবেশে আগের নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আগেও নির্বাচন কমিশন ছিল—হুদা কমিশন, রকিব কমিশন। আমাদের নির্বাচন কমিশনাররা দিনের ভোট রাতে করে দিয়েছেন। তাঁরা পুলিশ-সেনাবাহিনীকে সাক্ষী রেখে রাতের বেলাই ভোট কেটে রেখেছে। এমন শুনেছি, কবর থেকে মরা মানুষও ভোট দিয়েছে। এগুলো ছিল হুদা কমিশনের কাজ। এই হুদা কমিশনের নূরুল হুদার পরিণতি কিন্তু আজকে জাতি দেখছে।’
এরপর হাসনাত আবদুল্লাহ বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে বলেন, ‘গতকাল আমাদের নির্বাচন কমিশন বলে দিয়েছে, শাপলা মার্কা নাকি আমাদের দেওয়া হবে না। আপনারা জেনে থাকবেন, তারা (নির্বাচন কমিশন) মিটিং করেছে আজকে। কিন্তু মিটিং হওয়ার আগে গতকালই তারা ফলাফল জানিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ ভোটের আগের ফলাফলের মতো আমাদের এখনকার নির্বাচন কমিশন মিটিংয়ের আগেই ফলাফল জানিয়ে দেয়। আমরা ধিক্কার জানাই এই নির্বাচন কমিশনের দ্বিচারিতাকে।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহমুদা সুলতানা রিমি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক এনস প র আম দ র র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে
ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আরও কম, ১২৫ রানে। কিন্তু রোববার (০২ নভেম্বর) তারা চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে আফগানদের করা ২১০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে হার মানে মাত্র ৯ রানে। দুই ইনিংসে রান হয়েছে মোট ৪১১টি। যা আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।
আরো পড়ুন:
কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস
ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
স্বাগতিকরা থেমে থেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ব্রিয়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল ও তাশিনগা মুসেকিওয়ার ব্যাটে লড়াই করে শেষ বল পর্যন্ত। বেনেট ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৭ রান। অধিনায়ক রাজা ৭টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫১ রান। বার্ল ১৫ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর মুসেকিওয়া ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৮ রান।
বল হাতে আফগানিস্তানের আব্দুল্লাহ আহমদজাই ৪ ওভারে ৪২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফজল হক ফারুকি ৪ ওভারে ২৯ রানে ২টি ও ফরিদ আহমদ ৩ ওভারে ৩৮ রানে নেন ২টি উইকেট।
তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫.৩ ওভারে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। এই রানে গুরবাজ আউট হন ৪৮ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১৬৩ রানের মাথায় ইব্রাহিম আউট হন ৭টি চারে ৬০ রান করে। এরপর সেদিকুল্লাহ অটল ১৫ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলীয় সংগ্রহকে ২১০ পর্যন্ত নিয়ে যান।
বল হাতে জিম্বাবুয়ের ব্রাড ইভান্স ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন রিচার্ড এনগ্রাভা।
৯২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন গুরবাজ। আর মোট ১৬৯ রান করে সিরিজ সেরা হন ইব্রাহিম জাদরান।
ঢাকা/আমিনুল