ডিম্বাশয়ে ডার্ময়েড সিস্ট একধরনের নিরীহ টিউমার। জন্মগত হলেও বয়ঃসন্ধিকালে বা প্রজননসক্ষম বয়সে ধীরে ধীরে এটি লক্ষণীয় হতে থাকে। এ ধরনের সিস্টে চুল, দাঁত, চামড়া, হাড়, চর্বি ও মাঝেমধ্যে স্নায়ুকোষ পর্যন্ত থাকতে পারে।

জার্ম সেল থেকে এমন টিউমার হয়। এই জার্ম সেল ডিম্বাণু তৈরি করে। কখনো কখনো এই কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের অন্য অংশের মতো টিস্যু তৈরি করে—যেমন চুল, দাঁত, চামড়া ও তৈলগ্রন্থি। এসবের সমন্বয়ে সিস্টিক গঠন তৈরি হয়, এটাই ডার্ময়েড সিস্ট। এটি একটি টারাটোমা–জাতীয় সিস্ট, যা ভ্রূণের কোষ থেকে তৈরি হয়। সাধারণত বংশগত কারণ বা হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এটি হতে পারে।

কাদের বেশি হয়

সাধারণত ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারীদের এটি বেশি হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটি ডিম্বাশয়ে হয়ে থাকে। তবে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে উভয় ডিম্বাশয়েও হতে পারে।

ডার্ময়েড সিস্ট অনেক সময় লক্ষণ ছাড়াই বেড়ে ওঠে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যেমন ডিম্বাশয় প্যাঁচানো, হঠাৎ তীব্র ব্যথা, সিস্ট ফেটে তলপেটে তীব্র ব্যথা ও সংক্রমণ।

শনাক্ত ও চিকিৎসা

আলট্রাসনোগ্রাফি করার মাধ্যমে এ ধরনের সিস্টের আকৃতি, গঠন ও অবস্থান জানা যায়। আরও ভালোভাবে দেখতে হলে করা হয় সিটি স্ক্যান ও এমআরআই। সিস্ট ম্যালিগন্যান্ট ঘাতক প্রকৃতির কি না, তা জানতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়।

যদি সিস্টটি খুব ছোট; অর্থাৎ ৫ সেন্টিমিটারের (সেমি) কম হয় ও কোনো উপসর্গ না থাকে, তাহলে নিয়মিত আলট্রাসনোগ্রাফি করে পর্যবেক্ষণ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে এটি নিজে নিজে বাড়ে না বা কোনো সমস্যা তৈরি করে না। কিন্তু যদি সিস্টটি ৫ সেমির বেশি, ব্যথা বা অন্য জটিলতা সৃষ্টি করে, তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।

ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করে দ্রুত সেরে ওঠা যায়। আবার বড় সিস্ট বা জটিলতার ক্ষেত্রে ল্যাপারোটমি বা পেট কাটার প্রয়োজন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শুধু সিস্টটি কেটে বাদ দেওয়া হয়, ডিম্বাশয় রেখে দেওয়া হয়।

অস্ত্রোপচারের পর এক থেকে দুই সপ্তাহ পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পরপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা.

শারমিন আব্বাসি, বন্ধ্যত্ব ও স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়ার তিনটি মিগ-৩১ রুখে দেওয়ার দাবি ন্যাটোর

ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলের দেশ এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি করেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। শুক্রবার অনুপ্রবেশের ঘটনার পর সেগুলো রুখে দেওয়া হয় বলে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ন্যাটো বলেছে, এটি রাশিয়ার ‘বেপরোয়া আচরণ’।

ন্যাটোর সদস্যদেশ এস্তোনিয়া। রুশ যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশকে ‘নির্লজ্জ’ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনুমতি না নিয়েই রাশিয়ার তিনটি মিগ–৩১ যুদ্ধবিমান ন্যাটোর সদস্য এস্তোনিয়ার আকাশে প্রবেশ করে। ফিনল্যান্ড উপসাগরের ওপর সেগুলো মোট ১২ মিনিট ছিল।

রুশ যুদ্ধবিমানের ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ে ন্যাটোর মুখপাত্র অ্যালিসন হার্ট বলেন, যুদ্ধবিমানগুলো শনাক্ত করার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেন তাঁরা। সেগুলোকে পথিমধ্যে আটকে দেওয়া হয়। বিস্তারিত না জানিয়ে তিনি বলেন, এটি রাশিয়ার বেপরোয়া আচরণ এবং ন্যাটোর জবাব দেওয়ার সক্ষমতার আরও একটি উদাহরণ।

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো। তবে ২০২২ সালে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ন্যাটো ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে ন্যাটোর আরও দুই সদস্যদেশ—পোল্যান্ড ও রোমানিয়া তাদের আকাশে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের দাবি করেছে।

ন্যাটো রুশ যুদ্ধবিমান তাড়ানোর দাবি করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, ইউরোপের সম্পদ ব্যবহার করে সদস্যদেশগুলোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে সহায়তা দিয়ে যাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমাদের সংকল্প কতটা দৃঢ়, তা পরীক্ষা করে দেখছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আমাদের দুর্বলতা প্রকাশ করা উচিত হবে না।’

একই সুরে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন এক্সে লিখেছেন, ‘আমরা প্রতিটি উসকানির জবাব দৃঢ়তার সঙ্গে দেব, পাশাপাশি পূর্ব সীমান্তকে আরও শক্তিশালী করতে বিনিয়োগ করব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ