অস্ট্রেলিয়ায় খেলার সুযোগ সচরাচর মেলে না বাংলাদেশের। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর আর খেলা হয়নি জাতীয় দলের। সবমিলিয়ে দেশটিতে বাংলাদেশ খেলেছে মাত্র ৮ ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজও শেষবার হয়েছে ১৭ বছর আগে।

বাংলাদেশের চেয়ে একদমই ভিন্ন ওই কন্ডিশনে ক্রিকেটারদের খেলার সুযোগ মেলে তাই কালেভদ্রেই। তবে জাতীয় দল না হলেও টানা দুই বছর অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে যাচ্ছেন জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ক্রিকেটাররা। গত বছর টপ এন্ড টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স দল।

আরও পড়ুনযে প্রশ্নের উত্তর নেই নুরুলের কাছেও৪ ঘণ্টা আগে

এবার ৭ দলের এই টুর্নামেন্টে নুরুল হাসানের নেতৃত্বে খেলতে যাচ্ছে ‘এ’ দল। দুই ধাপে কাল ও পরশু দেশ ছাড়ার কথা দলের। তার আগেই আজ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন সোহান। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসেছিল—যেহেতু অস্ট্রেলিয়ায় খেলার সুযোগ মেলে না, এটা নিশ্চয়ই শেখার একটা বড় মঞ্চ?

সামনের বছর যেহেতু টেস্ট আছে, এটা আমাদের জন্য দারুণ সুযোগ, বিশেষ করে যাঁরা টেস্ট খেলবেন তাঁদের জন্য। কিন্তু এখন যেহেতু আমরা বড় একটা টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছি, তাই আপাতত মাথায় টি–টোয়েন্টিটাই ঘুরছে। চার দিনের দল তো এখনো যায়নি। (টেস্ট দলের) যাঁরাই খেলবেন, এটা তাঁদের জন্য বড় সুযোগ।সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নুরুল হাসান

কিন্তু সোহান ছিলেন একটু ভিন্ন মেজাজে। সোজাসাপটা জানিয়ে দিলেন, ‘শেখার প্রক্রিয়ায় আমি খুব একটা বিশ্বাস করি না। আমরা শিখছি, শিখব—এটা তো জীবনেরই অংশ। কিন্তু যেহেতু একটা টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছি, আমার মনে হয় মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ফাইনাল খেলা। আমাদের দলের প্রতিটা খেলোয়াড়, টিম ম্যানেজমেন্ট—সবার লক্ষ্যই ট্রফি জেতা।’ অর্থাৎ ‘শেখা শেখা’ খেলায় না গিয়ে সোহান মনোযোগ দিচ্ছেন জেতার খেলায়।

এ সফরে শুধু টি–টোয়েন্টি নয়, আছে একটি চার দিনের ম্যাচও। কারণ, আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় দুটি টেস্ট খেলতে যাবে বাংলাদেশ। ২৮ আগস্ট দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই চার দিনের ম্যাচটি। তাই স্কোয়াডে রাখা হয়েছে টেস্ট দলের পরিচিত মুখ নাঈম হাসান ও হাসান মাহমুদের মতো ক্রিকেটারদের।

শেখার প্রক্রিয়ায় খুব একটা বিশ্বাস নেই নুরুল হাসানের.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে চালাতে হবে সাইকেল

সাইকেল চালানো শরীরের জন্য ভালো। পকেটের ওপরও চাপ কমায়। সম্প্রতি করা এক গবেষণায় সাইকেল চালানোর উপকারিতার তালিকা আরও দীর্ঘ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চলাচলের জন্য কেউ যদি গাড়ির বদলে সাইকেল বেছে নেন, তবে তা মস্তিষ্কের বিভিন্ন জটিলতা কমানোর ক্ষেত্রেও বেশ কাজে আসে।

এই গবেষণা করেছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য গবেষণাবিষয়ক তথ্যের সবচেয়ে বড় ভান্ডার ‘ইউকে বায়োব্যাংক’। সম্প্রতি গবেষণাটি জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেন সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রাইভেট কার, বাস, ট্রেনে ভ্রমণের চেয়ে সাইকেল ব্যবহার করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ১৯ শতাংশ এবং আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

ডিমেনশিয়া বলতে মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি, স্মৃতিশক্তি ও কাজ করার ক্ষমতা হ্রাসকে বোঝায়। বিভিন্ন রোগের কারণে ডিমেনশিয়া হতে পারে। এমন একটি রোগ হলো আলঝেইমার। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার (এনএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোষের ভেতরে ও আশপাশে অস্বাভাবিকভাবে প্রোটিন জমলে আলঝেইমার হতে পারে।

এই গবেষণায় ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ অংশ নেন। তাঁদের গড় বয়স ছিল সাড়ে ৫৬ বছর। গবেষণায় যাতায়াতের চারটি বিকল্প তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়—বিগত চার সপ্তাহে যাতায়াতের জন্য তাঁরা কোন বিকল্পটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন।

যাতায়াতের ওই বিকল্পগুলোর মধ্যে ছিল—একেবারেই সক্রিয় না থাকা, অর্থাৎ বাস বা ট্রেনে করে যাতায়াত করা। আরেকটি ছিল হেঁটে যাতায়াত। তৃতীয় বিকল্পটি ছিল হাঁটা ও সক্রিয় থাকা লাগে না—এমন সব মাধ্যম ব্যবহার করে যাতায়াত। আর শেষ ধরনটি ছিল সাইকেল চালিয়ে এবং অন্য ধরনগুলো ব্যবহার করে যাতায়াত।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের যাতায়াতের ধরনগুলো নির্বাচন করার ১৩ বছরের বেশি সময় পর দেখা যায়, ৮ হাজার ৮৪৫ জনের মস্তিষ্কে ডিমেনশিয়া দেখা দিয়েছে। আর ৩ হাজার ৯৫৬ জন আলঝেইমারে আক্রান্ত। এ ছাড়া যাঁরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটির ওপর ভরসা করেন, তাঁদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৬ শতাংশ কম।

গবেষণায় সাইকেল চালানোর ফলে ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমারের ঝুঁকি কমার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ–ও দেখা গেছে যে মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস নামক অংশের তুলনামূলক বড় আয়তনের সঙ্গে সাইকেল চালানোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। মস্তিষ্কের এই অংশে স্মৃতি সংরক্ষণ থাকে এবং কোনো কিছু শেখার সঙ্গে জড়িত।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জো ভারগেস বলেন, দশকের পর দশক ধরে চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম মস্তিষ্কের জন্য ভালো। সাইকেল চালানো হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে এবং মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ও পরিপাকের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে করে হয়তো ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে। তবে কেউ যদি সাইকেল চালানো শুরু করতে চান, তাহলে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। দেখে নিতে হবে তিনি এখনই সাইকেল চালানো শুরু করার জন্য যথেষ্ট সুস্থ কি না। নাকি এর জন্য আগে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ